জখম বুনো হাতির চিকিৎসার সময় কুনকি হাতির আচমকা হামলায় গুরুতর জখম হলেন এক বনকর্মী। মঙ্গলবার এই ঘটনা ঘটে শিলিগুড়ি সংলগ্ন সাত মাইল এলাকায়, মহানন্দা অভয়ারণ্যে। আহত বনকর্মীকে তড়িঘড়ি শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আহত বনকর্মীর নাম জনার্দন চৌধুরী। তিনি জলদাপাড়া অভয়ারণ্যে ফরেস্ট গার্ড হিসেবে নিযুক্ত রয়েছেন। এ দিন একটি জংলি হাতির বিশেষ চিকিৎসার জন্য একটি দলের সঙ্গে তিনি শিলিগুড়ি আসেন। দু’টি কুনকি হাতিকেও আনা হয়। মহানন্দা অভয়ারণ্যে হাতিটির চিকিৎসার সময়ই দুর্ঘটনাটি ঘটে।
মহানন্দা বন্যপ্রাণ-১ এর ডিএফও বাসব রাজ বলেন, “আক্রমণকারী হাতিটি একটি পুরুষ হাতি। কুনকিরা সাধারণত এরকম আচরণ করে না। কেন এমন করল তা বুঝতে পারছি না। আহত বনকর্মীর অবস্থা স্থিতিশীল।”
সুকনা বন্যপ্রাণ শাখার রেঞ্জার নিতাই রায় বলেন, “এ দিন একটি জংলি হাতির চিকিৎসার জন্য দু’টি কুনকিকে জলদাপাড়া থেকে আনা হয়েছিল। তার মধ্যেই কর্ণ নামের একটি পুরুষ হাতি হঠাৎই খেপে গিয়ে জনার্দনবাবুকে শুঁড়ে পেঁচিয়ে তুলে নিয়ে সামনের বাঁ পা দিয়ে লাথি মারে। তাতেই কোমর, ঘাড় ও পিঠে ব্যাপক চোট লাগে তাঁর।” |
কুনকি হাতির আক্রমণে জখম বনকর্মী। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক। |
বন বিভাগ সূত্রের খবর, মহানন্দা অভয়ারণ্য ও বৈকুণ্ঠপুর বনবিভাগের সেবক লাগোয়া এলাকায় একটি জংলি পুরুষ হাতি বেশ কয়েকদিন ধরে জখম অবস্থায় ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে খবর আসে বনকর্মীদের কাছে। বেশ কয়েকদিন ধরে খোঁজার পর ওই পুরুষ হাতিটিকে চিহ্নিত করা হয়। তার পিছনের বাঁ পায়ে একটি ক্ষত ছিল। যার জন্য তার চলাফেরায় অসুবিধা হচ্ছিল। মহানন্দা বা বৈকুণ্ঠপুর বনবিভাগের কাছে হাতির চিকিৎসার উপযুক্ত ব্যবস্থা না থাকায় জলদাপাড়া অভয়ারণ্য থেকে সাহায্য চাওয়া হয়। মঙ্গলবার সকালে একটি দল ও সঙ্গে দুটি কুনকি হাতি পাঠানো হয়।
২০ জনের একটি দল এসে চিকিৎসা শুরু করেন। বুনো হাতিটিকে ঘুম পাড়িয়ে অস্ত্রোপচার হচ্ছিল। সেই সময় হঠাৎ ‘কর্ণ’ খেপে ওঠে। সামনে থাকা জনার্দনবাবুকে শুঁড়ে পেঁচিয়ে তুলে নেয়। শূন্যে থাকা অবস্থায় তাঁকে পা দিয়ে লাথিও মারে। কয়েক ফুট দূরে ছিটকে পড়েন জনার্দনবাবু। তাঁর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চোট লাগে। বর্তমানে তিনি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পুরুষ বিভাগে চিকিৎসাধীন। |