|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৪... |
|
একের ভূমিকা অন্য গ্রন্থে |
বইপোকা |
সুন্দরবন লইয়া রচনা বলিতেই নিবিষ্ট পাঠকের মনে ভাসিয়া উঠিবে শিবশঙ্কর মিত্রের সুন্দরবনে আর্জান সর্দার, সুন্দরবন, রয়্যালবেঙ্গলের আত্মকথা। আর একটু গভীরে যে পাঠকের গ্রন্থপ্রেম তিনি বলিবেন, ওই গ্রন্থসকলের নাভানা-সংস্করণের ন্যায় সযত্ন, শোভন সংস্করণ অদ্যাবধি প্রকাশিত হয় নাই। কিন্তু গতস্য শোচনা নাস্তি। শিবশঙ্কর মিত্রের সকল সুন্দরবন লইয়া একটি সুমুদ্রিত গ্রন্থ সুলভ, সুন্দরবন সমগ্র (আনন্দ, প্রথম সংস্করণ, সপ্তম মুদ্রণ ২০১৩)। ইহা সুখের কথা। অবশ্য দুঃখের কথাও কিঞ্চিৎ আছে। তাহা হইল এক গ্রন্থের ভূমিকা অন্য গ্রন্থে চাপিবার সংশয়। সুন্দরবন গ্রন্থের নাভানা-সংস্করণে (মে ১৯৮২) গ্রন্থকারের ভূমিকায় আছে, ‘নিবিড় সবুজঘন বনানী, তার শ্বাপদকুল, তার রঙ-বেরঙের উড়ন্ত পাখির ঝাঁক, আর সেই সঙ্গে অগণিত গভীর ও অগভীর আঁকাবাঁকা নদী-উপনদীর তর্তর্ শ্বেত স্রোতোধারা নিয়ে সমগ্র সুন্দরবনের রূপও যেমন অপরূপ, তেমনি সে-বনের উপকূলবাসী নরনারীর হাসি-কান্নাও বুঝি বুঝি কেন, নিশ্চয়ইসে-রূপের সঙ্গে একাত্ম হয়ে অনির্বচনীয়। তাই সুন্দরবনের খণ্ড জীবনের বিচিত্র স্বাদের হাসি-কান্নাগুলি ভিন্নতর নামে গণ্ডীভূত করা অহেতুক ও অবান্তর বলে মনে হয়েছে।’ এই ভূমিকাটিই সমগ্রে সুন্দরবনে আর্জান সর্দার গ্রন্থের। কিন্তু সে গ্রন্থ অখণ্ড উপন্যাস, খণ্ড জীবনের বিচিত্র স্বাদের গল্প নহে। তদুপরি তাহার নাম কেবল ‘সুন্দরবন’ নহে, ফলে ভিন্নতর নামে গণ্ডীভূত করা অহেতুক ও অবান্তর মনে হওয়ার প্রসঙ্গটিই অবান্তর! ওই ভূমিকা কোন সংস্করণের, পাঠই বা কোনটির, সেই জরুরি তথ্য এই সংশয় কাটাইতে পারিত। বাংলা গ্রন্থের প্রথা মানিয়া তাহা হয় নাই। |
|
|
|
|
|