দল বেঁধে এসে পড়েছে দলমার হাতিরা। ওড়িশা সীমানা এলাকায় ঘোরাঘুরি করছে। আশঙ্কা, যে কোনও সময় তারা নয়াগ্রামে ঢুকে পড়বে। দলটিতে প্রায় দেড়শো হাতি রয়েছে বলে বন দফতর সূত্রে খবর। খড়্গপুর বিভাগের ডিএফও অঞ্জন গুহ বলেন, “দলমার দলটি এখন ওড়িশা সীমানায় রয়েছে। যে কোনও সময় পুরো দল নয়াগ্রামে ঢুকে পড়তে পারে। আমরা পরিস্থিতির উপর নজর রেখেছি।”
খুব দেরি হলে নভেম্বরের শেষ কিংবা ডিসেম্বরের গোড়ায় ওড়িশা থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরের নয়াগ্রামে ঢুকে পড়ে হাতির দল। এ বার দেরি কেন? বন দফতরের এক কর্তা জানাচ্ছেন, সীমানা এলাকায় খাবারের খোঁজ পেয়ে গিয়েছে হাতিরা। ইতিমধ্যে প্রচুর শস্যহানি হয়েছে। পর্যাপ্ত খাবার থাকায় দলটি ধীরে ধীরে এগোচ্ছে।
সাধারণত, ওড়িশা থেকে নয়াগ্রামে ঢোকার পর সাঁকরাইল, খড়্গপুর গ্রামীণ, মেদিনীপুর সদর ব্লক হয়ে লালগড়ে ঢুকে পড়ে দলমার দল। যাতায়াতের পথে প্রচুর ফসলেরক্ষতি করে। এখন রেসিডেনশিয়াল হাতির সংখ্যা বেড়েছে। ২০০৯ সালের হাতি গণনা অনুযায়ী, পশ্চিম মেদিনীপুর-বাঁকুড়া-পুরুলিয়া, জঙ্গলমহলের তিন জেলায় রেসিডেনশিয়াল হাতির সংখ্যা ৩৭। এখন সংখ্যাটা ৫৫ পেরিয়েছে বলে মনে করছে বন দফতর। বন দফতর সূত্রে খবর, আশির দশক থেকে হাতি আসা শুরু হয়েছিল। তখন ঝাড়খণ্ড সীমানায় কাঁকড়াঝোর ও ময়ূরঝর্না পর্যন্ত হাতি আসত। ধীরে ধীরে কংসাবতী, সুবর্ণরেখা নদী পেরিয়ে জেলার অন্যত্রও হাতি ঢুকতে শুরু করে। দাবি উঠেছিল, দলমার হাতির দলকে সীমানাতেই আটকে দিতে হবে। তখন সরকার ময়ূরঝর্নায় প্রকল্প তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কথা ছিল এলাকায় হাতির খাবার উপযোগী গাছ লাগানো হবে, পানীয় জলের ব্যবস্থা থাকবে। কিন্তু প্রকল্প সে ভাবে বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে, ফি বছর দলমা থেকে হাতির দল আসে। প্রতি বছর যেন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হাতির সংখ্যা। সঙ্গে ক্ষয়ক্ষতিও। বন দফতরের রূপনারায়ণ বিভাগের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহার কথায়, “হাতির হানায় শস্যহানি এড়াতে কিছু পদক্ষেপ করা হয়। জঙ্গলের মধ্যে বসবাসের উপযুক্ত পরিবেশ থাকলে তখন হাতি জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে আসবে না। ফলে, শস্যহানি কমবে। এ বারও কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছে।” |