বাড়ি ফেরার পথে দুষ্কৃতীদের গুলিতে ব্যবসায়ী খুনের ঘটনার সাত দিন পেরোতে না পেরোতেই আরেক বড় ব্যবসায়ীর বাড়িতে লুঠপাটের ঘটনা ঘটল কুলটির বরাকরে।
রবিবার গভীর রাতে পুলিশ ফাঁড়ি থেকে মাত্র ১০০ মিটার দূরে ওই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। নিরাপত্তার অভাবের অভিযোগে ক্ষুব্ধ এলাকার শিল্প ও ব্যবসায়ী মহল। পুলিশ জানিয়েছে, দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে। |
বাড়ির সামনে জটলা পড়শিদের। — নিজস্ব চিত্র। |
বরাকরের নিমাকানালির বাসিন্দা ওই ব্যবসায়ী অরবিন্দ নেহারিয়া পুলিশকে জানিয়েছেন, রবিবার রাত আড়াইটা নাগাদ প্রায় ১৫ জনের একটি দল তাঁর বড়িতে লুঠপাট চালায়। তখন একতলায় শুয়েছিলেন বাড়ির পরিচারক গুড্ডু সাউ। দুষ্কৃতীরা প্রথমে গুড্ডুকে ডেকে তুলে বাইরের দরজা খোলায়, তারপরে তার মাথায় রিভলভার ঠেকিয়ে নিজের শরীর খারাপের কথা বলে মালিককে ডাকার নির্দেশ দেয়। অরবিন্দবাবু জানান, গুড্ডুর ডাক শুনে দরজা খুলতেই হুড়মুড়িয়ে জনা দশেক লোক ঘরের ভিতরে ঢুকে পড়ে। তারপরে তাঁর ও তাঁর স্ত্রীর হাত পা বেঁধে দেয়। পাশের ঘরে গিয়ে অরবিন্দবাবুর মা ও মেয়েরও হাত পা বাঁধে তারা। এরপর প্রায় ৪০ মিনিট ধরে লুটপাঠ চালিয়ে চম্পট দেয় তারা। দুষ্কৃতীরা চলে যাওয়ার বেশ কিছুক্ষণ পরে অরবিন্দবাবুরা চিৎকার করে এলাকার লোক জড়ো করেন। এলাকাবাসীরা ঘটনাস্থলে আসার পরেই উত্তেজনা ছড়ায়। খবর পেয়ে কিছুক্ষণের মধ্যে হাজির হয় টহলদারি পুলিশও। কিন্তু ততক্ষণে চম্পট দিয়েছে দুষ্কৃতীরা। অরবিন্দবাবুর দাবি, সোনার গয়না ও কয়েক লক্ষ নগদ টাকা নিয়ে পালিয়েছে দুষ্কৃতীরা।
সোমবার সকালে খবর ছড়াতেই বরাকরের শিল্প ও ব্যবসায়ী মহলে আতঙ্ক ছড়ায়। একাধিক বণিক সংগঠনের সদস্যেরা পুলিশ ফাঁড়িতে জমায়েত করে বরাকরের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির অভিযোগ তোলেন। বরাকর চেম্বার অফ কমার্সের আজীবন সভাপতি গিরিধারীলাল অগ্রবালের অভিযোগ, “আমরা এই ঘটনায় আতঙ্কিত। বুঝতে পারছি নিরাপত্তা বলে কিছুই নেই।” তাঁর আরও অভিযোগ, পুলিশ ফাঁড়ির এত কাছেই যদি নিরাপত্তা না থাকে তা হলে দূরদূরান্তের ব্যাবসায়ীরা কী করবেন। একই অভিযোগ তুলেছেন বরাকর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ-এর সভাপতি দীপক দুধানি। তিনি বলেন, “বেশ কয়েক দিন ধরেই বরাকরের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভাল নেই। পুলিশকে অনেকবার বলেছি, তবু কিছুই হচ্ছে না।” তাঁর দাবি, এলাকার শিল্পপতি ও ব্যাবসায়ীদের কথা প্রশাসন ঠিকমতো শুনছেন না। পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত কথা বলবেন বলেও জানিয়েছেন বণিক সংগঠনগুলির সদস্যরা।
|