পরিবহণের ৩ নিগমে এ বার একই পরিচালন
ন্ত্রিসভায় রদবদলের দিনেই রাজ্যের পরিবহণ দফতরে বড়সড় পরিবর্তন ঘটালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে তিনটি প্রধান পরিবহণ নিগমের সংযুক্তীকরণের প্রয়াসও আর এক ধাপ এগোল। ওই তিন নিগম সিটিসি, সিএসটিসি এবং ভূতল পরিবহণের (ডব্লিউবিএসটিসি) যে আলাদা আলাদা পরিচালন সমিতি ছিল, বৃহস্পতিবার সেগুলি ভেঙে দিয়ে একটি অভিন্ন পরিচালন সমিতি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এবং নতুন সমিতির চেয়ারম্যান হয়েছেন পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র। তিনি ছাড়াও ন’সদস্যের অভিন্ন পরিচালন সমিতিতে রয়েছেন রাজ্যের শাসকদলের দুই বিধায়ক তাপস রায় ও সুলতান সিংহ। রয়েছেন পরিবহণ-সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, সিটিসি-ডব্লিউবিএসটিসি’র ম্যানেজিং ডিরেক্টর, সিএসটিসি’র এমডি। আর আছেন কলকাতা মোটর ভেহিক্লসের ডিরেক্টর, কলকাতা পুর-কমিশনার এবং কেএমডিএ’র সিইও। পরিবহণমন্ত্রী এ দিন এই সিদ্ধান্তকে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিয়ে বলেন, “তিন নিগমের একত্রীকরণ পর্ব কার্যত শুরু হয়ে গেল। অভিন্ন পরিচালন সমিতি হওয়ায় এখন আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে অনেক সুবিধে হবে। জেএনএনইউআরএমের নতুন বাসগুলোকে ভাল ভাবে কাজে লাগানো যাবে।”
পরিবহণ-সূত্রের খবর: রাজ্যের শাসনক্ষমতায় আসার পরে পরেই মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, সংযুক্তীকরণের মাধ্যমে পরিবহণ নিগমগুলোকে লাভজনক করে তোলা চেষ্টা হবে। ঠিক হয়, মূলত কলকাতা শহরে পরিষেবাদানকারী প্রধান তিনটি নিগম সিএসটিসি, ট্রাম কোম্পানি ও ভূতল পরিবহণকে মিলিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু সিএসটিসি কেন্দ্রীয় অনুদানপ্রাপ্ত হওয়ার সুবাদে পরিকল্পনাটি প্রাথমিক ভাবে কিছুটা ধাক্কা খেয়েছে। এক পরিবহণ-কর্তার কথায়, “আইনি জট কাটাতে সরকার আপাতত চাইছে তিনটিকে এক ছাতার তলায় আনতে। এতে তিন নিগমের জমি-সম্পত্তি ব্যবহার ও রুট তৈরি দু’টোতেই সমন্বয় আসবে।”
পরিবহণ-সূত্রের খবর: দেনার ভারে জর্জরিত সরকারি বিভিন্ন পরিবহণ নিগমের দুর্দশার কারণ ও তাদের চাঙ্গা করার উপায় খুঁজতে রাজ্য সরকার গত বছর একটি পরামর্শদাতা সংস্থাকে নিয়োগ করেছিল। সংস্থাটি সমীক্ষা চালিয়ে যে রিপোর্ট দিয়েছে, তাতে সবচেয়ে বেশি আলোকপাত করা হয়েছে ‘অবৈজ্ঞানিক’ বাস-রুটের উপরে। রিপোর্টের দাবি, অনেক রুটেই একাধিক নিগম একসঙ্গে বাস চালাচ্ছে। এতে কেউ লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছে না। নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা করে আখেরে সরকারেরই ক্ষতি হচ্ছে। “অভিন্ন পরিচালন সমিতি থাকলে তিন নিগম মিলিয়ে অভিন্ন রুট তৈরি সহজ হবে। তাতে যাত্রীদের যেমন লাভ, তেমন সরকারেরও আয় বাড়বে।” মন্তব্য করেছেন পরিবহণ দফতরের এক পদস্থ কর্তা।
শুধু রুট নয়। অভিন্ন পরিচালন সমিতির দৌলতে বিভিন্ন নিগমের ডিপো ব্যবহারের ক্ষেত্রেও সমন্বয় তৈরির আশা দেখছেন পরিবহণ-কর্তাদের অনেকে। প্রসঙ্গত, সরকারি পরিবহণের আর্থিক স্বাস্থ্যোদ্ধারের লক্ষ্যে সম্প্রতি বিভিন্ন নিগমের জমি দীর্ঘমেয়াদি লিজে বাণিজ্যিক ব্যবহারের প্রক্রিয়া সরকার শুরু করেছে। এই মহলের মতে, সমন্বয় গড়ে উঠলে ওই প্রক্রিয়াতেও সাফল্য মিলতে বাধ্য।
তবে অভিন্ন পরিচালন সমিতি গঠনের ফলাফল সম্পর্কে কিছুটা সংশয়ে রয়েছেন পরিবহণ-কর্তাদের অপর অংশ। কী রকম?
এক কর্তার ব্যাখ্যা, “এক-একটা নিগমে কাজের ধরন এক-এক রকম। পুরোপুরি মিশে গেলে অন্য কথা। তা না-করে এ ভাবে উপরে-উপরে সমন্বয় তৈরির প্রয়াস কতটা সফল হবে, তা নিয়ে সন্দেহ থাকছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.