|
|
|
|
রাহুলের হাত শক্ত করতেই বদল জারি কংগ্রেসে
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি
২৪ ডিসেম্বর |
চার রাজ্যে ভোটের ফল তখনও ঘোষণা হয়নি। তার আগেই ঘরোয়া আলোচনায় কংগ্রেসের বর্ষীয়ানদের একাংশ বলতে শুরু করেছিলেন, ভোটে ধরাশায়ী হলে দলে রাহুল গাঁধীর নেতৃত্বই প্রশ্নের মুখে পড়বে। বর্ষীয়ানদের ব্রাত্য করে কংগ্রেসে যে পরিবর্তন শুরু করেছেন রাহুল, তাও ধাক্কা খাবে অচিরেই। অথচ ঠিক দু’সপ্তাহ পর, কংগ্রেসের অন্দরের ছবিটাই জানান দিচ্ছে, দলের ওই নেতাদের বাড়া ভাতে এক্কেবারে ছাই দিতে চাইছেন রাহুল গাঁধী এবং তাঁর টিম।
১৭ জানুয়ারি কংগ্রেসের অধিবেশন ডেকেছেন সনিয়া গাঁধী। তার আগে রাহুল এবং তাঁর টিম এখন ধারাবাহিক ভাবে এই বার্তা দিতে তৎপর যে নেতৃত্বের রাশ থাকছে তাঁরই হাতে। এমনকী প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হওয়ার চ্যালেঞ্জ নিতেও দ্বিধা নেই তাঁর। ১৭ জানুয়ারির আগে রাহুল শিবির এমন কিছু পদক্ষেপ করতে চায় যাতে তাঁর নাম ঘোষণার আবহ তৈরি হয়।
এই বিষয়টি মাথায় রেখেই বণিকসভা ফিকির সাধারণ সভায় গিয়ে আর্থিক নীতি সম্পর্কে তাঁর অবস্থান জানিয়েছেন রাহুল। বৃহস্পতিবার কংগ্রেস শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের দিল্লিতে বৈঠকে ডেকেছেন রাহুল গাঁধী। দলের তরফে যদিও বলা হচ্ছে, সামাজিক কর্মসূচি রূপায়ণের অগ্রগতি নিয়েই ওই বৈঠকে আলোচনা হবে। কিন্তু রাহুল ঘনিষ্ঠ নেতারা বলছেন, আসল উদ্দেশ্য হল, রাহুলের নেতৃত্ব নিয়ে বার্তা দেওয়া। এত দিন মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকে নেতৃত্ব দিতেন সনিয়া। এ বার তা দেবেন রাহুল। আগে বড়দিনের ছুটিতে দিন সাতেক প্রিয়ঙ্কা ও পরিবারের সঙ্গে কাটাতেন রাহুল। কিন্তু এ বার বদলাচ্ছে সেই রীতি।
কংগ্রেস সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রীদের ওই বৈঠকের পর নতুন বছরের গোড়ায় মূলত দুটি কর্মসূচি রয়েছে রাহুলের। এক, শরদ পওয়ার, লালু প্রসাদ, রাম বিলাস পাসোয়ান, ফারুক আবদুল্লার মতো শরিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করা। এই কাজটিও এত দিন করতেন সনিয়া ও তাঁর রাজনৈতিক সচিব আহমেদ পটেলের মতো নেতারা। তা ছাড়া মধ্যপ্রদেশ, হরিয়ানা এবং রাজস্থানে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদে নতুন মুখ তুলে আনবেন রাহুল। ভোট বিপর্যয়ের পর কংগ্রেসে পরিবর্তনের প্রক্রিয়া ধাক্কা খাবে- এমন ধারণা ভুল প্রমাণিত করতে চান তিনি। তাই জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, সচিন পায়লট, অশোক তাঁওয়ারের মতো তরুণ নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হবে প্রদেশ সভাপতি পদে।
এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের দুই বর্ষীয়ান নেতার মন্তব্যও তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। প্রথম জন হলেন, কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বর্ষীয়ান সদস্য জনার্দন দ্বিবেদী। কংগ্রেসের সহ-সভাপতি পদের দায়িত্ব নেওয়ার পর যাঁকে প্রধান মুখপাত্রের পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন রাহুল। সেই জনার্দনই আজ এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, “১৭ জানুয়ারি রাহুল গাঁধীর নাম প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হবে কিনা সেটা বড় বিষয় নয়। আসল কথা হল, রাহুল গাঁধীই কংগ্রেসের ভবিষ্যৎ নেতা।” আর আহমেদ পটেল বলেন, “কংগ্রেসকে শক্তিশালী করতে রাহুল চেষ্টা করছেন।”
রাহুল ঘনিষ্ঠ এক নেতার মতে, এ বার চূড়ান্ত ঘোষণার জন্যই ক্রমশ নিজেকে প্রস্তুত করছেন রাহুল। আর পিছনে ফিরে দেখার প্রশ্ন নেই। |
|
|
|
|
|