নির্বাচিত হওয়ার তিন মাসের মাথায় কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন আলিপুরদুয়ার পুরসভার দু’জন কাউন্সিলর। সোমবার শিলিগুড়ির সার্কিট হাউসে এই দলবদলের কথা ঘোষণা করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়। তৃণমূল সূত্রের খবর, ওই দুই কাউন্সিলরের হলেন ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দীপক সরকার ও ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সঞ্জীব বর্মন। তাঁরা সার্কিট হাউসে উপস্থিত ছিলেন। এর ফলে ওই পুরসভায় ক্ষমতাসীন বাম ও তৃণমূলের আসন সংখ্যা সমান হল। |
আলিপুরদুয়ার পুরসভার দুই কাউন্সিলরের সঙ্গে বৈঠকের পর মুকুল রায়।
শিলিগুড়ি সার্কিট হাউসের সামনে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক। |
গত সেপ্টেম্বর মাসে আলিপুরদুয়ার পুরসভার নির্বাচন হয়। ২০ আসন বিশিষ্ট পুরসভায় বামেরা ৮টি ওয়ার্ড জেতে। এরমধ্যে সিপিএম ৪টি, আরএসপি ৩ টি এবং সিপিআই ১টি আসন পায়। কংগ্রেস ও তৃণমূল ৬টি করে আসন পায়। কংগ্রেস ও তৃণমূলের তরফে জোট বেঁধে বোর্ড গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। ভোটাভুটিতে কংগ্রেস কাউন্সিলরেরা উপস্থিত না থাকায় বোর্ড গঠন করে বামেরা। এ দিন দল বদলের জেরে তৃণমূলের কাউন্সিলর সংখ্যাও ৮ হল। পুর আইন অনুসারে, কোনও পুরবোর্ড গঠনের মধ্যে অনাস্থা আনা যায় না। সেক্ষেত্রে ছয় মাস পর তৃণমূল আলিপুরদুয়ার পুরসভা দখল করার চেষ্টা করবে বলে এ দিন তৃণমূলের মুকুলবাবু জানিয়ে দিয়েছেন।
মুকুলবাবু বলেন, “আলিপুরদুয়ার পুরসভায় এখন তৃণমূলের ৮ জন কাউন্সিলর। আমরা সবচেয়ে বড় দল। আমরাই বোর্ড গঠন করার দাবিদার। আপাতত আমাদের ৬ মাস অপেক্ষা করতে হবে। তারপরেই অনাস্থার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করব।” তবে তৃণমূল নেতা জহর মজুমদার ও তৃণমূলের যুব সংগঠনের রাজ্যের কার্যকরী সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, “কংগ্রেসের বাকি কাউন্সিলর-সহ বিভিন্ন ব্লকের কংগ্রেস নেতারা তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য যোগাযোগ করছেন। শীঘ্রই আমরা বোর্ড গঠন করব।”
তৃণমূলে যোগ দিয়ে কাউন্সিলর দীপক সরকার বলেন, “আমি উন্নয়নের কাজের জন্য এসেছি। কংগ্রেসে থেকে তা সম্ভব হচ্ছে না।” উন্নয়নের কথাই বলেন অপর কাউন্সিলর সঞ্জীব বর্মনও। তিনি বলেন, “উন্নয়নই আমাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যেই তৃণমূলে এসেছি। সারা রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী যে উন্নয়নের জোয়ার এনেছেন সেই স্রোতেই থাকতে চেয়েছি। আর বোর্ড গঠনে কংগ্রেস গরহাজির থেকে বামেদের সুবিধা করে দিয়েছিল।”
দলবদল প্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বরঞ্জন সরকার বলেন, “সব জায়গায় তৃণমূল এভাবেই দল ভাঙার কাজ করছে। টাকার লোভ ও ভয় দেখিয়ে ওই কাজ করা হচ্ছে। ওই দুই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে আমরা আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেব।” আর আলিপুরদুয়ার পুরসভার সিপিএমের চেয়ারম্যান অনিন্দ্য ভৌমিক বলেন, “কোন কাউন্সিলর দলবদল করতেই পারেন। তবে তাঁর উচিত সেই আসন থেকে পদত্যাগ করে পুনর্নিবাচন করে জিতে আসা। এটা নৈতিকতার প্রশ্ন।” |