কারখানায় কাজ করার সময় গলা লোহা ছিটকে মৃত্যু হল তিন ঠিকা শ্রমিকের। দুর্ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার দুর্গাপুরের বিসি রায় অ্যাভিনিউয়ের পাশে একটি বেসরকারি রিরোলিং কারখানায়।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম জগভরন দাস (২২), অমল বন্দ্যোপাধ্যায় (২৫) ও মন্টু যাদব (২৮)। তাঁরা যথাক্রমে বিওজিএল প্ল্যান্ট সাইড বস্তি, বাঁকুড়ার রামকৃষ্ণ রোড ও উত্তর প্রদেশের আজমগড়ের বাসিন্দা। ওই কারখানার আধিকারিক বুবুন দাস জানান, দুর্ঘটনার বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। জেলা কারখানা পরিদর্শক দেবব্রত চক্রবর্তী বলেন, “দুর্ঘটনার তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।” |
দুর্ঘটনার পরে। —নিজস্ব চিত্র। |
পুলিশ ও কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল ৬ টা নাগাদ ক্রেনে করে একটি পাত্রে গলা লোহা নিয়ে যাচ্ছিলেন শ্রমিকেরা। তখনই সেই লোহা ছিটকে পড়ে। ঘটনাস্থলেই ঝলসে যান তিন শ্রমিক। গুরুতর জখম অবস্থায় তিন জনকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা জগভরণ ও অমলকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় মন্টুকে বিধাননগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই কয়েক ঘন্টা পরে মৃত্যু হয় তাঁর।
এই ঘটনার পর শিল্পাঞ্চলের শ্রমিকেরা কারখানাগুলির নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কারখানার শ্রমিকদের অভিযোগ, তাঁদের নিয়মিত জুতো, দস্তানা এবং পোশাক দেওয়া হয় না। নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণও হয় না বললেই চলে। আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি প্রভাত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “শ্রমিকদের অভিযোগগুলি নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব। নিরাপত্তার প্রশ্নে কোনও আপোষ করা বরদাস্ত করা হবে না।” মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা করে আর্থিক ক্ষতিপূরণ এবং মৃতের নিকট আত্মীয়ের কাজের দাবি জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি। সিটু নেতা তথা দুর্গাপুরের প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক বিপ্রেন্দু চক্রবর্তী বলেন, “শ্রমিক নিরাপত্তার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। আমাদের ইউনিয়নের পক্ষ থেকে মৃতদের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে ডেপুটি লেবার কমিশনারের কাছে লিখিত আর্জি জানানো হয়েছে।” ডেপুটি লেবার কমিশনারের দফতর থেকে জানানো হয়েছে, শ্রমিক সংগঠনের দাবিগুলি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
|