দেবযানী গেলেন রাষ্ট্রপুঞ্জে, রেহাই ব্যক্তিগত হাজিরায়
কূটনীতিক দেবযানী খোবরাগাড় অবশেষে রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের স্থায়ী মিশনের দায়িত্ব পেলেন। রাষ্ট্রপুঞ্জের তরফে প্রয়োজনীয় অ্যাক্রেডিটেশনও দেওয়া হয়েছে দেবযানীকে।
আর এর ফলেই সম্পূর্ণ কূটনৈতিক রক্ষাকবচ পাওয়ার দিকে এক ধাপ এগোলেন দেবযানী। যদিও তাঁর জন্য আরও একটি সুখবরও রয়েছে। পরিচারিকা সংক্রান্ত মামলার জন্য এ বার থেকে আর আদালতে শশরীর হাজিরা দিতে হবে না তাঁকে।
গত ১২ ডিসেম্বর সকালে প্রকাশ্য রাস্তায় হাতকড়া পরিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছিল নিউ ইয়র্কে ভারতের ডেপুটি কনসাল জেনারেল দেবযানীকে। শুধু তাই নয়, ধরে নিয়ে যাওয়ার পরে নগ্ন করে তল্লাশিও করা হয়। অভিযোগ ছিল, পরিচারিকার বেতন ও ভিসা নিয়ে মিথ্যাচার করেছেন এই ভারতীয় কূটনীতিক। দেবযানীর গ্রেফতারি ও চরম হেনস্থার পরেই সমালোচনার ঝড় ওঠে ভারতে। ভারত-আমেরিকা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জলও এই ক’দিনে অনেক দূরই গড়িয়েছে।
দেবযানীর গ্রেফতারির পরে কূটনৈতিক রক্ষাকবচ নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি। যদিও মার্কিন বিদেশ দফতরের পক্ষ থেকে স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, দেবযানীর বিরুদ্ধে পুরনো মামলাটি চলবেই। মার্কিন বিদেশ দফতরের মুখপাত্র আজ একটি বিবৃতিতে বলেছেন, “কূটনৈতিক রক্ষাকবচ পাওয়ার মানে এই নয় যে দেবযানীর বিরুদ্ধে চলা আগের ফৌজদারি মামলাটি পুরোপুরি খারিজ হয়ে যাবে।” রাষ্ট্রপুঞ্জের স্থায়ী মিশনে আসার পরে দেবযানী একটি পরিচয়পত্র পাবেন মার্কিন বিদেশ দফতরের কাছ থেকে। যার মানেই হল এর পর থেকে তিনি কূটনৈতিক রক্ষাকবচের আওতায় পড়বেন।
ভারত-মার্কিন সম্পর্কের বরফ গলতে এটিই এখন সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল। আদালতে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে দেবযানীকে মুক্তি দেওয়াটাকেও দু’পক্ষের স্বাভাবিক সম্পর্কে ফেরার ইঙ্গিত বলেই মনে করছেন তাঁরা। এমনকী রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের স্থায়ী মিশনে ছাড়পত্র পাওয়াটা আমেরিকার সায় ছাড়া সম্ভব নয় বলেই মত তাঁদের। গত সপ্তাহে দেবযানীর নিখোঁজ পরিচারিকা সঙ্গীতা রিচার্ডের পরিবারের তিন সদস্যকে দিল্লি থেকে আমেরিকা আনা হয়েছে। শোনা যাচ্ছে, রিচার্ড পরিবারের টিকিটের খরচও জুগিয়েছে ভারতের মার্কিন দূতাবাস।
মোট কথা, দেবযানীর বিষয়টি নিয়ে দু’দেশের মধ্যে ঝামেলা শীঘ্রই মিটে যাবে বলে মনে করছে নয়াদিল্লিও। পঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অনুষ্ঠানে ভারতের বিদেশ প্রতিমন্ত্রী প্রীনীত কৌর আজ বলেছেন, “দু’দেশের মধ্যে আলোচনা চলছেই। দ্রুত সব সমস্যা মিটে যাবে বলে আমরা আশাবাদী।” ভারত কি তা হলে আগের কঠোর মনোভাব থেকে সরে আসছে? প্রীনীতের বক্তব্য, “মোটেও না। আমরা সবাই বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন। সব রকমের সাহায্যের চেষ্টাও করছি।”
দেবযানীর নিগ্রহ নিয়ে ভারত সরকারের সঙ্গে সঙ্গে সরব হয়েছেন এখানকার অনাবাসী ভারতীয়রাও। বিষয়টি ভারতীয় ভাবাবেগকে আঘাত করেছে বলে মনে করছেন তাঁরা। ওবামা সরকার যাতে ৩৯ বছরের এই ভারতীয় কূটনীতিকের বিরুদ্ধে মামলা তুলে নেয়, সে জন্য অনলাইনে প্রচারও চালাচ্ছেন তাঁদের একাংশ। হোয়াইট হাউসের কাছে তাদের আবেদন, অবিলম্বে দেবযানীর বিরুদ্ধে সমস্ত ফৌজদারি মামলা খারিজ করা হোক।
এত কিছুর মধ্যেই আমেরিকা রওনা দিয়েছেন ভারতের নতুন রাষ্ট্রদূত এস জয়শঙ্কর। কাল ওয়াশিংটন পৌঁছবেন তিনি। এর আগে চিনে ভারতের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। যদিও প্রেসিডেন্ট ওবামার কাছে নিজের কূটনৈতিক পরিচয়পত্র জমা দিতে কয়েক দিন অপেক্ষা করতে হবে জয়শঙ্করকে। বড়দিনের ছুটিতে ওবামা এখন সপরিবার হাওয়াইয়ে। ৫ জানুয়ারি তিনি দেশে ফিরলে আনুষ্ঠানিক ভাবে দায়িত্ব বুঝে নেবেন এই দুঁদে কূটনীতিক।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.