তৃণমূলের নেতা, মন্ত্রীরই সমালোচনায় হুমায়ুন

প্রকাশ্য সভায় মন্ত্রী সুব্রত সাহা ও মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল সভাপতি মহম্মদ আলির সমালোচনা করলেন দলেরই জেলা কার্যকরী সভাপতি হুমায়ুন কবীর। শনিবার সন্ধ্যায় লালবাগের পাঁচরাহা মোড়ের ওই সভায় তিনি বলেন, “আলি সাহেবকে বলছি, পণ্ডিত আছেন থাকুন। শিক্ষক আছেন, মন্ত্রী আছেন, থাকুন। কিন্তু ভণ্ডামি করবেন না। আমাকে মুর্শিদাবাদের অনুব্রত বলা হচ্ছে! আমাকে ঢিল ছুড়লে আমি কিন্তু জুতো ছুড়ব।” মহম্মদ আলি ও সুব্রতবাবুকে ‘কংগ্রেসের লোক’ বলে আখ্যা দিয়ে হুমায়ুন বলেন, “সামনে লোকসভা ভোটে এ জেলায় কংগ্রেসকে শূন্য করে দেব। তৃণমূলে থেকে যাঁরা তার বিরোধিতা করবেন, তাঁদের ধোলাই দেওয়া হবে।’’ মন্ত্রী সুব্রতবাবুর নাম করে হুমায়ুন বলেন, “রাজ্যের সব জেলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোটে সফল হচ্ছেন। বাদ কেবল এই জেলা। ঘরের ভিতরে বসে রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরীর ঠিকাদারদের দেওয়া বিরিয়ানি সুব্রত সাহারা খেলে কী করে এ জেলায় তৃণমূল এক নম্বরে যাবে?”
মুর্শিদাবাদে দলেরই নেতাদের মধ্যে এই বিবাদ নিয়ে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “দলের কেউই প্রকাশ্যে দলীয় কর্মকর্তাদের সমালোচনা করতে পারেন না। তাঁদের যা বলার, দলের ভিতরেই বলতে হবে। তবে লালবাগে কী হয়েছে, তা জানি না। জেলা থেকে এখনও রিপোর্ট পাইনি। পেলে দলে নিশ্চয়ই আলোচনা করব।” হুমায়ুনের বিষোদগার প্রসঙ্গে মন্ত্রী সুব্রতবাবুর অবশ্য বক্তব্য, “কোনও মন্তব্য করব না।” হুমায়ুনের সভার পর মহম্মদ আলিও তাঁর মোবাইল ফোনটি বন্ধ করে দেন। ফলে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তৃণূমূল সেবাদল ও তৃণমূলের প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির লালবাগ ব্লক কমিটির ডাকে এই দিন ওই সভার আয়োজন করা হয়েছিল। পাঁচরাহা মোড়ের সভাস্থল থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে তৃণমূলের মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি মহম্মদ আলির বাড়ি হলেও তাঁকে সভায় ডাকা হয়নি।
গত ২২ ডিসেম্বর বেলডাঙার কাশিমবাজার রাজ গোবিন্দসুন্দরী বিদ্যাপীঠে মহম্মদ আলি সভা করে হুমায়ুনের ঘোরতর বিরোধী সিটুর নেতা আসরাফ হোসেনকে দলে অন্তর্ভুক্ত করেন। গত ১৮ ডিসেম্বর রেজিনগরে কংগ্রেসের সভায় চড়াও হয়ে জেলাপরিষদের সভাধিপতি, দুই বিধায়ক ও জেলাপরিষদের এক সদস্যাকে মারধরের অভিযোগ ওঠে হুমায়ুনের বিরুদ্ধে। দু’দিন পরে বহরমপুরে তৃণমূলের রুদ্ধদ্বার কর্মিসভায় হুমায়ুনকে ‘মুর্শিদাবাদের অনুব্রত’ বলা হয়েছে বলে মহম্মদ আলির বিরুদ্ধে অভিযোগ হুমায়ুন শিবিরের। বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে বিরোধী ও নির্দলদের বাড়িতে হামলায় উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। তৃণমূল সূত্রের খবর, সেই অনুব্রতের সঙ্গে তাঁর নাম জড়ানোর জন্যই প্রাক্তন মন্ত্রী হুমায়ুন কবীর এ দিন মহম্মদ আলির বিরুদ্ধে তোপ দাগেন।
রেজিনগরে কংগ্রেসের সভায় চড়াও হয়ে মারধর করার কথা জোর গলায় স্বীকার করে নিয়ে লালবাগের সভা থেকে এ দিন হুমায়ুন বলেন, “কংগ্রেসের ওই সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে গালি দেওয়া হয়। আমি তখন আমাদের দলের কর্মীদের হুকুম দিলাম, ‘যাও তোমরা ওদের ভাল করে পালিশ করে দাও!’ তখন কংগ্রেসের জেলাপরিষদের সভাধিপতি ও দুই বিধায়ক দৌড়ে কুল পায় না। আর তাতেই নাকি আমি মুর্শিদাবাদের অনুব্রত হতে চাইছি বলে আমার নামে বলা হচ্ছে। কংগ্রেসের ওই তল্পিবাহকদের বলছি, শিক্ষকই হোন আর মন্ত্রীই হোন, এ জেলায় তৃণমূলকে এক নম্বরে নিয়ে যেতে বাধা দিলে তাঁদের কপালে কষ্ট আছে।” রেল প্রতিমন্ত্রী অধীরবাবুর বক্তব্য, “গোটা রাজ্যেই তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে, মুর্শিদাবাদও তার ব্যতিক্রম নয়।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.