|
|
|
|
জঙ্গির খোঁজে হেনস্থা জম্মুর ক্রিকেটারদের
সংবাদ সংস্থা • জম্মু
২৬ ডিসেম্বর |
পুলিশের সন্দেহের তির এ বার রাজ্যের খেলোয়ারদের দিকেও। এর আগে বেশ কয়েক বার সাধারণ মানুষকে জঙ্গি সন্দেহে জেরা করে বা আটক করে হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে জম্মু ও কাশ্মীরের পুলিশের বিরুদ্ধে। এ বার নিজের রাজ্যের ক্রিকেট দলের সদস্যদের উপরেই রাতবিরেতে পুলিশি হেনস্থার অভিযোগ উঠল।
ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার রাত সওয়া একটা নাগাদ। বুধবার হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে রঞ্জি ট্রফির শেষ ম্যাচের আগে জম্মুর হোটেল স্যাভয়ে উঠেছিল রাজ্যের ক্রিকেট দল। দলের তরফে জানানো হয়েছে, ওই সময়ে হোটেলে অন্য কোনও অতিথি ছিলেন না বলে খেলোয়াররা কেউই ঘরের দরজা লক করেননি। এক জন ক্রিকেটারের কথায়, “হঠাৎ ঘুম ভেঙে দেখি ঘরের মধ্যে আমাদের ঘিরে দাঁড়িয়ে সশস্ত্র পুলিশ।” এই দৃশ্যে অনেকেই হকচকিয়ে যান।
পুলিশ তাঁদের জানায়, এক জঙ্গির খোঁজে তারা হোটেলে এসেছে। এটা নিয়মমাফিক তল্লাশি। টানা কয়েক ঘণ্টা পুলিশের জেরার মুখে ক্রিকেটারদের মধ্যে কয়েক জন বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন। বুধবার খেলা শুরুর আগে দলের অল রাউন্ডার সাইমুল্লা বেগ তাঁর ফেসবুক পেজে জানান, ম্যাচের আগে মাঝ রাত্তিরে পুলিশি হেনস্থার জেরে তাঁরা আর দু’চোখের পাতা এক করতে পারেননি। তাঁর মন্তব্য, “সারা রাত আর ঘুম হয়নি। ঘুমের মধ্যে আমাদের ঘিরে ফেলেছিল সশস্ত্র পুলিশ। ঘুম ভাঙিয়ে জেরা শুরু। ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তখন।”
পুলিশের ওই আচরণ কি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নাকি নিয়মমাফিক জিজ্ঞাসাবাদ, তা স্পষ্ট নয় বলে দাবি ওই ক্রিকেটারের। সাইমুল্লা লিখেছেন,“যা-ই হোক না কেন, এটা জাতীয় সম্মানের প্রশ্ন। এক দল ছেলেকে ঘুমের মধ্যে এসে ওই ভাবে হেনস্থা করা! যারা পরের দিন একটা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ খেলবে। জম্মু-কাশ্মীরের ক্রিকেট ইতিহাসে যেটা সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। ভয় হচ্ছিল আমরা হেরে না যাই। আমাদের মানসিক যা অবস্থা, তাতে এমনটা হতেই পারে।” পরে অবশ্য হায়দরাবাদের সঙ্গে জম্মুর ওই ম্যাচটি ড্র হয়।
জম্মু ও কাশ্মীর ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন পুলিশের এই আচরণের নিন্দা করেছে। সংস্থার তরফে মনজুর ওয়াজির বলেছেন, “পুলিশ বলছে রুটিন তল্লাশি। এ নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না। কিন্তু মাঝ রাত্তিরে এসে রুটিন তল্লাশি? সেটা তো হেনস্থারই সমান। যদি রুটিন তল্লাশিই হবে, তা হলে পুলিশ আরও আগেই আসতে পারত।” তিনিও জানিয়েছেন, “গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে খেলোয়াররা এমনিতেই মানসিক চাপের মধ্যে থাকে। তার মধ্যে এই সব। বিষয়টা নিয়ে বেশি জলঘোলা করতে চাইনি কারণ আমরা চেয়েছিলাম ছেলেরা খেলায় মন দিক।”
তবে জম্মু পুলিশের আইজি রাজেশ কুমার জানিয়েছেন, ওই এলাকায় জঙ্গি লুকিয়ে থাকার খবর পেয়ে পুলিশ শুধু খেলোয়ারদের হোটেলে নয়, সেখানকার অন্য সব হোটেলেই তল্লাশির জন্য ঢুকেছিল। তাঁর কথায়, “জম্মুর বেশ কয়েকটি হোটেলে আমরা রুটিন তল্লাশি চালাই। কিন্তু ওই হোটেলে রঞ্জি দল রয়েছে, এমন কোনও তথ্য আমাদের কাছে ছিল না। পুলিশ তাঁদের ঘরে ঢুকলেও জানত না, ওই ছেলেরা রঞ্জি দলের সদস্য। তাই জেরা করেছে। ওদের হেনস্থা করার কোনও উদ্দেশ্য ছিল না পুলিশের।” |
|
|
|
|
|