|
|
|
|
|
|
স্বপ্নময় চক্রবর্তী |
বর্ধমান জেলার ওই গ্রামটার নাম ছিল সাঁওতা। ওখানেই আমার হলকা ক্যাম্প। হলকা ক্যাম্প মানে ভূমি রাজস্ব দফতরের একটা ছোট সেট্লমেন্ট অফিস। ওখানে ‘পড়তাল’ হয়, ‘খানা পুরি বুজারত’ হয়, ‘পরচা’ সংশোধন হয়। এগুলো সবই সেই সম্রাট আকবরের ল্যান্ড রেভেনিউ মিনিস্টার টোডরমলের আমলের জারগন। আমি ছিলাম কানুনগো, আমার কর্মচারীদের পদের নাম পেস্কার, যাঁচ মোহরার, আমিন ইত্যাদি। জোতদারের বাড়িতে (ভাড়া) থেকে, জোতদারের কলাটা-মুলোটা খেয়ে, আমরা জোতদারের লুকনো জমি উদ্ধারের চেষ্টায় রত। সময়টা সত্তরের দশকের মাঝামাঝি। একটা মাটির দোতলা বাড়ির খড়ের চাল থেকে ঝুলত টিনের পাতে আলকাতরায় লেখা ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকার’। একতলায় ছিল অফিস, দোতলায় আমরা মেস করে থাকতাম। মেস-ম্যানেজার ছিলেন নস্করবাবু। ঘাগু আমিন তিনি। তাঁর কর্মনৈপুণ্যে আমাদের মাসিক মেস-খরচ পঞ্চাশ টাকা পেরোত না। খরচ কম রাখার জন্য তিনি নানা রকম পদ্ধতি নিয়েছিলেন। এক বার, একটা খাতা বগলে নিয়ে এক জন পিওনকে সঙ্গে নিয়ে
|
ছবি: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য। |
বাড়ি-বাড়ি হাঁস-মুরগি গুনতে চলে গেলেন। হালকা করে রটিয়ে দেওয়া হয়েছিল: হাঁস-মুরগির উপর ট্যাক্স বসতে পারে। সবাই হাঁস-মুরগির সংখ্যা কম করে বলতে লাগল। যখন ফিরে এলেন, পিওনের দু’হাতে ঝুলছে জ্যান্ত-জ্যান্ত হংসবলাকা-মুরগিবলাকা। পাঁঠা-ছাগলও গুনেছিলেন এক বার। যখন ফিরলেন, কোলজোড়া নধর
পাঁঠা। চেন, চেন-পিওন এবং মৌজা-ম্যাপ নিয়ে চলে যেতেন জমি মাপতে। তখন খেত ভরা বাঁধাকপি, ফুলকপি, মুলো...। জমি মাপার জন্য ব্যবহার করা হত লোহার চেন। এক চেন হল প্রায় ৬৬ ফুটের সমান। লোহার চেন নিয়ে মাপামাপি করলে ফসলের ক্ষতি হয়। চাষিরা বলতেন, মাঠ ফাঁকা হোক, তার পর না হয় মাপামাপি করবেন...।
নস্করবাবু বলতেন, তোমাদের বাঁধাকপির জন্য সরকারি কাজ বাঁধা পড়তে পারে না, বরং সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার জন্য তোমাদের ফাইন হয়ে যেতে পারে...। শেষ অবধি নস্করবাবু নরম হতেন, মাপামাপি বন্ধ করে ফিরে আসতেন, শুধু পিওনের হাতে ঝুলত খেত-ওপড়ানো, মাটি লেগে থাকা শীতের ফসল। মাটির ওই বাড়িটায় ছিল একটা বড় দাওয়া। নস্করবাবু বললেন, মর্নিং-জলখাবার নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। দাওয়াটা এমনি এমনি পড়ে আছে, ইউজ করতে হবে। এ বার একটা টিনের পাত ঝুলল। আলকাতরায় লেখা ‘শিক্ষা অভিযান। সবার জন্য শিক্ষা। পয়সা লাগে না।’ রটিয়ে দেওয়া হল, এখানকার শিক্ষিত শিক্ষিত সরকারি কর্মচারীরা এ বার একটু সমাজসেবা করবেন। বিনে পয়সায় পড়াবেন। সকাল এগারোটা থেকে অফিস বসে। সকাল আটটা থেকে শিক্ষা অভিযান শুরু করে দিলেন নস্করবাবু। দু-তিন দিন পরই দাওয়ায় একটা ঝুড়ি, আর একটা মাঝারি সাইজের মাটির ঘড়া বসিয়ে দেওয়া হল। নস্করবাবু চোখ টিপে বললেন, আমি স্যার আমিন। আমিনের গ্রামারটা জানেন তো? আহাম্মক-এর ‘আ’, মিথ্যেবাদী-র ‘মি’ আর নকশাবাজি-র ‘ন’। এগুলো আমার একার জন্য করছি না স্যর, সবার জন্য। সমাজসেবাই বলতে পারেন। ক’টাকা মাইনে দেয় সরকার? ৫০ টাকার মধ্যে খাইখরচ রাখতে হলে এ সব করতেই হবে। আসল কাজটা শুরু হলে দেখবেন বাড়িতে অটোমেটিক মাছ-ডিম আসবে।
নস্করবাবু বলে দিলেন: শোন খুকি-খোকাগুলান, যখন পড়তে আসবি, যে যা পারবি গুরুদক্ষিণা নিয়ে আসবি। পয়সা-কড়ি না, ঘরে যা আছে। কলা-মুলো-পেঁপে ঝুড়িতে ফেলবি, চাল দু-চার বাটি যা আনবি, ঘড়ায় ফেলবি। আনতেই হবে তার মানে নেই, তবে গুরুদক্ষিণা না দিলে বিদ্যে মাথায় ঢোকে না।
প্রাইমারি স্কুল দু-এক কিলোমিটারের মধ্যেই ছিল। কিন্তু গ্রামের লোকের মনে হয়েছিল, মাস্টার হিসেবে মাস্টারের চেয়ে আমিন-পেস্কাররাই ভাল হবে। দাওয়া ভরে গেল। দাওয়া ভরছিল বলে ঝুড়িও ভরছিল। ঝুড়িতে কলা-মুলো ছাড়াও মাঝেমধ্যে শোল মাছ, ল্যাটা মাছও পড়ত। কুমড়ো শাক, লাউ শাকও। নস্করবাবুই ক্লাস নিতেন মূলত। ‘অ’-তে অজগর থেকে ‘ও’-তে ওল ঠিকই ছিল, তবে ‘আ’-তে আমের বদলে আমিন পড়াতেন। ‘ক’-তে কানুনগো, ‘প’-এ পেস্কার। নামতাও মুখস্থ করানো হত, যোগ-বিয়োগ ইত্যাদিও।
এক দিন ছাত্র পড়ানো হয়ে গেলে মাটির ঘড়ার ভিতরে ছরছর শব্দ হতে লাগল। ওই ঘড়ায় তো চাল জমা হয়। চাল তো নিঃশব্দ। তবে? ইঁদুর ছিল। মেঠো ইঁদুর। নস্করবাবুই টর্চ দিয়ে দেখলেন। চাল খাওয়ার জন্য ইঁদুর ঢুকবে কী করে? নস্করবাবু বললেন, কেউ ভালবেসেই দক্ষিণা দিয়ে গেছে। পর দিন ছাত্রসমাগম হলে নস্করবাবু জিজ্ঞাসা করেছিলেন— ঘড়ায় ইঁদুর দক্ষিণা দিয়েছে ক্যা?
