|
|
|
|
১০০ দিনে গতি আনতে সফরে কর্তারা
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
একশো দিনের কাজে পিছিয়েই যাচ্ছে রাজ্য। পরিস্থিতি এমন জায়গায় দাঁড়িয়েছে যে, গত বছরের নিরিখে চলতি বছরে কাজের অগ্রগতি অর্ধেকেরও কম। কোনও কোনও জেলা আবার বিগত বছরের এক চতুর্থাংশ কাজও করতে পারেনি! হাতে সময় মাত্র আর ৩ মাস। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, গত বছর শ্রমদিবসের যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল পরের বছর তা বাড়াতে হবে। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি বলছে, বাড়ানো তো দূরের কথা, আদৌ বিগত বছরকে ছুঁতে পারবে কি না, তা নিয়েই সংশয় রয়েছে। এই প্রেক্ষিতে একশো দিনের কাজে গতি আনতে জেলা সফরে বেরোচ্ছেন রাজ্যের পদস্থ আধিকারিকরা। খোদ পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের শুক্রবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় আসার কথা ।
দুই মেদিনীপুর, দুই দিনাজপুর-সহ রাজ্যের ১৩টি জেলার পরিস্থিতি সব থেকে খারাপ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আগামী ২৬ ও ২৭ ডিসেম্বরএই ১৩টি জেলাতেই বৈঠক করবেন রাজ্যের পদস্থ আধিকারিকেরা। যে বৈঠকে জেলার পদস্থ আধিকারিকদের পাশাপাশি বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানেরা থাকবেন। কোথায় কী সমস্যা রয়েছে, কেন কাজ হচ্ছে না জানার পর কী ভাবে কাজে গতি আনা যায়, সে ব্যাপারে দাওয়াই দেবেন রাজ্যের পদস্থ আধিকারিকরা। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, স্পেশাল সেক্রেটারি, জয়েন্ট সেক্রেটারি, ডেপুটি সেক্রেটারির পাশাপাশি সৌরভকুমার দাসের মতো প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি, একশো দিনের প্রকল্পে রাজ্যের কমিশনার দিব্যেন্দু সরকারও যাবেন এই বৈঠক করতে। পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকাও পরিদর্শন করতে বলা হয়েছে এই সমস্ত আধিকারিকদের।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর রাজ্যে ২২৯ কোটি ৮৮ লক্ষ ৭৮ হাজার ৮৭৫টি শ্রমদিবস তৈরি হয়েছিল। সেখানে চলতি বছরের ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত শ্রমদিবস তৈরি হয়েছে ১১৯ কোটি ৫৪ লক্ষ ৪৭ হাজার ৮২২টি। অর্থাৎ গত বছরকে ছুঁতে হলে আগামী তিন মাসে আরও ১১০ কোটি ৩৪ লক্ষ ৩১ হাজার ৫৩টি শ্রমদিবস তৈরি করতে হবে। যা এক কথায়, অসম্ভব বলে মনে করছেন প্রশাসনিক কর্তারা। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় একশো দিনের প্রকল্পে গত বছর ১ কোটি ৬৫ লক্ষ ৯০ হাজার ৪৪১টি শ্রমদিবস তৈরি হয়েছিল। চলতি অর্থবর্ষে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত শ্রম দিবস তৈরি হয়েছে মাত্র ৪৪ লক্ষ ৫৭ হাজার ৭৩৬ দিন। অর্থাৎ এক চতুর্থাংশ। জলপাইগুড়িতে আবার গত বছরের তুলনায় ৫ ভাগের এক ভাগও শ্রমদিবস তৈরি হয়নি।
এতটা খারাপ অবস্থা কেন?
প্রশাসন জানাচ্ছে, পঞ্চায়েত নির্বাচন অবশ্যই একটা কারণ। ওই সময় কাজ করা যায়নি। এ ছাড়াও নতুন গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি গঠনেও বেশ কিছুটা সময় লেগেছে। ফলে কাজের গতিতে কিছুটা ভাটা পড়েছে। বর্তমানে বেশিরভাগ গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি তৃণমূলের দখলে। একদিকে বেশিরভাগই অনভিজ্ঞ। তার উপর রয়েছে দলীয় কোন্দল। একপক্ষ কোথাও পুকুর খননের জন্য প্রস্তাব দিলে অন্য পক্ষ তাতে বাগড়া দিচ্ছেন। আর মাঝে পড়ে প্রশাসনিক কর্তারা দিশেহারা। ঐকমত্য না হলে কাজ করানো কঠিন। ফলে কাজ হচ্ছে না। শ্রমদিবসও তৈরি হচ্ছে না।
তবে কারণ যা-ই হোক, একশো দিনের কাজে গতি বাড়াতে বদ্ধপরিকর রাজ্য সরকার। পদস্থ আধিকারিকদের এই দাওয়াই কতটা কাজে লাগল, বলবে সময়।
|
|
|
|
|
|
|