বড়দিনের রাতে মত্ত আচরণ, বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানো, ইভটিজিংয়ের চেষ্টা-সহ বিভিন্ন অভিযোগ সিটি সেন্টার এলাকা থেকে মোট ৫২ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। তবে বড় কোনও অশান্তির ঘটনা ঘটেনি। বর্ষশেষের রাত নির্বিঘ্নে উতরোতে বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কমিশনারেটের এডিসিপি (পূর্ব) সুনীল যাদব। তিনি বলেন, “সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছে।”
পুলিশ জানায়, এ বার বড়দিনের বিকেল থেকে সিটি সেন্টারের শপিং মলগুলিতে ছিল রীতিমতো জনসমাগম। অন্য বারের মতো পার্কে যাওয়ার ভিড় তো ছিলই। কিন্তু তার থেকেও এ বার বেশি ভিড় লক্ষ করা গিয়েছে শপিং মলগুলিতে। পুলিশ জানায়, বড়দিনে মলগুলির মাল্টিপ্লেক্সে ‘ধুম থ্রি’ এবং ‘চাঁদের পাহাড়’ সিনেমা দু’টি দেখার জন্য আগে থেকে আগ্রহীরা টিকিট কেটে রেখেছিলেন। সব শো ছিল হাউসফুল। বিশেষ করে সন্ধ্যার পরে সিটি সেন্টার চত্বরে ভিড় বেড়ে গিয়েছিল এক ধাক্কায় অনেকখানি। ফলে, দুর্গাপুর শহরে যে ছবি বিরল, সেই যানজটও দেখা গিয়েছে। ক্ষুদিরাম সরণির মোড়ে দাঁড়িয়ে পড়ে বহু গাড়ি। পুলিশ আগে থেকে আঁচ করতে পারেনি, এমন হতে পারে। পরে পুলিশ গেলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে অনেকটা সময় লেগেছে। |
শপিংমলের সামনে লোকারণ্য। —নিজস্ব চিত্র। |
বুধবার রাতে মত্ত আচরণ, মহিলাদের দিকে অশালীন ইঙ্গিত, বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে অন্যদের বিরক্ত করার মতো ঘটনা রুখতে আগে থেকেই সিটি সেন্টারের বিভিন্ন মোড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এছাড়া ‘ফ্লাইং স্কোয়াড’ও ছিল। সব মিলিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত মোট ৫২ জনকে গ্রেফতার করে সিটি সেন্টার ফাঁড়ি। পরে তাদেরা জামিনে মুক্তি পায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বড়দিনের থেকেও বর্ষশেষের রাতে বেশি মানুষজনকে রাস্তায়বেরোতে দেখা যায়। সে দিন সিটি সেন্টারের নানা হোটেলে বর্ষশেষের পার্টির আয়োজন হয়। ফলে, শুধু দুর্গাপুর নয়, বাইরে থেকেও মানুষজন আসেন। সেই রাতে যাতে কোনও রকম গোলমাল না হয়, সে জন্য আগে থেকে বেশ কিছু পদক্ষেপের পরিকল্পনা রাখা হচ্ছে বলে পুলিশ জানায়।
এডিসিপি (পূর্ব) সুনীল যাদব জানান, বড়দিনের দুপুর থেকে অতিরিক্ত ১০টি মোবাইল মোটরবাইক চালু করা হয়েছে। সেগুলি সিটি সেন্টার এবং বেনাচিতি এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে সব সময়। বর্ষশেষের রাতের জন্য বাইরে থেকে পুলিশ বাহিনী আনা হচ্ছে। সংবেদনশীল এলাকাগুলিতে তাদের মোতায়েন করা হবে। এ ছাড়া, মহিলা সিভিক পুলিশকর্মীদেরও বিশেষ ভাবে ব্যবহার করা হবে। এডিসিপি (পূর্ব) জানান, সিটি সেন্টার এলাকায় ৬ জন এবং বেনাচিতি এলাকায় ৪ জন মহিলা সিভিক পুলিশকর্মী সাধারণ পোশাকে থাকবেন। সঙ্গে থাকবে ছদ্মবেশী ‘ফ্লাইং স্কোয়াড’। কেউ কোনও রকম বিশৃঙ্খল আচরণ করলেই এই মহিলা সিভিক পুলিশকর্মীরা ‘ফ্লাইং স্কোয়াড’কে খবর পাঠাবেন। পুলিশ উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে। এডিসিপি (পূর্ব) বলেন, “বড়দিনের রাতের মতোই বষর্শেষের রাতও যাতে শহরবাসীর নির্বিঘ্নে কাটে, তেমন ব্যবস্থা করা হয়েছে।” তিনি আরও জানান, অপরাধ করে যাতে কেউ চম্পট দিতে না পারে, সে জন্য সিটি সেন্টার এবং বেনাচিতি এলাকার শপিংমল-সহ নানা জায়গায় যে সমস্ত সিসিটিভি চালু আছে, সেগুলিরও সাহায্য নিচ্ছে পুলিশ। |