|
|
|
|
|
দুই মন্ত্রীর ‘দ্বন্দ্বে’ অনিশ্চিত বইমেলা
নিজস্ব সংবাদদাতা • মালদহ |
|
বইমেলার কর্তৃত্ব নিয়ে জেলার দুই মন্ত্রীর মধ্যে ঠান্ডা লড়াই শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর জেরে মালদহ জেলা বইমেলা নিয়ে তীব্র অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, দুই মন্ত্রীর কাউকে ‘অসন্তুষ্ট’ করে এগোতে চাইছেন না উদ্যোক্তারা। এই অবস্থায় এখন পর্যন্ত বইমেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটিই গঠন হয়নি। দুই মন্ত্রীর ঘনিষ্টদের বইমেলা কমিটিতে রাখা নিয়েই বিপাকে পড়েছে জেলা প্রশাসন ও জেলা গ্রন্থাগার আধিকারিক। কমিটি গঠন না হওয়ায় বইমেলা কবে হবে তা নিয়ে এখনও বৈঠকও করতে পারেনি জেলা প্রশাসন। এই অবস্থায় বইমেলার অনিশ্চয়তা নিয়ে জেলার বইপ্রেমী মানুষেদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। দুই মন্ত্রীর একজন পর্যটন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী বলেন, “বইমেলা শিক্ষিত ও বুদ্ধিজীবীদের। বইমেলা নিয়ে দুই মন্ত্রীর লড়াইয়ের যে অভিয়োগ উঠেছে তা ঠিক নয়। বইমেলা কবে হবে। কোথায় হবে আমি কিছুই জানি না।” আর এক জন রাজ্যের সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র বলেন, “বইমেলায় কোনও কর্তৃত্ব দেখাতে চাই না। যাঁরা বইপ্রেমী তাঁরাই বইমেলা করবেন। গত দুইবছর আমরা ভালভাবে বইমেলা করেছি। খুব শীঘ্রই বইমেলার বৈঠক ডাকা হবে।”
জেলা বইমেলার কমিটির ‘মেম্বার সেক্রেটারি’ জেলার গ্রন্থাগারিক মনঞ্জয় রায় বলেন, “বইমেলার কমিটি এখনও তৈরি হয়নি। খুব শীঘ্রই কমিটি তৈরি করে বৈঠক ডাকা হবে।” জেলা বইমেলা কমিটির কার্যকারী সভাপতি জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক নীলকমল বিশ্বাস বলেন, “খুব শীঘ্রই মেলার বৈঠক ডাকা হবে।” |
“বইমেলা কবে হবে, কোথায়
হবে আমি কিছুই জানি না।”
কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী, পর্যটন মন্ত্রী |
“কোনও কর্তৃত্ব দেখাতে চাই না। যাঁরা
প্রকৃত বইপ্রেমী
তাঁরাই বইমেলা করবেন।”
সাবিত্রী মিত্র, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী |
|
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, রাজ্যে সরকার পরিবর্তনের পর দুই বছর মন্ত্রী সাবিত্রী দেবীর ঘনিষ্ঠ জেলা তৃণমূল যুব কংগ্রেস সভাপতি অম্লান ভাদুড়ির উদ্যোগেই মালদহ জেলা বইমেলা হয়। তখন বর্তমান রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুবাবু কংগ্রেসে ছিলেন। সম্প্রতি নানা বিষয় নিয়ে দলীয় স্তরে অম্লানবাবুর সঙ্গে মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুবাবুর বিরোধ চলছে বলে অভিযোগ। এমন কী, একটি মারপিটের ঘটনায় পর্যটন মন্ত্রী ঘনিষ্ট এক যুবকের স্ত্রী ইংরেজ বাজার থানায় গিয়ে অম্লান ভাদুড়ির বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা দায়ের করে। তার পর থেকে দুই জনের কথাও বন্ধ বলে দলীয় সূত্রের খবর।
দলীয় সূত্রের খবর, প্রাথমিকভাবে ৮ জানুয়ারি থেকে ১৪ জানুয়ারি সাত দিন মালদহ জেলা বইমেলার হবে বলে ঠিক হয়। অভিযোগ, বিগত দুই বছরের মত এ বছরেও সাবিত্রীদেবীর ঘনিষ্ট অম্লানবাবুকে জেলা বইমেলা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক করে বইমেলার প্রস্তুত্তি শুরু হতেই বাদ সাধে পর্যটন মন্ত্রীর অনুগামীরা। তাঁদের দাবি বইমেলা কমিটিতে অম্লানবাবুকে রাখা যাবে না। এই নিয়েই দুই মন্ত্রীর মধ্যে ঠান্ডা লড়াই শুরু হয় বলে অভিযোগ।
তৃণমূল যুব কংগ্রেসের জেলা সভাপতি অম্লানবাবু বলেন, “বইমেলা সংস্কৃতি প্রেমী মানুষদের। বইমেলা আমরা করব। কেউ আমাকে আটকাতে পারবে না।” আর মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুবাবুর অনুগামী বলে পরিচিত তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক দেবপ্রিয় সাহা বলেন, “আমাদের বাদ দিয়ে বইমেলা কেউ করতে পারবে না। সবাইকে নিয়ে বইমেলা করলে, তবেই হবে।” |
|
|
|
|
|