এক জন বলল, আমি আজ্ঞে। সরল বালক সে। অপুর মতো চোখ। নস্করবাবু কিচ্ছু বললেন না, রাগও করলেন না। বললেন, আজ আমাদের সঙ্গে দুটো ভাত খেয়ে যাস। নস্করবাবু আমাকে বুঝিয়েছিলেন— ছেলেটি কোঁড়া জাতের। মাঠে ইঁদুর ধরেছিল। ইঁদুর ওদের সুখাদ্য। ভালবেসেই দিয়েছিল। ঝুড়িতে রাখেনি, পালাতে পারে। ও যা পারে, তা-ই দিয়েছিল। ওর সাধ্যমত। গুরুদক্ষিণা।
দেশটাকেও খুব ভাল চিনতেন নস্করবাবু। |
|
সুমিত্র বসাক |
|
• নিউ ইয়ারের পার্টিতে এমন সাংঘাতিক নাচলেন, আপনার বাঁধানো দু’পাটি
দাঁত ছিটকে গিয়ে আইটেম-গার্লের গালে সাংঘাতিক কামড়ে দিল। |
|
|
• শুনলেন ইংরিজি মতে নববর্ষ মানাতে গেলে জোব্বা ও ফল্স দাড়ি
লাগিয়ে রাস্তায় মদ খেতে হয়। তা-ই করলেন, কিন্তু রবীন্দ্রনাথকে
অপমান করছেন বলে অনেকে বেধড়ক পেটাল। |
• সচিন-কালিস রিটায়ার করল বলে সবাই কেঁদে আকুল।
আপনিও বাড়ি গিয়ে বললেন, সংসার ওভার, এ বার বনে চলে যাবেন।
ও মা, বউ-বাচ্চারা তক্ষুনি লাফিয়ে উঠে হাই-ফাইভ! |
|
|
|
|
• আদালতে ঝুড়ি ঝুড়ি মিথ্যে বলে তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়াকে বিপথে চালিত করার জন্য দিল্লি হাই কোর্ট এক মহিলাকে শাস্তি দিলেন, গাঁধীমূর্তির সামনে অনুতাপ ও প্রার্থনা করতে হবে। ভিনধর্মী স্বামীকে লুকিয়ে বিয়ে করেছিলেন, খবর ঘরে-বাইরে ফাঁস হয়ে যাওয়ায় তিনি কোর্টে স্বামীর বয়ান ও তাবৎ বিয়ে-নথি বেমালুম অস্বীকার করে বলেন সব সাজানো, ভুয়ো। অতঃপর কোর্টের রাম-ধমক, আদালতে সত্যবাদনের শপথ নিয়েও এই সত্যমেব জয়তে-র দেশে, এক নারীর (পেশায় আবার শিক্ষিকা) মুখে এমন ডাহা মিথ্যে! যাও, হররোজ চার ঘণ্টা করে গোটা এক হপ্তা রাজঘাটে গাঁধীর সামনে আপশোস! নজর রাখবে স্থানীয় থানার পুলিশও। আমজনতা ধন্দে: কোর্ট এমন অ্যাবস্ট্রাক্ট শাস্তি দিল! প্যাসিফিস্টরা উদ্বাহু, দেখলে, গাঁধীর সামনে আস্ত বিবেকটাকে কেমন নিল-ডাউন করিয়ে দিল! আর সন্দেহবাদী কাঁধ ঝাঁকিয়ে: শাস্তি না ছাই, ঘাড়ের কাছে পুলিশ তো কী, চার ঘণ্টা ধরে থোড়ি কেউ গলদশ্রু প্রার্থনা করবে! সেই স্কুলবেলা থেকে মাথা ঝুঁকিয়ে ঘাড় গোঁজ করে এ-ও-তা ভেবে খানকয়েক পিরিয়ড হেলায় কাটিয়ে দেওয়ার অভ্যেস ইন্ডিয়ান মজ্জাগত। সেখানে হাঁটু গেড়ে চক্ষু মুদে বসে, কিঞ্চিৎ ঢুলুনি সহ জজসাহেবের দেওয়া শাস্তি ননভায়োলেন্ট উদাসীনতায় উড়িয়ে, নাগাড়ে ধুম-থ্রি’র কথা ভেবে চলা কোনও ব্যাপার?
