চন্দননগরে জুটমিল খোলার দাবিতে অবরোধ জি টি রোডে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • চন্দননগর |
তিন মাস ধরে বন্ধ চন্দননগরের গোন্দলপাড়া জুটমিল খোলা এবং তাঁদের মহল্লায় জল ও আলোর ব্যবস্থার দাবিতে এ বার পথ অবরোধ করলেন শ্রমিকেরা। বৃহস্পতিবার ১১টা থেকে প্রায় দেড় ঘণ্টা কয়েকশো শ্রমিক শহরের জ্যোতির মোড়ে জি টি রোড অবরোধ করেন। তাতে সামিল হয় মিলের সব ক’টি শ্রমিক সংগঠন। পুলিশ গিয়ে লাঠি উঁচিয়ে অবরোধকারীদের সরিয়ে দেয়।
অবরোধের পরে শ্রমিকেরা মিছিল করে মহকুমাশাসকের দফতরে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। আইএনটিটিইউসি, আইএনটিইউসি, সিটু-সহ সব শ্রমিক সংগঠনগুলির প্রতিনিধিরা মহকুমাশাসকের সঙ্গে দেখা করে সমস্যা মেটানোর দাবি তোলেন। চন্দননগরের মহকুমাশাসক বিশ্বনাথ বলেন, “মিল চালুর ব্যাপারে আমরা অনেকবার মিল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেছি। মিল চালুর ব্যাপারে প্রশাসন যথাসম্ভব সাহায্য করবে। কিন্তু মিল কর্তৃপক্ষের কোনও উৎসাহ দেখা যাচ্ছে না। ” |
মহকুমার ডেপুটি শ্রম কমিশনার তীর্থঙ্কর সেনগুপ্ত বলেন, “মিলটি চালুর জন্য শ্রম দফতরের পক্ষ থেকে শ্রমিক সংগঠন ও মিল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে গত ২৩ ডিসেম্বর কলকাতায় একটি বৈঠক হয়েছে। কর্তৃপক্ষের থেকে কোনও সদুত্তর মেলেনি। তবে, মিল কর্তৃপক্ষ শ্রমিক সংগঠনগুলির সঙ্গে ফের ১ জানুয়ারি বৈঠক করবে বলে জানা গিয়েছে।” এ দিনও মিল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।
শ্রমিক অসন্তোষকে কারণ হিসেবে দেখিয়ে গত ২৭ সেপ্টেম্বর ওই মিলে ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’-এর নোটিস ঝুলিয়ে দেন কর্তৃপক্ষ। সমস্যায় পড়েন প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমিক। ১৭ ডিসেম্বর রাত থেকে শ্রমিক মহল্লায় বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যুৎ ও জল সরবরাহ। কারখানা কর্তৃপক্ষই ওই দুই পরিষেবা বন্ধ করে দেন বলে অভিযোগ।
দিন কয়েক আগে এর প্রতিবাদে অবরোধ এবং মহকুমাশাসকের দফতরের সামনে অবস্থান করেছিলেন শ্রমিকেরা। বৃহস্পতিবার ফের রাস্তা অবরোধ করা হয়। এর জেরে জি টি রোডে ব্যাপক যানজট হয়। বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রথম দফায় অবরোধ তুলতে ব্যর্থ হয়। পরে লাঠি উঁচিয়ে অবরোধকারীদের হটায়।
মিলের ‘স্প্রিং’ বিভাগের কর্মী ছোটুলাল চৌধুরী বলেন, “২০ বছর ধরে মিলে কাজ করছি। বর্তমান কর্তৃপক্ষ নিজেদের খেয়ালখুশি মতো মিল চালাচ্ছিলেন। মিথ্যা অজুহাতে মিল বন্ধ করা হয়েছে। মহল্লায় জল ও আলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।” একই রকম ক্ষোভ অন্যদেরও। কর্তৃপক্ষ মিল খোলা নিয়ে তাঁদের কোনও কথা শুনতে নারাজ বলে অভিযোগ তোলেন মিলের সিটু সমর্থিত শ্রমিক সংগঠনের সম্পাদক শিবপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়। আইএনটিটিইউসি সমর্থিত সংগঠনের পক্ষে উমেশ ঠাকুরের অভিযোগ, “কর্তৃপক্ষ খামখেয়ালি আচরণ করছেন। বারবারই বৈঠক হচ্ছে। কিন্তু কিছু লাভ হচ্ছে না।” |