শুধুই চাপানউতোর, ঘাস চিবিয়েই
বেঁচে রয়েছে ফরাক্কার চিতল-কুল
ছর কয়েক আগেই নির্দেশ পাঠিয়ে সেন্ট্রাল জু অথরিটি স্পষ্ট করে দিয়েছিল রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে থাকা ‘মিনি-জু’ বা ছোট মাপের চিড়িয়াখানাগুলিকে গুটিয়ে নিতে হবে। সেই তালিকায় ছিল মুর্শিদাবাদের ফরাক্কার ডিয়ার পার্ক।
কিন্তু সে নির্দেশ নিয়ে তেমন মাথায় ঘামায়নি রাজ্য চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ (স্টেট জু অথরিটি)। এ ব্যাপারে বন দফতরকেও জানানো হয়নি কিছুই। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলতে থাকা সেই চিড়িয়াখানা বা পার্কগুলির মধ্যে, ডজন খানেক চিতল হরিণের ঠিকানা ফরাক্কার ডিয়ার পার্কটির অবস্থা শোচনীয়। কিছু দিন ধরে খোলা এনক্লোজারে সামান্য লতা-পাতা, ঘাস ছাড়া তাদের তেমন খাবার জুটছে না। এ ব্যাপারে স্টেট জু অখরিটির তেমন কোনও হেলদোল নেই। পার্কটি সরাসরি বন দফতরের এক্তিয়ারে পড়ে না বলেও তাদেরও তেমন কোনও উদ্যোগ নেই।
বাগানের দায়িত্বে থাকা পার্ক ম্যানেজার ও কর্মীরা জানিয়েছেন, হরিণগুলিকে রাজ্যের কোনও অভয়ারণ্যে ছাড়া হবে না তাদের পাঠিয়ে দেওয়া হবে কলকাতার চিড়িয়াখানায়, সে নিয়ে বার বার জানতে চাওয়া হলেও এ ব্যাপারে বন দফতর বা জু অখরিটির তরফে কোনও উত্তর মেলেনি।
যে কয়েকটি বেঁচে রয়েছে। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়।
বন দফতরের রঘুনাথগঞ্জের রেঞ্জ অফিসার, প্রদীপ ঘোষ বলেন, “ওই পার্কের জন্য নির্দিষ্ট কোনও বরাদ্দ না থাকায় হরিণগুলিকে পর্যাপ্ত খাবার দেওয়া যাচ্ছে না। আমাদের হাত-পা বাঁধা। বনের ঘাস পাতা খেয়েই কোনওক্রমে বেঁচে রয়েছে ওরা।’’ এ ব্যাপারে বন দফতরের এক কর্তাও বলেন, “পার্কটি যে এই অবস্থায় রয়েছে তা আমাদের জানানোও হয়নি। দেখছি কী করা যায়।”
রাজ্যের এই ছোট মাপের চিড়িয়াখানা ও পার্কগুলি সরাসরি দিল্লির সেন্ট্রাল জু অথরিটির অধীনে থাকলেও পার্কের দেখভালের দায়িত্বে থাকেন ওই কেন্দ্রীয় সংস্থার স্থানায় শাখা। তবে পার্কের পশুদের কোথায় পাঠানো হবে নাকি ছেড়ে দেওয়া হবে জঙ্গলে, সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ওই স্টেট জু অথরিটিকর কর্তারাই। তবে সে ব্যাপারে বন দফতরের সঙ্গে পরামর্শ করেই তাঁণদের কাজ করার কথা। বন দফতরের এক শীষর্ কর্তা বলেন, “এ ব্যাপারে আমাদের সঙ্গে পরামর্শ করার প্রয়োজনই মনে করে না ওরা।”
শান্তিনিকেতনের ডিয়ার পার্ক থেকে ১১টি চিতল হরিণ নিয়ে এসে ২০০৩ সালে ওই পার্তটি গনা হয়েছিল। গত কয়েক বছরে তাদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৩টিতে। পরবর্তীকালে তাদের কয়েকটিকে মহানন্দা জাতীয় উদ্যানে পাঠানোর পরে এখন রয়েছে বারোটি হরিণ। মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদ ২০০৬ সাল পর্যন্ত পার্কের পশুদের খাবারের জোগান দিত। আপাতত তাও বন্ধ। স্থানীয় বিডিও-র উদ্যোগে সামান্য খাবারেই আপাতত তাদের দিন গুজরান। পার্কের মধ্যেই দু’টি জলাশয় ছিল। জঙ্গল ও আগাছায় ঢেকে গিয়ে সেখানেও আর জল নেই।
ফরাক্কা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ শিল্প শহরের সৌন্দর্যায়নের জন্য ১৯৮২ সালে ফিডার ক্যানেলের গঙ্গার পাড়ে ১৫ হেক্টর জমিতে এই বনভূমি তৈরি করে। ২০০৩ সালে ওই বনভূমিতে তৎকালীন সাংসদ আবুল হাসনাত খানের সাংসদ তহবিলের টাকায় জেলা পরিষদ হরিণ সংরক্ষণ ও হরিণ গবেষণা কেন্দ্র তৈরির প্রস্তাব দিলে ফরাক্কা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ তাতে সম্মতি দেন। এরপর থেকে তার দায়িত্ব বর্তায় স্টেট জু অথরিটির উপরে। বাগানে বেশ কিছু শিশু, মেহগিনি, শাল গাছ রয়েছে। সেগুলিও দুষ্কৃতীদের হাতে কাটা পড়েছে বলে অভিযোগ।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.