|
|
|
|
ফের কপ্টার পরিষেবা চালু তাওয়াংয়ে
রাজীবাক্ষ রক্ষিত • গুয়াহাটি
২৪ ডিসেম্বর |
৩১ মাস পর, ফের গুয়াহাটি থেকে তাওয়াং পর্যন্ত ‘পবনহংস’ পরিষেবা চালু হল। ওই আকাশ-পথে যাত্রীদের নিয়ে উড়বে ‘ফ্লাইং কফিন’ হিসেবে চিহ্নিত এমআই ১৭২ হেলিকপ্টার।
২০১১ সালের ১৯ এপ্রিল ২৩ জন যাত্রী-সহ তাওয়াং হেলিপ্যাডের কাছে ভেঙে পড়েছিল পবনহংসের একই মডেলের হেলিকপ্টার। দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় পাইলট-সহ ১৯ জনের। সেই রেশ কাটতে না-কাটতেই ৩০ এপ্রিল তাওয়াং জেলার জং-এর কাছে মুখ্যমন্ত্রী দোর্জি খাণ্ডুর পবনহংস কপ্টার দুর্ঘটনার মুখে পড়ে। খাণ্ডু-সহ ৬ জন মারা যান। অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ওয়াইএসআর রেড্ডি নিহত হয়েছিলেন পবনহংসেরই একটি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায়। এ সব ছাড়া, সিরোহি-সহ কয়েকটি কপ্টার দুর্ঘটনার সঙ্গে পবনহংসের নাম জড়িয়ে যাওয়ায়, বায়ুসেনার মিগ ২১ যুদ্ধবিমানের মতো ওই সংস্থার হেলিকপ্টারের সঙ্গেও ‘ফ্লাইং কফিন’ তকমা লেগে যায়। একের পর এক দুর্ঘটনার জেরে, ২০১১ সালের ৫ মে থেকে অরুণাচলে হেলিকপ্টার পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। কয়েকদিনের মধ্যে গোটা উত্তর-পূর্বে পবনহংস পরিষেবা স্তব্ধ হয়ে যায়।
২০১১ সালের জুন মাসে অন্য একটি পরিবহণ সংস্থার ১৩-আসনের হেলিকপ্টার অরুণাচলের নাহারলাগান থেকে গুয়াহাটি পর্যন্ত চলাচল শুরু করে। ওই কপ্টারটি অধিকাংশ সময়ই ভিআইপিদের জন্য ভাড়া নেওয়া হয়। ২০১২ সালে বন্যা, ধসের জেরে দেশের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া রোয়িং, দাম্বুক, আনিনি ও পাসিঘাটের বাসিন্দাদের জন্য হেলিকপ্টার চালানো জরুরি হয়ে পড়েছিল। মেঘালয়ে গত বছর মে মাস থেকে পবনহংসের হেলিকপ্টার পরিষেবা ফের চালু করা হয়। সেখানে অপেক্ষাকৃত ছোট ‘ডফিন’ কপ্টার চালানো হচ্ছে। কিন্তু, তাওয়াং-এর মতো প্রত্যন্ত, পাহাড়ঘেরা এলাকায় যাত্রীবাহী হেলিকপ্টার পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দা এবং পর্যটকেরা সমস্যায় পড়েছিলেন।
রাজ্য সরকার বিভিন্ন শর্ত ও নির্ধারিত দর উল্লেখ করে টেন্ডার ছেড়েছিল। কিন্তু, সরকার নির্ধারিত শর্তে বেশিরভাগ সংস্থাই পরিষেবা দিতে রাজি না-হওয়ায়, শেষ পর্যন্ত চলতি বছর ১৫ জানুয়ারি পবনহংসের সঙ্গে নতুন চুক্তি করে অরুণাচল সরকার। ২৬ আসনের একটি নতুন এমআই ১৭২ চপার ১৮ জানুয়ারি নাহারলাগুন পৌঁছয়। নাহারলাগুন থেকে মোহনবাড়ির মধ্যে পরিষেবা শুরু হয়।
এর পরেও, তাওয়াংয়ের ভূ-প্রকৃতি ও খামখেয়ালি আবহাওয়ার মধ্যে এমআই ১৭২ চালানো হবে কি না, তা নিয়ে মতভেদ ছিল। শেষ পর্যন্ত, বড়দিনের আগেই গত কাল থেকে গুয়াহাটি-নাহারলাগান-তাওয়াং যাত্রীবাহী কপ্টার পরিষেবা চালু করে দেওয়া হল। ফলে দু’দিনের রাস্তা এ বার ফের ৪০ মিনিটেই পাড়ি দেওয়া যাবে।
তাওয়াং-এর ‘উগিয়েন সাংপো হেলিপ্যাড’-এ প্রথম উড়ানের চালক ও যাত্রীদের স্বাগত জানান জেলাশাসক অভিষেক দেব। তাওয়াং মঠের তরফে হেলিপ্যাডে বিশেষ পুজো ও প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। অসামারিক উড়ান বিভাগের পরিষদীয় সচিব তথা তাওয়াং-এর বিধায়ক জাম্বে তাশি বলেন, “গুয়াহাটি থেকে একসঙ্গে ১৫ জন যাত্রী তাওয়াং আসতে পারবেন। সোম ও শুক্রবার কপ্টার চলবে।” |
|
|
|
|
|