১৬ হাজার কিমি রাস্তা কংক্রিট হচ্ছে গ্রামে
রাজ্যের ১৬ হাজার কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তাকে কংক্রিট করার বিরাট কর্মযজ্ঞ হাতে নিল পঞ্চায়েত দফতর। আগামী ৭ জানুয়ারি পশ্চিম মেদিনীপুরের আমলাশোলে গিয়ে এই রাস্তা নির্মাণ কর্মসূচির সূচনা করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই দিনে রাজ্যের ৩৩৪৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতে অন্তত একটি করে রাস্তা তৈরির কাজ শুরু হয়ে যাবে। তবে কোনওটারই দৈর্ঘ্য এক কিলোমিটারের বেশি নয়। ক্রমশ এই ভাবে পঞ্চায়েত-পিছু পাঁচটি করে রাস্তা তৈরি হবে। কাজ শুরুর মুহূর্তে প্রতিটি পঞ্চায়েতেই উপস্থিত থাকবেন কোনও মন্ত্রী অথবা জনপ্রতিনিধি। তা না হলে অন্তত এক জন সরকারি অফিসারকে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রকল্পটি নিয়ে উচ্ছ্বসিত মুখ্যমন্ত্রী শনিবার নিজের ফেসবুক পেজ-এ লিখেছেন: ‘গ্রামীণ সড়ক নির্মাণে দেশে এমন প্রকল্পের কোনও নজির নেই। একই দিনে একই সময়ে ১৬ হাজার কিলোমিটার কংক্রিট রাস্তা (অল ওয়েদার রাস্তা) তৈরির কাজ শুরুও আগে কখনও হয়নি। এই প্রকল্প বাস্তবিকই ঐতিহাসিক।’ নবান্নের খবর, ৩৩৪৯টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রতিটিতে পাঁচটি করে কংক্রিট রাস্তা হিসেব ধরলে সব মিলিয়ে সংখ্যাটা দাঁড়াচ্ছে সাড়ে ১৬ হাজারেরও বেশি।
পঞ্চায়েত দফতর সূত্রের খবর, ১০০ দিনের কাজের টাকায় এই ধরনের রাস্তা তৈরি করতে খরচ ধরা হয়েছে মোট ৫৬০০ কোটি টাকা। চলতি আর্থিক বছরে পঞ্চায়েত পিছু একটি করে মোট ৩৩৪৯টি কংক্রিট রাস্তা তৈরি করার জন্য ১১০০ কোটি টাকার সংস্থান রেখেছে পঞ্চায়েত দফতর। পঞ্চায়েত-পিছু বাকি চারটি করে রাস্তা তৈরির কাজ আগামী আর্থিক বছরের মধ্যে শেষ করা হবে। তবে এই চারটি রাস্তায় মাটি ভরাটের কাজ শুরু হয়ে যাবে এ বছরেই।
প্রশ্ন উঠেছে, একশো দিনের কাজের প্রকল্পে কি রাস্তা নির্মাণের কাজ করা যায়? কেন এই পদক্ষেপ করছে রাজ্য সরকার?
পঞ্চায়েত দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, ১০০ দিনের কাজে যে কোনও প্রকল্পে যা খরচ হয়, তার ৪০% বরাদ্দ থাকে জিনিসপত্র কেনাকাটার (মেটিরিয়াল কস্ট) জন্য। বাকি ৬০ ভাগ টাকা ব্যয় করা হয় সংশ্লিষ্ট প্রকল্পে মজুরি দেওয়ার জন্য। অনধিক এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের যে রাস্তাগুলি নির্মাণ করা হবে, সেখানেও প্রকল্প-খরচের ৬০ ভাগ মজুরি এবং বাকি অর্থ দিয়ে রাস্তার নির্মাণ-সামগ্রী কেনা হবে। আর এ ভাবেই রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পের মাধ্যমে একই সঙ্গে মজুরি ভিত্তিক কর্মসংস্থান এবং গ্রামীণ পরিকাঠামো নির্মাণের কাজ হবে। কর্তাদের কথায়, “১০০ দিনের কাজের মূল কথা হল কাজ সৃষ্টির পাশাপাশি সম্পদ তৈরি করা। রাজ্যের এই প্রকল্পে অন্তত ১৬ হাজার কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তা নির্মাণ হবে।”
এমন কর্মসূচি কেন নেওয়া হল, তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় নিজেই। তাঁর কথায়, “প্রধানমন্ত্রী গ্রাম-সড়ক যোজনায় রাজ্যে প্রায় ১২ হাজার কিলোমিটার রাস্তা তৈরি হচ্ছে। কিন্তু গ্রামে ঢোকার মূল সড়কটা পাকা হয়ে যাওয়ার পর এ বার গ্রামবাসীরা গলি-মহল্লার রাস্তাও পাকা করার দাবি তুলেছেন। অথচ, গ্রাম সড়ক যোজনার খাতে এমন ছোট রাস্তা নির্মাণের সুযোগ নেই। ফলে ১০০ দিনের টাকা খরচ করেই এক কিলোমিটারের কম দৈর্ঘ্যের রাস্তা নির্মাণ করতে হচ্ছে।”
সুব্রতবাবু জানান, আপাতত প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত পিছু পাঁচটি করে রাস্তা কংক্রিট করা হবে। পরের ধাপে আরও কয়েক হাজার রাস্তা নেওয়া হবে। আগামী দু’বছরের মধ্যে যদি অন্তত ১৬ হাজার গলি-মহল্লার রাস্তা কংক্রিটের করে ফেলা যায়, তা হলে গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থার চেহারাটাই বদলে যাবে। চার-পাঁচ বছরের মধ্যে এ রাজ্যের যে কোনও গ্রামের বড় রাস্তা পাকা হওয়ার পাশাপাশি গলির রাস্তাও কংক্রিটের হয়ে যাবে।
মুখ্যমন্ত্রী তাঁর ফেসবুক পেজ-এ বলেছেন, গ্রামের গলি-মহল্লা যেমন কংক্রিট রাস্তার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম-সড়ক যোজনা প্রকল্পে তৈরি হওয়া রাস্তার সঙ্গে জুড়ে যাবে, তেমনই বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য সড়ককে জাতীয় সড়কের সমতুল হিসাবে নির্মাণ করা হবে। রাজ্য সড়ক উন্নয়ন নিগম ইতিমধ্যেই ১০০০ কিলোমিটার সড়ক চার লেনে প্রসারিত করার কাজ হাতে নিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ‘রাজ্যে যা হচ্ছে, তা আসলে সড়ক বিপ্লব।’



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.