|
|
|
|
দুই সদ্যোজাতকে খুনের অভিযোগে আটক দুই মা
নিজস্ব প্রতিবেদন |
অর্থাভাবের জেরে এ রাজ্যের দু’প্রান্তে দুই সদ্যোজাতকে খুনের অভিযোগ উঠল তাদের মায়েদের বিরুদ্ধে। দুই মা- কেই পুলিশ আটক করেছে।
বৃহস্পতিবার ভোরে মধ্যমগ্রামের নতুনপল্লির বাসিন্দা শঙ্করী পাল বাড়িতেই পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। দুপুরে আচমকা শিশুর চিৎকার শুনে পড়শিরা ওই বাড়িতে যান। তাঁদের অভিযোগ, শঙ্করী প্রথমে শিশুটির গলা টিপে ধরেন। পরে তাকে পাশে রাখা বস্তায় ঢুকিয়ে শিলনোড়া দিয়ে থেঁতলাতে শুরু করেন। প্রতিবেশীরা শিশুটিকে বাঁচানোর সুযোগ পাননি। পুলিশ এসে শঙ্করীকে আটক করে।
পুলিশের দাবি, তাদের কাছে অপরাধ কবুল করে শঙ্করী জানিয়েছেন, চার সন্তান নিয়ে তাঁর অভাবের সংসার। পঞ্চম সন্তানকে কী ভাবে মানুষ করবেন, সেই দুশ্চিন্তাতেই তিনি তাকে মেরে ফেলেন। বছর তিরিশের শঙ্করী পরিচারিকার কাজ করেন। তাঁর স্বামী শিবশঙ্কর ভ্যান চালান। তাঁদের এক পড়শি বলেন, “শিশুটির চিৎকার শুনে এসে শঙ্করীকে ওই কাজ করতে বারণ করি। কিন্তু ততক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে।” আর এক পড়শির বক্তব্য, “ওদের সংসারে খুবই অভাব। কিন্তু তা বলে সদ্যোজাতকে খুন করবে? এ মানা যাচ্ছে না।” ঘটনার পরে ওই এলাকায় শিবশঙ্করের দেখা মেলেনি। তাঁর খোঁজ করছে পুলিশ।
এ দিনই সাতসকালে নয়ানজুলিতে এক সদ্যোজাতের দেহ মেলায় সরগরম হয় চুঁচুড়ার রবীন্দ্রনগর এলাকা। অভাবের তাড়নায় এলাকারই কল্পনা বাছার তাঁর পুত্রসন্তানকে নয়ানজুলিতে ফেলে খুন করেন বলে অভিযোগ তোলেন পড়শিরা। কল্পনাকে বেধড়ক মারধর করেন পড়শি মহিলারা। সে সময় তাদের কাছে কল্পনা অপরাধের কথা কবুল করেন বলে দাবি স্থানীয়দের। পুলিশ অবশ্য জানায়, কল্পনা তাদের কাছে দাবি করেছেন, মৃত সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ায় তিনি দেহটি নয়ানজুলিতে ফেলে দেন। পুলিশ গিয়ে এলাকাবাসীর হাত থেকে কল্পনাকে উদ্ধার করে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ভর্তি করায়। শিশুটির দেহ ময়না-তদন্তে পাঠায়। চুঁচুড়ার আইসি নির্মল যশ বলেন, “ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পেলেই শিশুটির মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। ওই মহিলাকে আটক করা হয়েছে। তিনি চিকিৎসাধীন। কিছুটা সুস্থ হলেই আইনি পদক্ষেপ করা হবে। মহিলা এবং এলাকাবাসীর দাবি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি।”
বছর বত্রিশের কল্পনাও পরিচারিকার কাজ করেন। তাঁর স্বামী ভোলা চুঁচুড়ার একটি আবাসনে রাত-পাহারার কাজ করেন। এই দম্পতিরও তিন মেয়ে, এক ছেলে। এ দিন ওই ঘটনার পরে কল্পনাও বলেন, “অভাবের সংসারে পঞ্চম সন্তান মানুষ করতে পারব না ভেবেই আগের রাতে জন্ম দেওয়ার পরে ওকে কাপড়ে মুড়ে নয়ানজুলিতে ফেলে দিই। ওর বুকটা তখনও ওঠানামা করছিল।” |
|
|
|
|
|