পাশাপাশি দুই বাজার সকাল-সন্ধ্যায় জমজমাট
কাল হতেই যেখানে থলি হাতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়, সন্ধ্যা নামলেই সেই জায়গা ফাঁকা। আবার সন্ধ্যায় যে জায়গায় মাছ ও সব্জির দরদামে কান পাতা দায়, সকালে সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে মাত্র দু’এক জন বিক্রেতা। এই হল বড়গাছিয়ার ‘সকাল বাজার’ আর ‘সন্ধ্যা বাজার’।
হাওড়া-আমতা রোড উজিয়ে জগৎবল্লভপুর ব্লকের বড়গাছিয়ার ধর্মতলায় নামলেই দেখা মিলবে সকাল বাজারের। এই বাজার ছুঁয়েছে লক ফ্যাক্টরি মোড়। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এই বাজারে দোকানিরা রাস্তার দু’পাশে কাঁচা আনাজ, আলু, পেঁয়াজের পসরা নিয়ে বসেন। দেখা মিলবে পোশাক ও খেলনা বিক্রেতাদেরও। সূর্য ডুবলে সকাল বাজার থেকে খানিক দূরেই লক ফ্যাক্টরি মোড় থেকে পুরনো ট্রেকার স্ট্যান্ড পর্যন্ত বসে অন্য একটি বাজার। ‘সন্ধ্যা বাজার’ বলে পরিচিত এই বাজার বিখ্যাত মাছের জন্য। ভরসন্ধ্যায় গ্রাম উজিয়ে অনেকে এই বাজারে শুধু মাছ কিনতেই আসেন। এ ছাড়াও, কাঁচা আনাজের পসরা তো রয়েইছে।
চলছে কেনাকাটা। নিজস্ব চিত্র।
কবে থেকে তৈরি হল দুই বাজার? স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সকাল বাজারের ইতিহাস প্রায় একশো বছরের পুরনো। সে সময়ে পাশের পাঁতিহাল গ্রামে বসত হাট। এলাকার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সুনীত সিট জানান, বড়গাছিয়া গ্রামের মানুষের ঘর-গেরস্থালির সুবিধার জন্য স্থানীয় মানসিংহপুরের মল্লিক পরিবার হাট তৈরির জমি দেয়। সেই জমিতেই তৈরি হয় বড়গাছিয়া হাট। বর্তমানে অবশ্য সেই জায়গায় অনেকগুলি বাড়ি তৈরি হয়েছে। ফলে বাজার উঠে এসেছে রাস্তার পাশে। সন্ধ্যা বাজারের ইতিহাস অবশ্য তুলনায় আরও নতুন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, আগে হাওড়া থেকে আমতা পর্যন্ত চলত মার্টিন রেল। বর্তমানে যেখানে সন্ধ্যা বাজার বসে, সেখানে ছিল স্টেশন। সন্ধ্যা নাগাদ সেখানে নামতেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আস্তে আস্তে এই জায়গায় ছোট ব্যবসায়ীরা নানা মালপত্র নিয়ে দোকান দিতে শুরু করে। সেই শুরু। মার্টিন রেল কবেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আরও জমজমাট হয়েছে সন্ধ্যা বাজার।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকার চাষিরা ছাড়াও উদয়নারায়ণপুর, হুগলির জাঙ্গিপাড়া, খানাকুল থেকেও চাষিরা এই দুই বাজারে তাঁদের ফসল নিয়ে আসেন। বড়গাছিয়া গ্রাম উজিয়ে যাঁরা যান, সময় থাকলে তাঁরা এই বাজারে একবার অন্তত উঁকি দেন। রবিবার দুপুরবেলা সকাল বাজারে বাজার করতে এসেছিলেন পাতিহাল গ্রামের অমর বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “চাষিরা জমি থেকে ফসল এনে বিক্রি করায় এখানে জিনিস তুলনায় সস্তা ও টাটকা। তাই স্থানীয় বাসিন্দারা ছাড়াও পাশের গ্রামগুলি থেকে মানুষও এখানে বাজার করতে আসেন।”
বর্তমানে দুই বাজারেরই কোনও ব্যবসায়ী সমিতি নেই। অন্তত, বাজারের বিক্রেতাদের সে রকমই দাবি। সকাল বাজারের চা বিক্রেতা প্রবীর মণ্ডল বলেন, “বছর কয়েক আগে এই বাজারে ব্যবসায়ী সমিতি থাকলেও বিভিন্ন কারণে সেটি এখন প্রায় অস্তিত্বহীন। তবে তাতে অবশ্য বাজারের বিক্রেতাদের কোনও সমস্যা হয় না। মূলত এই বাজারে চাষিরাই তাদের ফসল নিয়ে আসেন। স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও থাকেন।” তবে, বাজার এলাকায় রয়েছে শৌচাগারের সমস্যা। এ ছাড়া, মাথার উপরে ছাউনি না থাকায় গরম ও বর্ষায় ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েই অসুবিধায় পড়েন।
জগৎবল্লভপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শেখ মহম্মদ ইব্রাহিম (গোরা) বলেন, “সকাল বাজারের কাছে আমরা সব্জি বাজার তৈরির জন্য খাস জমির খোঁজ করছি। সকাল-সন্ধ্যা দুই বাজারে শৌচাগার-সহ অন্য পরিকাঠামো উন্নয়নের ব্যাপারে চেষ্টা করছি।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.