দীর্ঘ দিনের দাবি মেনে কোচবিহার শহরে সিটি অটো চালাতে উদ্যোগী জেলা প্রশাসন। প্রশাসনের তরফে আঞ্চলিক পরিবহণ দফতর, পুরসভার কর্তাদের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ইংরেজি নতুন বছরের মধ্যেই শহরের বাছাই ১০ রুটে অন্তত ৫০টি সিটি অটো চালুর ছাড়পত্র দেওয়া হতে পারে। জেলাশাসক মোহন গাঁধী এই দিন বলেন, “সিটি অটো চালুর বিষয়ে বিভিন্ন মহলের দাবির বিষয়টি জানি। জানুয়ারি মাসে আগ্রহীদের আবেদন নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে। পুর কর্তৃপক্ষের মত নিয়ে সব কিছু চূড়ান্ত করা হবে।” চেয়ারম্যান বীরেন কুণ্ডু বলেন, “সিটি অটো চালুর পক্ষে আমরাও। প্রশাসনের চিঠি এলে আমাদের যা করণীয় তা করা হবে।”
শহরের বাসিন্দারা জানান, শহরে দু’টি সিটি বাস চললেও যাতায়াতের মূল ভরসা বলতে রিকশা। নিউটাউন থেকে নতুন বাজার, রেলগুমটি থেকে রাসমেলা মাঠ, স্টেশন মোড় থেকে গুঞ্জবাড়ি মোড়, মরাপোড়া চৌপথি থেকে পুলিশ লাইন চৌপথির মতো এলাকাগুলিতে দিনের বেলায় রিকশা মিললেও সন্ধের পরে রিকশা কমে যায়। ফলে বাসিন্দাদের প্রায়ই দুর্ভোগে পড়তে হয়। যোগাযোগের বিকল্প হিসাবে সিটি অটো চালুর দাবি তুলে বহু দিন ধরেই সরব ছিলেন একাধিক নাগরিক সংগঠনের সদস্যরা। নাগরিক অধিকার সুরক্ষা মঞ্চের সভাপতি রাজু রায় বলেন, “একে মাত্র দুটি সিটি বাস চলছে, তাও আধ ঘণ্টা অন্তর। শহরের বহু গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ওই বাসের পরিষেবা পাওয়া যায় না। তাই কম সময়ে শহরের মধ্যে যাতায়াতের জন্য সিটি অটো চালু জরুরি। প্রশাসন উদ্যোগী হওয়ায় আমরা আশাবাদী।”
বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রতিদিনই নানা কাজে জেলার বিভিন্ন প্রান্তের বাসিন্দাদের শহরে আসতে হয়। আগে সুনীতি রোডে দিনহাটা, তুফানগঞ্জ, মাথাভাঙা, মেখলিগঞ্জ রুটের বাস যেত। এতে পুলিশ লাইন হাসপাতাল মোড়, হরিশ পাল চৌপথি, কাছারি মোড়, রাজবাড়ি হয়ে বাস স্ট্যান্ড কিংবা টার্মিনাসে যেত। যানজটের চাপ কমাতে রেলগুমটি হয়ে সব যাত্রিবাহী বাস শহরে ঢোকার ব্যবস্থা চালু করায় দুর্ভোগ বেড়েছে বলে অভিযোগ। সিটি অটো চালু হলে ওই দুর্ভোগ কমবে বলে স্থানীয়দের দাবি।
পরিবেশপ্রেমীর একাংশ অবশ্য সিটি অটো চালুর পরিকল্পনায় দূষণ বেড়ে যাবার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। প্রশাসনের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, প্রয়োজনীয় সবরকম ছাড়পত্র নিয়েই সিটি অটো চালানো নিশ্চিত করতে নজরদারির ব্যবস্থা রাখা হবে। জেলার আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক তাপস বিশ্বাস বলেছেন, “সব নিয়ম মেনে যাতে সিটি অটোগুলি চালু করা যায় তার উপরে নজর রাখা হবে।” |