কাল রদবদল মমতা মন্ত্রিসভায়, জল্পনা তুঙ্গে
রাজ্য মন্ত্রিসভায় রদবদল হতে চলেছে আগামী কাল, বৃহস্পতিবার। দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন মন্ত্রিসভার নতুন সদস্যদের শপথবাক্য পাঠ করাবেন।
নবান্নের একটি সূত্রের খবর, সব মিলিয়ে প্রায় ২০টি দফতরে অদলবদল ঘটাতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দু’-তিন জন নতুন মন্ত্রীর শপথের পাশাপাশি দু’-এক জন মন্ত্রীর বাদ পড়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও অন্য একটি সূত্র জানাচ্ছে, মন্ত্রিসভায় এখন একটিমাত্র পদ খালি রয়েছে। শুধু সেই পদটিই পূরণ হতে পারে।
এর বাইরে বর্তমান কোনও মন্ত্রীকে বাদ দিয়ে নতুন কাউকে নেওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই।
প্রসঙ্গত, কালই রাজভবনে বেলা দু’টোয় গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (জিটিএ) চিফ এগ্জিকিউটিভ অফিসার হিসেবে বিমল গুরুঙ্গের শপথ নেওয়ার কথা।
চলতি আর্থিক বছরের প্রায় ৯ মাস পেরনোর পরে কাজকর্মের কী পরিস্থিতি তার খোঁজ নিতে গত ২০ ডিসেম্বর টাউন হলে মন্ত্রী ও আমলাদের সঙ্গে বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে রাজ্যের নিজস্ব উন্নয়নের টাকা ও কেন্দ্রীয় অনুদানের অর্থ কোন দফতর কেমন খরচ করতে পেরেছে সেই নিরিখে দফতরগুলির মূল্যায়ন করেন তিনি। কিছু দফতরকে ‘বেশ ভাল’, কিছু দফতরকে ‘ভাল’ এবং বাকি দফতরগুলিকে ‘ব্যর্থ’ বলে চিহ্নিত করা হয় সেই রিপোর্টে।
‘ব্যর্থ’ তালিকাভুক্ত দফতরগুলিতে কাজে গতি আনতে রদবদল হতে পারে, সরকারের অন্দরে এমন জল্পনা শুরু হয়েছিল তখন থেকেই। সেই জল্পনা সত্যি প্রমাণ করে ছ’দিনের মাথাতেই রদবদল হতে চলেছে। সে দিন মুখ্যমন্ত্রীর তির্যক মন্তব্যের সম্মুখীন হওয়া কারও কারও দফতর বদলালেও বদলাতে পারে বলে নবান্ন এবং তৃণমূল সূত্রের খবর। এমনও মনে করা হচ্ছে যে, এক বা একাধিক ওজনদার মন্ত্রীর হাতে থাকা দফতরের সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হতে পারে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর নিজস্ব ‘রিপোর্ট কার্ডে’ যে সব মন্ত্রী ভাল ফল করেছেন, তাঁরা আপাতত নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন বলেই মনে করছেন প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশ।
বাম আমলে মন্ত্রিসভায় রদবদল প্রায় বিরল ঘটনা হলেও গত আড়াই বছরে একাধিক বার রদবদল করেছেন মমতা। প্রশাসনিক এক কর্তার কথায়, “মাঝে মাঝে শুধু বদলের জন্যই মন্ত্রিসভায় বদল করা দরকার বলে জওহরলাল নেহরুকে পরামর্শ দিয়েছিলেন মাউন্টব্যাটেন। তাতে মন্ত্রীদের মনে আত্মতুষ্টি বাসা বাঁধে না। এ অনেকটা মাঝে মাঝে পুকুরের মাছ ধরে ফের ছেড়ে দেওয়ার মতো। তাতে মাছের বৃদ্ধি ভাল হয়।”
এ দিন এক সরকারি কর্তা বলেন, “পরের বিধানসভা ভোটের ঠিক আড়াই বছর বাকি। তার আগে হয়তো মন্ত্রিসভার প্রায় অর্ধেক মন্ত্রীর দফতর পাল্টে মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে দিতে চাইবেন, কাজ করলে পুরস্কার, আর না-করলে তিরস্কারের নীতিই হল তাঁর প্রশাসন পরিচালনার মূল ভিত্তি।”
তবে শুধু মন্ত্রীদের জড়তা কাটানোর জন্যই এ বারের রদবদল হচ্ছে বলে মনে করছে না তৃণমূল সূত্র। বলা হচ্ছে সামনেই লোকসভা ভোট। পশ্চিমাঞ্চল, বর্ধমান ও উত্তরবঙ্গের কয়েক জন মন্ত্রীকে লোকসভায় প্রার্থী করতে পারেন মমতা। সেই কারণে এখন থেকেই তাঁদের হয় মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে অথবা কম গুরুত্বপূর্ণ দফতরে পাঠিয়ে দলের কাজে লাগাতে পারেন মমতা।
এ দিকে চিকিৎসার জন্য সরকারি ছুটি নিয়ে আমেরিকা গিয়েছেন পূর্তমন্ত্রী সুদর্শন ঘোষদস্তিদার, যাঁর হাতে পরিবেশ দফতরেরও ভার। সরকারি সূত্রের খবর, এ বার সুদর্শনবাবুর দফতর বদল হতে পারে। পূর্তের দায়িত্ব মুখ্যমন্ত্রী নিজের হাতে রাখতে পারেন।
কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল যোগ দিয়ে মন্ত্রী হয়েছিলেন হুমায়ূন কবীর। কিন্তু রেজিনগরের উপনির্বাচনে হেরে মন্ত্রিত্ব ছাড়তে হয়েছে তাঁকে। মন্ত্রিসভায় এখন ওই একটি পদই খালি রয়েছে। (নিয়ম অনুযায়ী মন্ত্রীর সংখ্যা রাজ্যের মোট বিধায়ক সংখ্যার ১৫ শতাংশের বেশি হবে না) তৃণমূলের একটি সূত্রে মতে, ওই শূন্যস্থানে আসতে পারেন শ্যামপুকুরের বিধায়ক শশী পাঁজা। অন্য একটি সূত্র থেকে আবার বলা হচ্ছে, কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে আসা শান্তিপুরের পদত্যাগী বিধায়ক অজয় দে মন্ত্রী হতে পারেন। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে অজয়বাবুকে মঞ্জুষার চেয়ারম্যান করা হয়েছে। যদিও অজয়বাবু নিজে মঙ্গলবার জানিয়েছেন, রাজভবন থেকে এখনও ডাক পাননি।
সমাজবাদী পার্টি ছেড়ে সম্প্রতি তৃণমূলে আসা চাঁদ মহম্মদকেও সরকারি পদের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে বলে একটি সূত্রের খবর। তাঁকে মন্ত্রিসভায় নেওয়া হবে নাকি অন্য কোনও পদে বসানো হবে, তা নিয়ে চর্চা চলছে। মন্ত্রিসভা থেকে এক সংখ্যালঘু সদস্যকে বাদ দিয়ে তাঁর বদলে নদিয়ার এক সংখ্যালঘু বিধায়ককে আনার সম্ভাবনার কথাও বলছে প্রশাসনিক মহল।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.