ভর্তিতে অনিয়ম, শোরগোল কলেজিয়েট স্কুলে
ঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ উঠল মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলে (বালক)। প্রতিবাদে পরিচালন সমিতির সদস্যপদ থেকে পদত্যাগ করেছেন তিন সদস্য। তিন জনই শিক্ষক প্রতিনিধি। এই ঘটনায় শোরগোল পড়েছে মেদিনীপুর শহরে। পদত্যাগী তিন শিক্ষক প্রতিনিধির দাবি, নিয়ম বহির্ভূত ভাবে ১৪ জন ছাত্রকে ভর্তি করা হয়েছে। সুপারিশের ভিত্তিতে এই সংখ্যক ছাত্রকে ভর্তি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। ভর্তি নেওয়ার আগে পরিচালন সমিতির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনাও করা হয়নি। স্কুল কর্তৃপক্ষ অবশ্য ভর্তিতে অনিয়মের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, সমিতির বৈঠকে এ নিয়ে মৌখিক আলোচনাও হয়। সমিতির সিদ্ধান্ত মতো ১৪ জন ছাত্রকে ভর্তি নেওয়া হয়েছে।
গত ২০ ও ২১ ডিসেম্বর, দু’দিন ধরে ছাত্র ভর্তি চলে মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলে (বালক)। তারপরই বিষয়টি জানাজানি হয়। গত মঙ্গলবার ওই তিন শিক্ষক প্রতিনিধি পদত্যাগ করেন। যদিও পদত্যাগপত্র এখনও গৃহিত হয়নি। পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে আগামী ৩ জানুয়ারি স্কুলের পরিচালন সমিতির জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হওয়ার কথা। তিন সদস্যের পদত্যাগপত্র গৃহীত হল কি না, তা জানা যাবে ওই দিনই। বস্তুত, রাজ্য সরকারের নির্দেশ রয়েছে। লটারির মাধমেই ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি করতে হবে। আবার যে সব স্কুলে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিভাগ একই ক্যাম্পাসে রয়েছে, সেখানে চতুর্থ শ্রেণি উত্তীর্ণদের সরাসরি পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি নিতে হবে। এরপর যে সংখ্যক আসন খালি থাকবে, তার জন্য লটারি হবে। ফি বছর পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি নিয়ে সদর শহরে সমস্যা হয়। সমস্যার অন্যতম কারণ, মেদিনীপুর শহরে বহু বেসরকারি প্রাথমিক স্কুল রয়েছে। ফলে, শহরের স্কুলে পঞ্চম শ্রেণির আসন সংখ্যা যত রয়েছে, চতুর্থ শ্রেণি উত্তীর্ণের সংখ্যা তার থেকে বেশি হয়। এই পরিস্থিতিতে যারা সরাসরি কিংবা লটারির মাধ্যমে কোথাও ভর্তির সুযোগ পায় না, আবেদন করলে তাদের কোনও না কোনও স্কুলে ভর্তির ব্যবস্থা করে দেয় স্কুলশিক্ষা দফতর।
কলেজিয়েট স্কুলের (বালক) ঘটনাটি ঠিক কী? জানা গিয়েছে, আগে স্কুলে পঞ্চম শ্রেণির আসন সংখ্যা ছিল ১৫০। এ বার ১০টি বেড়ে ১৬০ হয়েছে। অন্য দিকে, এই স্কুলের ক্যাম্পাসে দু’টি প্রাথমিক স্কুল রয়েছে। এই দু’টি প্রাথমিক স্কুলে চতুর্থ শ্রেণির উত্তীর্ণ পড়ুয়ার সংখ্যা ১৭২। রাজ্য সরকারের নির্দেশ মেনে এদের সরাসরি পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও আরও ১৪ জন ছাত্রকে ভর্তি নেওয়া হয়েছে। সমস্যার সূত্রপাত এখান থেকেই।
পরিচালন সমিতির যে তিন জন শিক্ষক প্রতিনিধি পদত্যাগ করেছেন, তাঁরা হলেন দীপঙ্কর সন্নিগ্রাহী, গৌতমকুমার চক্রবর্তী এবং শান্তিকুমার সরকার। দীপঙ্করবাবু বলেন, “যে করেই হোক স্কুলের সুনাম রক্ষা করতে হবে। নিয়ম বহির্ভূত ভাবে ১৪ জন ছাত্র ভর্তি নেওয়া হয়েছে। আমরা তারই প্রতিবাদ করেছি।” তাঁর কথায়, “যদি অতিরিক্ত ছাত্র ভর্তি নেওয়া হবে, তাহলে লটারি হল না কেন? তা ছাড়া ওই ১৪ জনের ভর্তি নিয়ে সমিতির বৈঠকে আলোচনাও হয়নি।”
স্কুল কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, বৈধ ভাবেই ১৪ জন ছাত্র ভর্তি হয়েছে। কর্তৃপক্ষের যুক্তি, রাজ্য সরকারের নির্দেশ রয়েছে একই ক্যাম্পাসে প্রাথমিক বিভাগ থাকলে চতুর্থ শ্রেণি উত্তীর্ণদের সরাসরি পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি নিতে হবে। এরপর যত আসন ফাঁকা থাকবে, তার জন্য লটারি হবে। স্কুলে পঞ্চম শ্রেণির আসন ১৬০টি। সেখানে সরাসরি ভর্তি হয়েছে ১৭২ জন। অর্থাৎ, একটি আসনও খালি নেই। ফলে, লটারির প্রশ্ন আসে না। অন্য দিকে, পরিচালন সমিতির সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ১৪ জন ছাত্রকে ভর্তি নেওয়া হবে। স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদকের পদে রয়েছেন অগমপ্রসাদ রায়। সভাপতি তারাপদ পাল। কেন নিয়ম বহির্ভূত ভাবে ১৪ জন ছাত্রকে ভর্তি নেওয়া হল? স্কুলের প্রধান শিক্ষক দিলীপ দাসের বক্তব্য, “অবৈধ ভাবে কিছু হয়নি। পরিচালন সমিতির সিদ্ধান্ত মতোই ছাত্র ভর্তি হয়েছে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.