‘মেরি’ ওডাফা। হ্যাটট্রিকের শট। |
এ বারও ওডাফাকে ঘিরে নানা জটিলতা দানা বেধেছিল। মরসুম শুরুর আগেই চোট পেয়ে দীর্ঘ সময়ের জন্য মাঠের বাইরে ছিটকে গিয়েছিলেন বাগান-অধিনায়ক। মাঠে ফেরার পরও পারফরম্যান্স ছিল না তাঁর। মোহনবাগান মাঠে তাঁর বিরুদ্ধে পোস্টারও পড়েছিল। প্রিয় সমর্থকদের কাছ থেকেই ওডাফাকে শুনতে হয়েছিল ‘গো ব্যাক’ ধ্বনি। তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হবে কি না, তা নিয়েও ভাবনাচিন্তা শুরু করে দিয়েছিলেন কর্তারা। শেষ দিকে তো এমন পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছিল যে, ম্যাচে খারাপ খেলার পর যুবভারতীর পিছনের দরজা দিয়ে চোরের মতো পালাতে দেখা গিয়েছিল গোলমেশিনকে। এ দিন তা স্বীকার করে নিয়েই বলে ফেললেন, “এত দিন পিছনের দরজা দিয়ে পালাতে বাধ্য হয়েছিলাম। কিন্তু এ বার থেকে ফের মাথা উঁচু করে সামনের দরজা দিয়েই বেরোব।”
ম্যাচে শুরু থেকেই এ দিন দুরন্ত ছন্দে ছিলেন ওডাফা। নিজে শুধু হ্যাটট্রিকই করেননি। গোল করিয়েছেন এবং বহু গোলের সুযোগও তৈরি করে দিয়েছেন। আই লিগের শেষ পুণে এফসি ম্যাচে ওডাফা জোড়া গোল করলেও নিজের চেনা ছন্দে ছিলেন না তিনি। সে দিনও কিছু খামতি ধরা পড়েছিল। তবে কালীঘাট এমএসের বিরুদ্ধে ওডাফাকে অনেক বেশি চনমনে লাগল। অনবদ্য পাস। মাপা শট। দুরন্ত ড্রিবলিং। হাফ টার্নে নিখুঁত প্লেসিং-এ গোলসবেতেই এ দিন সেই চেনা ওডাফাকেই পাওয়া গেল। |
বিরতির আগে রাম মালিকের যে গোলে মোহনবাগান ১-০ করে, তার পিছনেও অবদান রয়েছে বাগানের নাইজিরীয় স্ট্রাইকারের। এর আগে বা পরেও বহু গোলের সুযোগ তৈরি করেছিলেন মোহনবাগান অধিনায়ক। যা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন সাবিথরা। ওডাফার নিজের দু’টি শট ক্রস বারে আর পোস্টে লেগে না ফিরলে একা পাঁচ গোল করার রেকর্ড করে ফেলতেন। সব ক’টা সুযোগ তাঁরা কাজে লাগাতে পারলে ম্যাচের ফল ১০-২ হতে পারত। কালীঘাটের জোডিনলিয়ানা ও সানডের দুরন্ত দু’টি গোল বাঁচিয়েছেন বাগানের কিপার শিল্টন পাল। কালীঘাট এমএস এ দিন শুরু থেকেই রক্ষণের পথ বেছে নিয়েছিল। দশ জনই ডিফেন্স করতে নেমে পড়লে যা হয়, তাই হল। রাম-ওডাফাদের ঝোড়ো আক্রমণে খড়কুটোর মতোই উড়ে গেল অরুণ ঘোষের টিম।
করিম বেঞ্চারিফা ছুটি কাটাতে সিঙ্গাপুরে। করিমকে ছাড়াই মৃদুল বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোচিংয়ে কাতসুমি-শৌভিকরা এ দিন বছরের সবচেয়ে বড় জয় পেল।
২০১৩-র শুরুতে কাঁটার ঘায়ে যতটা ক্ষতবিক্ষত হতে হয়েছিল বাগানকে, এ দিন কিন্তু বছরের শেষ ম্যাচ খেলতে নেমে তার চেয়ে বেশি গোলাপের পাপড়ি ছড়িয়ে দিলেন ওডাফা-রাম-শিল্টনরা। তাও আবার ডার্বির ঠিক ১৪ দিন আগে।
মোহনবাগান: শিল্টন, আইবর, কিংশুক, রোউইলসন (রানা), শৌভিক, রাম, কাতসুমি, পঙ্কজ (আদর্শ), রবিন্দর (রাজীব), সাবিথ, ওডাফা। |