•
ক্রিসমাস-এর বাজারে আমেরিকায় হট্টগোল, মেরি ক্রিসমাস বনাম হ্যাপি হলিডেজ নিয়ে। ৪৯% মার্কিন নাগরিকের মত, তাঁরা চান শপিং মল বা সুপারস্টোর-এর কর্মীরা তাঁদের শুভেচ্ছা জানান ‘হ্যাপি হলিডেজ’ বা ‘সিজ্ন্স গ্রিটিংস’ বলে, ‘মেরি ক্রিসমাস’ দলে মোটে ৪৩%। তর্ক-আকুল ক্যাথলিক আর প্রোটেস্টান্টরা, সংসদে রিপাবলিকান আর ডেমোক্র্যাটরাও যুযুধান। দুই-তৃতীয়াংশ জেন-ওয়াই ‘হ্যাপি হলিডেজ’বাদী তো বয়স্করা ‘মেরি ক্রিসমাস’পন্থী। সমাজতাত্ত্বিকরা বলছেন, এ তর্ক হওয়ারই ছিল, মেরি ক্রিসমাস-এর মতো ‘একচেটিয়া খ্রিস্টান’ বার্তা লক্ষ ধর্মের হাজারটা সংস্কৃতির মানুষকে তুষবে কী করে? হ্যাপি হলিডেজ ঢের সর্বজনীন। কিন্তু একই জিনিস আমাদের বাংলায় হলে? পলিটিকালি-কাম-রিলিজিয়াসলি কারেক্ট হতে আপনি দুর্গাপুজোয় ‘শুভ উৎসব’ বলছেন, ভাবা যায়? বিটকেল বোরিং! আম-ইন্ডিয়ান অবশ্য এখন গাজন থেকে হ্যালোউইন, ইতুপুজো থেকে থ্যাংক্সগিভিং সব উৎসবের মুড়োয় ‘হ্যাপি’ জুড়ে দিব্য হ্যাপি আছেন। আঁতেল তর্কে কী কাজ, ‘হ্যাপি সান্টা দিবস’ বলে স্টেটাস দিলেই হয়! অবশ্য তাতে আবার সান্টা-বান্টার চুটকি ভেবে শিখরা না রেগে যান! |
|
|
১৫
ভারতের সম্মিলিত শ্রমশক্তির
মাত্র যত শতাংশ নারী |
৭৭১২০
রাজ্যে গ্রাম-শহর মিলিয়ে
১৫৬৬টি সরকারি হাসপাতালে
মোট যত বেড আছে |
১৪
রাঁচির সংশোধনাগারে বাগান
পরিচর্যার কাজে দৈনিক যত টাকা
মজুরি বরাদ্দ লালুপ্রসাদ যাদব-এর |
৪০০
বিশ্ব জুড়ে যত মিলিয়ন
ছাড়াল হোয়াট্সঅ্যাপ
ব্যবহারকারীর সংখ্যা |
৭৮
বার্ষিক যত মিলিয়ন রোজগারের নিরিখে ২০১৩ সালে বিশ্বের
সব ক্রীড়া-ব্যক্তিত্বের মধ্যে প্রথম স্থান পেলেন বিশ্বখ্যাত গল্ফার টাইগার উড্স |
৫৪
কলকাতার যত শতাংশ মানুষ
পাবলিক ট্রান্সপোর্ট-এ যাতায়াত করেন। ৮% মানুষ নিজস্ব গাড়িতে,
১১% সাইকেলে যাতায়াত করেন |
১২০০০০০০
যত পাউন্ড দরে নিজেদের প্রাসাদোপম ‘বেকিংহ্যাম প্যালেস’ বিক্রি করে দিলেন
ডেভিড ও ভিক্টোরিয়া বেকহ্যাম |
১৪৬৬৫৭৪
নিলামে যত মার্কিন ডলার দামে বিক্রি হল ১৯৩৬ বার্লিন অলিম্পিকে জেসি ওয়েন্স-এর জেতা সোনার মেডেল |
৪.৫ নেলসন ম্যান্ডেলার যত টন
ওজনের ব্রোঞ্জ-মূর্তি ‘ইউনিটি’ বসানো হল দক্ষিণ আফ্রিকার ইউনিয়ন বিল্ডিং-এর লনে |
|
|
|
|
অ
সী
ম
চৌ
ধু
রী |
|
|
চেয়েছি জীবন... চেয়েছি শিক্ষা আলো
ডালকুত্তারা আঁচড়াল কামড়াল।
আইন ও কানুন সব জেনেবুঝে চুপ।
পুড়ে যাব মেয়ে... একবিংশের ধূপ। |
উৎসব... আলো... জোগাড় করেছি নতুন ক্যালেন্ডার
এই বছরেও হয়তো পৃথিবী কাঁদবে... পুড়বে আর ‘ভুঁড়ি কমাবার মেশিনে
বিনিয়োগ কেন বেশি নেই’
সে থিমে বাজবে অতিশিক্ষিত নাগরিক হাহাকার |
|
|
|
লেটারিং বেটারিং |
|
|
|
|
|
|
|
|
|