স্টেশনে ঢোকার মুখে বিশাল মেটাল ডিটেক্টরটির সামনে দাঁড়িয়ে কেমন যেন ইতস্তত করছেন এক মহিলা। দেখে সন্দেহ হল এক পুলিশকর্মীর। সন্দেহভাজনের দিকে দু’পা এগোতেই হঠাৎ বিস্ফোরণ।
এক মহিলা এ ভাবেই রবিবার আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটালেন রাশিয়ার ভলগোগ্রাদ শহরের রেল স্টেশনে। যার জেরে এখনও পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ১৬। আহত অন্তত পক্ষে ৪২ জন। অক্টোবর মাসেও ভলগোগ্রাদেরই একটি বাসে এক মহিলার আত্মঘাতী বিস্ফোরণের জেরে নিহত হয়েছিলেন ছ’জন। তবে মহিলা স্টেশনে ঢুকে বিস্ফোরণ ঘটালে তার পরিণাম আরও ভয়াবহ হত বলেই মনে করছে রুশ সরকার। জানা গিয়েছে, ওই বোমাটি অন্তত ১০ কেজি টিএনটি-র সমান শক্তিশালী ছিল। |
ভলগোগ্রাদ স্টেশনের বাইরে উদ্ধার কাজে
ব্যস্ত পুলিশ-দমকলকর্মীরা। রবিবার। ছবি: রয়টার্স। |
এই বিস্ফোরণের দায় এখনও পর্যন্ত কোনও জঙ্গি গোষ্ঠী স্বীকার করেনি। যদিও স্থানীয় প্রশাসন রবিবারের এই ঘটনাকে সন্ত্রাসবাদী হামলা বলেই মনে করছে। যে মহিলারা এই ধরনের আত্মঘাতী হামলার সঙ্গে যুক্ত থাকেন, তাঁদের সাধারণত ‘ব্ল্যাক উইডো’ বলা হয়। কারণ, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে পুরুষ সঙ্গী বা স্বামীর মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতেই আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটান তাঁরা। এ ক্ষেত্রেও তেমনটাই ঘটেছে বলে মনে করছে পুলিশ। ভলগোগ্রাদের পুলিশ সূত্রের দাবি, বিস্ফোরণের পর আত্মঘাতী মহিলার মুন্ডু ধড় থেকে আলাদা হয়ে ছিটকে কিছুটা দূরে গিয়ে পড়ে। ফলে মুখ দেখে চেনা গিয়েছে তাঁকে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান ওই মহিলা হলেন ওকসানা আসলানোভা। ২০১২ সাল থেকে রুশ পুলিশ খুঁজছিল তাঁকে। তিনি দু’জন জঙ্গিকে বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু দু’বারই তাঁর স্বামী পুলিশের হাতে নিহত হন।
আগামী ফেব্রুয়ারিতে ভলগোগ্রাদের কাছেই সোচিতে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে অলিম্পিক। আর তা-ই এই সময়কেই সন্ত্রাস ছড়ানোর আদর্শ সময় হিসেবে বেছে নিয়েছে জঙ্গিরা। কারণ, এ ভাবে আন্তর্জাতিক মহলেও ভীতি তৈরি করা সম্ভব। তা-ই রুশ পুলিশ মনে করছে, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এই ধরনের হামলার সংখ্যা বাড়তে পারে। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন অবশ্য ইতিমধ্যেই নির্দেশ দিয়েছেন, এই ঘটনার দ্রুত তদন্ত করতে হবে। খুঁজে বের করতে হবে এই সব হামলার কান্ডারিকে। |