বনধেও ভরসা নিউমার্কেট
নধেও খোলা থাকে বনগাঁর নিউমার্কেট। এক কথায়, এটাই হল বাজারের বিশেষত্ব।
যশোহর রোড বা ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে প্রায় ১২ বিঘা জমির উপরে গড়ে উঠেছে বনগাঁ শহরের নিউমার্কেট। সব্জি, মাছ, চাল, কাপড় বা মাংস— কী পাওয়া যায় না এখানে! বনগাঁ শহর ও সংলগ্ন এলাকার মানুষের দৈনন্দিন কেনাকাটার প্রধান ভরসা এই বাজার। পরিকাঠামোর দিক থেকেও বেশ এগিয়ে। নতুন শৌচাগার হয়েছে। তবে সাইকেল বা মোটরবাইক রাখার স্ট্যান্ড নেই বলে কিছুটা ক্ষোভ আছে ক্রেতা-বিক্রেতা দু’পক্ষেরই।
ব্যবসায়ী সমিতি সূত্রে জানা গেল, বছর কুড়ি আগে বাজারটি দেখভালের দায়িত্ব নেয় পুরসভা। ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক বিশ্বজিৎ বসু বলেন, “তেরো বছর আগে একবার রাজনৈতিক পার্টির ডাকা বন্ধের দিন দোকানপাট ভাঙচুর হয়েছিল। তখন থেকেই আমরা সিদ্ধান্ত নিই, যে কোনও বনধেই বাজার খোলা রাখা হবে। শুধু ব্যবসায়ীদের নিজেদের প্রয়োজনে বা কেউ মারা গেলে বন্ধ থাকবে বাজার।” এখনও পর্যন্ত সেই ধারাই বজায় আছে। আর তাতেই যেন বনগাঁর মানুষের নির্ভরতার জায়গা হয়ে উঠেছে নিউমার্কেট।
চলছে কেনাকাটা। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।
স্থানীয় আমলাপাড়ার বাসিন্দা রামপদ মণ্ডল ১৯৯০ সাল থেকে এখানে বাজার-দোকান করেন। তিনি বলেন, “সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত খোলা থাকে বাজার। সেটাই একটা বড় সুবিধা। বিভিন্ন ধরনের মাছ পাওয়া যায়। অন্য বাজারের থেকে দামও তুলনামূলক ভাবে কম। তবে শৌচাগারটি একটু পরিষ্কার রাখলে ভাল হয়।” রামনগর রোডের বাসিন্দা সঞ্জীব বিশ্বাস নামে এক ক্রেতা বললেন, “কুড়ি বছর ধরে এখান থেকে বাজার করছি। দেখে শুনে জিনিস কেনা যায়। বিক্রেতাদের ব্যবহারও ভাল। বৃষ্টিতেও বাজার খোলা থাকে।” বাজারে মুরগির মাংসের দোকান রয়েছে বিষ্ণু মণ্ডলের। চার বছর ধরে ব্যবসা করছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, “এখানে খদ্দের বেশি। আবার দামও কম। টাটকা জিনিসের মান নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। লোক ঠকালে বিক্রেতাদের শাস্তির ব্যবস্থাও রয়েছে। ক্রেতা বা বিক্রেতা উভয়েই যাতে কোনও সমস্যায় না পড়েন, তা দেখার জন্য বাজার সমিতি সক্রিয়।”
বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যান জ্যোৎস্না আঢ্য বলেন, “এখানে আমরা শৌচালয় করেছি। সব্জি বিক্রেতারা আগে মাটিতে বসতেন, তাদের জন্য পাকা চাতাল করা হয়েছে। রাস্তা, বিদ্যুৎ ও পানীয় জলের ব্যবস্থা করেছি। ভবিষ্যতে আরও উন্নয়ন করা হবে।” ব্যবসায়ী সমিতি ও ক্রেতা-বিক্রেতারা অবশ্য জানান, বর্ষায় বেশ অসুবিধায় পড়েন তাঁরা। নিকাশি ব্যবস্থাও ততটা ভাল না। অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থাও নেই। মঙ্গলবার এখানে কাপড়ের হাট বসে ও রবিবার ছুটির দিন ভিড় বাড়ে বাজারে। বিশ্বজিৎবাবু বলেন, “ক্রেতারা সাইকেল বা মোটরবাইক নিয়ে আসেন। কিন্তু তা রাখার কোনও ব্যবস্থা নেই। সাইকেলও চুরি হচ্ছে।” জ্যোৎস্নাদেবী জানান, “রাজ্যের কোথাও বাজারে সাইকেল রাখার শেড নেই। থাকলে আমরাও নিশ্চয়ই ব্যবস্থা করতে পারতাম।” বাজার ছাড়াও বিভিন্ন নাগরিক বিষয়েও উদ্যোগী হয়েছে নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ী সমিতি। বছরভর নানা অনুষ্ঠান করে থাকেন তাঁরা। রক্তদান শিবির থেকে শুরু করে কৃতী পড়ুয়া বা গুণিজনকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। বছরে এক বার যাত্রা প্রতিযোগিতা ও কালীপুজোয় বাজির প্রদর্শনীও বসে।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.