শিকে গেঁথে ঝোলানো লোভনীয় কাবাব। অর্ডার দিয়ে অপেক্ষার বালাই নেই। রাস্তায় চলার সময়ে অনায়াসে কিনে নিয়ে খেতে খেতে হাঁটা লাগানো যায়। বড়দিনের মরসুমে ভোজনরসিক বাঙালির রসনা তৃপ্ত করতে দুর্গাপুর শহরে বড় বড় রেস্তোঁরার পাশাপাশি কাবাব, পকোড়া, তন্দুরির নিয়ে পথের পাশে হাজির ছোট-বড় বহু স্টল।
বছরের শেষ ও নতুন বছরের শুরুর কয়েক দিন এখন বাঙালির অন্যতম প্রধান উৎসব মরসুম। সকাল সকাল বেরিয়ে চড়ুইভাতি, রকমারি অনুষ্ঠান, নানা পার্টির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলে পেট পুজো। দুর্গাপুর শহরের অসংখ্য রেস্তোঁরা এই সময়ে গমগম করে। তার সঙ্গেই ভিড় জমে চলন্ত ফুডস্টলগুলিতে। এ বারও সেই ছবিতে কোনও বদল নেই। ইতিমধ্যে সে সব জায়গায় ঢুঁ দিচ্ছেন শহরবাসী। |
সিটি সেন্টার এলাকায় রাস্তার পাশে একটি ফুডস্টল। —নিজস্ব চিত্র। |
ফুডস্টল ও রেস্তোঁরার মালিক-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শীতের বাজারে কাবাবের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। বছরের যে কোনও সময়েই জিভে জল আনে কাবাব। কিন্তু শীতে যেন তার স্বাদ আরও বেড়ে যায়। রেস্তোঁরার কর্মীরা জানান, মাংসের উপরে বিশেষ কিছু মশলা মাখিয়ে অল্প তাপে অনেক ক্ষণ ধরে তৈরি করা হয় এই কাবাব। শুধু মাংস বা মাছেরই নয়, সব্জিরও কাবাব হয়। শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন রেস্তোঁরা, ফুডস্টলে অবশ্য মুরগির কাবাবই বেশি জনপ্রিয়। পছন্দের তালিকায় রয়েছে চিকেন তন্দুরি, টিক্কা কাবাব, রেশমি কাবাব, টেংরি কাবাবও। পরোটার সঙ্গে খাওয়ার জন্য টিক্কা কাবাব দিয়ে রান্না করা টিক্কা কাবাব মশলার চাহিদা রয়েছে খুব। এ ছাড়া মাটন শিক কাবাব এবং তন্দুরি পমফ্রেটও ভাল বিক্রি হচ্ছে। নিরামিষাশীদের জন্য পালং শিক কাবাব, পনির টিক্কা কাবাবের চাহিদা রয়েছে। সিটি সেন্টারের একটি রেস্তোঁরার কর্মী ওমপ্রকাশ শাউ জানান, চিকেন কাবাবের বিক্রিই বেশি। নিরামিষ কাবাবের কাটতি বেশ কম। এ ছাড়া শহরের বিভিন্ন রাস্তার ধারে খাবারের স্টলগুলিতেও কাবাব বিক্রি দিন দিন বাড়ছে। রাস্তায় চলার সময়ে একটু জিরিয়ে হাতে গরম কাবাব খেতে খেতে বাকি পথ হাঁটার মজাই আলাদা, জানাচ্ছেন ক্রেতারা।
ইদানীং বিদেশের নানা শহরের মতো চলন্ত ফুডস্টলের রেওয়াজ চালু হয়েছে দুর্গাপুরেও। নানা রকম ‘স্পাইসি’ খাবার বিক্রি হচ্ছে সেগুলিতে। চিকেন পকোড়া, চিকেন রোল থেকে শুরু করে নানা রকম কাবাব, চিকেন তন্দুরি থেকে বিরিয়ানি সব পাওয়া যাচ্ছে এই সব স্টলে। যাঁদের রেস্তোঁরায় গিয়ে ‘অর্ডার’ দিয়ে বসে থাকার মতো সময় হাতে নেই তাঁদের কাছে এই সব স্টল আদর্শ। চোখের সামনেই কর্মীরা তৈরি করে দেন, যে যা খেতে চান। বড়দিন হোক বা বর্ষশেষের রাত, ঘোরাঘুরি সেরে বাড়ি ফেরার পথে এই সব রেস্তোঁরা বা চলন্ত ফুডস্টলগুলিতে যে শহরবাসীর ভিড় জমবে, বলার অপেক্ষা রাখে না। |