এ যেন পুরো দস্তুর হিন্দি সিনেমা। ছিনতাই করে পালাতে গিয়ে দেখা গেল রাস্তায় পড়ে রয়েছে গাছের গুঁড়ি। পাশ কাটাতে গিয়ে ইটের পাঁজায় গোঁত্তা খেয়ে গাড়ি গেল থেমে। ততক্ষণে গাড়ির আশপাশে জড়ো হয়ে গিয়েছে জনতা। প্রাণ বাঁচাতে গাড়ি থেকে বেরিয়েই গুলি-বোমা ছুড়তে শুরু করল ৮ দুষ্কৃতী। পাল্টা ইট-পাটকেল ছুড়ল জনতা। সেই ইট আবার তাদের দিকেই ফিরিয়ে দিল দুষ্কৃতীরা। বুকে আঘাত পেয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন এক ব্যবসায়ী।
ও দিকে তখন চলছে নৈশ ক্রিকেট। কয়েকটা গুলি ছুটে এল সে দিকে। খেলা বন্ধ করে শুরু হল হুড়োহুড়ি। বোমার টুকরো গায়ে লেগে জখম হলেন ৩ জন। পায়ে গুলি লেগে জখম হলেন আরও এক জন। তাঁদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বুধবার রাতে উত্তর ২৪ পরগনার শেষ পর্যন্ত দুষ্কৃতীদের তিন জনকে তাড়া করে ধরে ফেলে গ্রামের ছেলেরা। বাকিরা পালায়। |
পুলিশ জানায়, ধৃত চার দুষ্কৃতীরা হল নিউব্যারাকপুরের বাপ্পা বিশ্বাস, ঘোলা বোটঘর তালবান্দার বাবাই কর্মকার ও বারাসতের শিমূলতলার চিরঞ্জিৎ দাস। দেগঙ্গা থানা সূত্রে জানানো হয়েছে, জেরার মুখে দুষ্কৃতীরা স্বীকার করেছে, তারা ডাকাতির উদ্দেশ্যে এসেছিল। বড় দিনের জন্য রাস্তায় পুলিশ প্রহরা থাকায় গ্রামে ঢুকে ডাকাতির পরিকল্পনা করেছিল। ধৃতদের কাছ থেকে দু’টি রিভলবার ও চার রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাতে স্থানীয় চাকলা মোড় থেকে মোটরবাইকে করে বাড়ি ফিরছিলেন স্থানীয় ব্যবসায়ী ওবাইদুল হক। কাঁঠালপাড়ার কাছে একটি গাড়ি করে হাজির হয় দুষ্কৃতীরা। তারা ওবাইদুলের পকেট থেকে কয়েকশো টাকা ও মোবাইল ছিনতাই করে। বাধা দিতে গেলে তাঁকে আগ্নেয়াস্ত্রের বাঁট দিয়ে মেরে বাইক নিয়ে পালানার চেষ্টা করে দুষ্কৃতীরা। ওবাইদুল চিৎকারে মোটরবাইক ফেলে রেখে গাড়ি নিয়েই সুন্দরপুকুরের দিকে পালাতে যায় দুষ্কৃতীরা। গ্রামবাসীরা বিষয়টি বুঝতে পেরে চাকলা পুলিশ ফাঁড়ি ও সুন্দরপুকুর বাজারের ব্যবসায়ীদের সতর্ক করেন। দুষ্কৃতীদের রুখতে রাস্তার উপরে গাছের গুঁড়ি ফেলে রাখে জনতা। পাশ কাটিয়ে যেতে গেলে রাস্তায় একটি ইটের পাঁজায় ধাক্কা লেগে থেমে যায় গাড়ি।
প্রত্যক্ষদর্শী নুর ইসলাম, অহাব গাজিরা বলেন, যখনই খবর পাই গাড়ি নিয়ে এ দিকে আসছে ওরা, তখনই রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে দিই। দুষ্কৃতীরা প্রায় ৮ রাউন্ড গুলি ও ৫-৭টি বোমা ছোড়ে। তারপরেও আমাদের ছেলেরা যে ভাবে তাড়া করে ধরল ওদের, তাতে বাহবা দিতেই হচ্ছে।” |