শিষ্যের নাবালিকা মেয়েকে ফুঁসলে নিয়ে গিয়ে ন’মাস আটকে রেখে ধর্ষণ করার অভিযোগে গ্রেফতার হল গুরুদেব। মানবাজার থেকে ওই কিশোরীকে গত মার্চ মাসে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। ফোনের সূত্র ধরে সোমবার ভোরে উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জ থানার বাঁকড়াডগর গ্রামের আশ্রমে পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত গুরুদেব ৪৮ বছরের শিবদাস বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে। সেখান থেকেই উদ্ধার হয় মানবাজারের ১৬ বছরের ওই কিশোরী।
মঙ্গলবার ধৃতকে পুরুলিয়া আদালতে তোলা হলে ১৪ দিন জেলহাজত হয়। ওই কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষায় পুলিশ জানতে পারে, সে অন্তঃসত্ত্বা। তাকে একটি হোমে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীর কুমার বলেন, “ওদের সন্ধানে পুলিশ নানা জায়গায় তল্লাশি চালায়। কিন্তু শেষ মুহূর্তে পালাতে পারলেও এখানে পারেনি।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, নবম শ্রেণির ওই ছাত্রীর বাড়ির কাছে একটি আশ্রমে শিবদাস থাকত। ওই আশ্রমে কিশোরীর যাতায়াত ছিল। শিবদাস তাকে পড়া বুঝিয়ে দিত। পুলিশের দাবি, শিবদাস জেরায় তাদের জানিয়েছে, ওই কিশোরীর সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সর্ম্পক গড়ে ওঠে। মানবাজার থেকে তারা পালিয়ে প্রথমে জামসেদপুরে চলে যায়। সেখানে কিছুদিন কাটিয়ে তারা দেওঘরে গিয়ে গা ঢাকা দেয়। কিন্তু সেখানে পুলিশি তৎপরতা টের পেয়ে তারা সরে পড়েন। এখানে হিঙ্গলগঞ্জের আশ্রমের কয়েকজনের সঙ্গে তাঁদের পরিচয় হয়েছিল। পুলিশের নজর এড়িয়ে শিবদাস ও কিশোরীকে নিয়ে হিঙ্গলগঞ্জের আশ্রমে গিয়ে ওঠেন। বাঁকড়াডগরের আশ্রমে তারা প্রায় ছ’মাস ছিল। সেখানে শিবদাস গুরুদেব সেজে ওই কিশোরীকে গুরুমা সাজিয়ে রেখেছিল।
মেয়ের খোঁজ না পেয়ে প্রথমে ১১ মার্চ থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেছিলেন ওই কিশোরীর বাবা। পরে গুরুদেবের প্রতি সন্দেহ তৈরি হওয়ায় তিনি ধর্ষণ ও অপরহণের অভিযোগ দায়ের করেন। ওদের সন্ধান করতে পুলিশ শিবদাসের এক বন্ধুকে গ্রেফতার করেছিল। তিনি এখন জামিনে মুক্ত রয়েছেন। পুলিশ জানায়, মানবাজারের শ্রীরামপল্লিতে শিবদাসের স্ত্রী ও দুই ছেলে রয়েছে। পুলিশের দাবি, এর আগেও শিবদাস জামসেদপুরের এক মহিলার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিলেন। স্ত্রী-র পরিচয় দিয়ে তাকে মানবাজারের আশ্রমে রেখেছিলেন। পরে ওই মহিলা আশ্রম ছেড়ে চলে যান। কিশোরীর বাবা বলেন, “আমার মেয়ে শিবদাসকে জ্যাঠা বলে ডাকত। বিশ্বাস করে ওর কাছে মেয়েকে পড়তে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু গুরুদেব রূপে শিবদাস যে এমন সর্বনাশ করবে বুঝতে পারিনি।” |