ঝাঁকুনিতে বাসের বাঙ্ক থেকে পড়ে যাওয়া ব্যাগের চেন খোলা দেখে তাঁর সন্দেহ দানা বাঁধে। আর সেই সন্দেহ নিরসন করতে গিয়ে শনিবার কর্মস্থলে যাওয়ার পথে যাত্রীদের সহযোগিতায় হাতেনাতে দুই পকেটমারকে ধরলেন আরামবাগ মহকুমা প্রশাসনের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট। যাত্রীরা ধরে ফেলেন আরও এক জনকে। তিন জনকেই পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
বিমলাপ্রসাদ সিংহবাবু নামে ওই ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের বাড়ি বাঁকুড়া শহরে। এ দিন সকালে তিনি মুকুটমণিপুর-তারকেশ্বর রুটের একটি বাসে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। দাঁড়িয়ে ছিলেন বাসের মাঝামাঝি জায়গায়। নিজের ব্যাগটি রেখেছিলেন বাসের বাঙ্কে। বাসটি গোঘাটে ঢোকার পরে দুই যুবক তাঁর পাশে এসে দাঁড়ায়। তারা নিজেদের ব্যাগ রাখে বিমলাবাবুর ব্যাগের পাশেই। হঠাৎ ঝাঁকুনিতে তিনটি ব্যাগই পড়ে যায়। পাশে দাঁড়ানো দুই যুবকের মধ্যে এক জন ব্যাগ তিনটি তুলে ফের বাঙ্কে রাখে। বিমলাবাবু দেখেন, তাঁর ব্যাগের চেন কিছুটা খোলা। ভিতরে টিফিনবক্স নেই। তিনি দুই যুবককে তাদের ব্যাগ দেখাতে বলেন। তারা রাজি না হওয়ায় বিমলাবাবু চেঁচামেচি শুরু করেন। অন্য যাত্রীদেরও সন্দেহ হয়। শেষ পর্যন্ত দুই যুবক তাদের ব্যাগ দেখালে একটি থেকে বেরিয়ে আসে বিমলাবাবুর টিফিনবক্স। যাত্রীরা দুই যুবককে মারধর শুরু করেন। বাসের এক যুবক হঠাৎ ওই দু’জনকে নামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। সন্দেহ হওয়ায় যাত্রীরা তাকেও পাকড়াও করে। শুরু হয় মার। সে-ও ওই দলে থাকার কথা কবুল করে বলে যাত্রীদের দাবি। বাস আরামবাগে এসে পৌঁছলে ওই তিন জনকে নামিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বিমলাবাবুই পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ জানায়, ধৃত মহম্মদ আলি গায়েন, নাদু খান এবং কুতুবুদ্দিন লাহা গড়বেতার বাসিন্দা। তারা অপরাধের কথা কবুল করেছে। পকেটমার ধরার জন্য অবশ্য কোনও কৃতিত্ব নিতে চান না বিমলাবাবু। তিনি বলেন, “এমন ঘটনা আগে ঘটেনি। ব্যাগের চেনটা খোলা দেখেই সন্দেহ হয়। তা ছাড়া, দুই যুবক যে ভাবে বাসে গা ঘেঁষে দাঁড়িয়েছিল, তাতে সন্দেহ বাড়ে। যাত্রীরা সহযোগিতা না করলে সহজে পকেটমারদের ধরতে পারতাম না।” |