দুর্নীতির অভিযোগ এনে তাঁর বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর করেছে স্কুল। তাঁর আগাম জামিনের আবেদন নাকচ করে দিয়েছে আদালত। তবু শিক্ষা দফতরের নির্দেশে বহাল তবিয়তে চাকরি করে যাচ্ছেন ওই শিক্ষক।! এই বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর বক্তব্য, এমন কোনও ঘটনার কথা জানা নেই। নিমতার ওই স্কুলের ঘটনার পরে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
সর্বশিক্ষা মিশনের ১০ লক্ষ ৩৯ হাজার টাকা তছরুপের মামলা চলছে ওই সহকারী প্রধানশিক্ষকের বিরুদ্ধে। ২০০৯ সালে ওই সহকারী প্রধানশিক্ষক-সহ স্কুলের তিন জনের বিরুদ্ধে অর্থ তছরুপের অভিযোগ ওঠে। এর তদন্তে নামে স্কুলশিক্ষা দফতর। গত বছরের জুন মাসে রাজ্যের স্কুলশিক্ষা কমিশনার রাজেশ সিংহ ওই তিন জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করার নির্দেশ দেন স্কুলের প্রশাসককে। তার ভিত্তিতে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের কথায় ওই শিক্ষক গত বছরের ২৬ জুলাই থেকে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেন।
দফতর সূত্রের খবর, নিম্ন আদালতে আগাম জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন ওই শিক্ষক। ১২ সেপ্টেম্বর তাঁর আবেদন খারিজ করে দেয় আদালত। শিক্ষক হাইকোর্টে যান। গত ৪ জানুয়ারি সেখানেও আগাম জামিনের আবেদন নামঞ্জুর হয়ে যায়। তবে অভিযুক্ত অন্য দু’জনকে জামিন দেয় আদালত। এর পরে ২৪ এপ্রিল স্কুলের প্রশাসকের কাছে চিঠি পাঠিয়ে ওই শিক্ষককে কাজে যোগ দিতে দেওয়ার নির্দেশ দেন স্কুলশিক্ষা কমিশনারের অধীন এক আধিকারিক। তার ভিত্তিতে ৭ মে ফের কাজে যোগ দেন ওই শিক্ষক।
কিন্তু যে স্কুলশিক্ষা দফতর শিক্ষকের বিরুদ্ধে এফআইআর করার নির্দেশ দেয়, তারাই আবার কী করে অভিযুক্তকে স্কুলে ফিরিয়ে নেওয়ার চিঠি দেয়?
জবাবে স্কুলশিক্ষা কমিশনারের পাল্টা প্রশ্ন, “কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে বা আগাম জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে গেলেই তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করতে হবে, এটা কোন আইনে বলা আছে?”
কিন্তু কোনও শিক্ষককে স্কুলে নিয়োগ বা বরখাস্ত করার সরাসরি অধিকার না থাকা সত্ত্বেও কেন তাঁকে চাকরিতে যোগ দিতে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হল? এই প্রশ্নের কোনও সদুত্তর দেননি কমিশনার। শিক্ষামন্ত্রীও বিশদ না জেনে এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। অভিযুক্ত শিক্ষক দাবি করেছেন, তিনি নির্দোষ।
এখনও কেন গ্রেফতার হলেন না শিক্ষক? ব্যারাকপুর কমিশনারেটের গোয়েন্দাপ্রধান দেবাশিস বেজের বক্তব্য, “সংশ্লিষ্ট থানাকে খোঁজ নিতে বলেছি।” স্কুলের প্রশাসক জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে তাঁর কিছু বলার নেই। যা বলার, স্কুলশিক্ষা দফতরই বলবে। |