সেচখালে জল না থাকায় কয়েক বছর ধরে বোরো চাষ করতে পারছেন না চাষিরা, এমনই অভিযোগ উঠেছে কাঁকসার বেশ কয়েকটি গ্রামে। চাষিদের দাবি, টানা পাঁচ বছর ধরে চাষের জল পাচ্ছেন না তাঁরা। এ বছর তাই সেচ দফতরের কাছে জলের বন্দোবস্তো করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
বেশ কয়েক বছর আগেই কাঁকসার জঙ্গলমহল এলাকায় চাষের জলের সমস্যা মেটানোর জন্য একটি ব্রাঞ্চ ক্যানেল নির্মাণ করে সেচ দফতর। নাম দেওয়া হয় ডিবিসি। কাঁকসার বিস্তীর্ণ অঞ্চল ও আউশগ্রামের থানার বিস্তীর্ণ এলাকায় ওই সেচখালের মাধ্যমে জল সরবরাহ করা হয়। কিন্তু গত পাঁচ বছর ধরে ওই সেচখাল থেকে বোরো চাষের জল পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ চাষিদের। কাঁকসার ত্রিলোকচন্দ্রপুরের গুরুদাস মণ্ডল জানান, মূল ক্যানেলের ২৬৮ চেন পর্যন্ত জল দেওয়া হলে আশপাশের প্রায় দশ থেকে বারোটি মৌজায় বোরো ধানের চাষ করা যাবে। তিনি আরও জানান, এখান থেকে দোমড়া, সুন্দিয়ারা, ত্রিলোকচন্দ্রপুর, ধোবারু, গাঁড়াদহ প্রভৃতি গ্রামেও চাষের কাজের জল সরবরাহ করা হয়। বোরো চাষের জন্য জল না মেলায় ওই সব এলাকাতেও বোরো ধানের চাষ সম্ভব হচ্ছে না বলে তাঁর দাবি। গুরুদাসবাবুর অভিযোগ, এলাকার চাষিরা জানতে পারেন, এ বছর ওই সেচখালে জল দেওয়া হবে। সেই মতো জমিতে বীজও ফেলেন তাঁরা। কিন্তু পরে জানা যায়, এ বছরও জল দেওয়া হবে না। যে সব চাষি জল পাওয়ার আশায় জমিতে বোরো ধানের বীজ ছড়িয়েছিলেন, তাঁদের এখন মাথায় হাত। গুরুদাসবাবু বলেন, “অনেক টাকা খরচ করে আমরা জমিতে বীজ ছড়িয়ে ছিলাম। এখন যদি জল দেওয়া না হয় তাহলে মাঠে মারা পড়ব।”
দোমড়া গ্রামের সন্ন্যাসী মণ্ডল জানান, এই সেচখালের উপরে নির্ভর করে কয়েক হাজার একর জমিতে ধান চাষ হয়। অথচ, সেখানেই গত পাঁচ বছর ধরে বোরো চাষ না হওয়ায় এলাকার অর্থনৈতিক অবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ছে বলে তাঁর দাবি। এলাকায় যাদের নিজস্ব সাবমার্সিবল পাম্প আছে শুধু তাঁরাই বোরো ধান চাষ করতে পারছেন বলে জানান গ্রামবাসীরা। ত্রিলোকচন্দ্রপুরের বাসিন্দা রাসবিহারী পাল জানান, বোরো ধান চাষে জল দেওয়ার দাবিতে তাঁরা ২০ ডিসেম্বর কাঁকসার বিডিও এবং পঞ্চায়েত সমিতির সেচ ও স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষের কাছে এ বিষয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়ে আবেদন করেছেন। কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি, সেচ ও সমবায় স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ সরিফ মণ্ডলের আশ্বাস, এ বিষয়ে সেচ দফতরের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা হবে। |