সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ কর্তৃপক্ষকে মেডিক্যাল কলেজ খোলার প্রস্তাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার রাজারহাটে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস এবং সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। এ দিন নিজের হাতে ইট গেঁথে সুরকি দিয়ে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, আর্চবিশপ টমাস ডি’সুজা, হিডকো-র চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন প্রমুখ। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীকে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের প্রাক্তনী সংসদের তরফে ব্লেজার পরিয়ে দেওয়া হয়। উল্লেখ্য, আগেই ওই কলেজের প্রাক্তনী সংসদের তরফে মুখ্যমন্ত্রীকে সাম্মানিক সদস্যপদ দেওয়া হয়েছিল।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আজকাল দেখি, আমাদের রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরা হায়দরাবাদ, বেঙ্গালুরুতে পড়তে যায়। সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজকে এমন ভাবে তৈরি হতে হবে যাতে ভবিষ্যতে অন্য রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরা এখানে পড়তে আসে।” এই কলেজ যাতে ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত হতে পারে, সে ব্যাপারেও কর্তৃপক্ষকে উদ্যোগী হতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “গত ৩৫ বছরে মাত্র একটি নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছিল। আমরা ক্ষমতায় এসে ছ’টি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করেছি। ৩২টি নতুন কলেজ, তিনটি নতুন মেডিক্যাল কলেজ হয়েছে। আমি সেন্ট জেভিয়ার্সকেও মেডিক্যাল কলেজ খোলার প্রস্তাব দিচ্ছি।” |
নতুন সাজে। সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের রাজারহাট ক্যাম্পাসের শিলান্যাসে
কলেজের ব্লেজার গায়ে মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবার সুদীপ আচার্যের তোলা ছবি। |
কলেজ ভবন তৈরির জন্য ১৬.৬৪ একর জমি দেওয়ায় মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান সেন্ট জেভিয়ার্সের অধ্যক্ষ ফেলিক্স রাজ। কলেজের প্রভিন্সিয়াল জয়রাজ ভেলুস্বামী বলেন, “গত বছর পার্ক স্ট্রিটে আমাদের কলেজের এক অনুষ্ঠানে এসে মুখ্যমন্ত্রী জমি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। উনিই আমাদের কাছে বড়দিনের সান্তাক্লজ।” তার উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এটা শুধুমাত্র ক্রিসমাস গিফ্ট নয়। এটা আগামী দিনের ভিশন এবং মিশন-ও। কথায় আছে, ওল্ড ইজ গোল্ড। বিভিন্ন দিকে বিস্তৃত হওয়ার পাশাপাশি কী ভাবে মেধার বিকাশ ঘটানো যায়, শতবর্ষ-প্রাচীন সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজকে সে দিকে লক্ষ রাখতে হবে। এ ব্যাপারে তাদেরই পথিকৃৎ হতে হবে। কোনও আর্থিক সাহায্য দরকার হলে আমি আমার চিত্র প্রদর্শনী থেকে কলেজকে টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করব।
অনুষ্ঠানে নিজের জীবনের উদাহরণ টেনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি যখন সাংসদ হই, তখন এত সুযোগ-সুবিধা ছিল না। অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া শিখেছি। এখনকার ছেলেমেয়েদের সামনে সুযোগ-সুবিধা অনেক। তারা যাতে সেই সুযোগ ঠিক মতো ব্যবহার করতে পারে, সে ব্যাপারে এই কলেজকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।” এ দিনের অনুষ্ঠানে ছিলেন সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের বর্তমান ছাত্রছাত্রীরাও। যাঁরা মূল অনুষ্ঠানে ঢুকতে পারেননি, তাঁরা বাইরে দাঁড়িয়েই মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য শুনেছেন। এমনকী, রাস্তার ধারে ভিড় করে ছিলেন রাজারহাটের অনেক সাধারণ মানুষও। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানের পরে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মুখ্যমন্ত্রী নিজে সারাক্ষণ থেকে উপভোগ করেন সেটি। |