চাঁচল থেকে মালদহ যেতে ৮১ নম্বর জাতীয় সড়কের ৩৬ কিমি পথ পেরোতে এক সময়ে সময় লাগত মেরেকেটে এক ঘণ্টা। এখন সেই পথ পার হতে সময় লাগছে আড়াই ঘণ্টার বেশি। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিপজ্জনক রাস্তায় যাত্রীদের প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। গত তিন বছর ধরে ওই সড়ক বেহাল হয়ে থাকলেও তা সংস্কারের কাজ শেষ না হওয়ায় মালদহের চাঁচল মহকুমা জুড়েই ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। গাজলের কদুবাড়ি থেকে চাঁচল হয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর পর্য়ন্ত ৫৩ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের দাবিতে একাধিক বার আন্দোলনও হয়েছে। তাও চাঁচল থেকে হরিশ্চন্দ্রপুর পর্য়ন্ত ১৬ কিলোমিটার রাস্তা গত বছর কয়েক দফায় সংস্কার করা হলেও বাকি রাস্তার সংস্কার হয়নি বলে অভিযোগ। জাতীয় সড়ক দফতর জানায়, বরাদ্দের অভাবেই তা সংস্কার করা যায়নি। |
একে জাতীয় সড়কের এই হাল, তার উপরে পথবাতিও নেই। ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা।
ধূপগুড়ি থেকে কোচবিহার যাওয়ার রাস্তায় ছবিটি তুলেছেন সন্দীপ পাল। |
বেহাল সড়কের সংস্কার যে জরুরি তা জানানোর পাশাপাশি বরাদ্দের দাবিতে তিনি কেন্দ্রীয় পরিবহণ মন্ত্রকের দ্বারস্থ হয়েছেন বলে জানিয়েছেন উত্তর মালদহের সাংসদ মৌসম বেনজির নুর। সাংসদ বলেন, “সংশ্লিষ্ট দফতরের মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে দ্রুত বরাদ্দ মঞ্জুর করার জন্য আবেদন করেছি। মন্ত্রী আশ্বাসও দিয়েছেন। আশা করছি দ্রুত সমস্যা মিটবে।” ৭ নম্বর জাতীয় সড়ক দফতরের মালদহের নির্বাহী বাস্তুকার সুব্রত রায় বলেন, “সড়কের জন্য যেটুকু বরাদ্দ মিলেছে তা দিয়ে কাজ করা হয়েছে। সম্পূর্ণ রাস্তার জন্য বরাদ্দ না মেলায় কাজ হয়নি। দ্রুত যাতে বরাদ্দ মেলে সেই চেষ্টা চলছে।”
জাতীয় সড়ক দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, হরিশ্চন্দ্রপুর থেকে চাঁচল ১৬ কিলোমিটার বরাদ্দ মেলায় তা দিয়ে সংস্কারের কাজ করা হয়েছে। পরে চাঁচল থেকে সামসি ১৩ কিলোমিটারের বরাদ্দ মিলেছে। যদিও সামসি থেকে গাজলের কদুবাড়ি ২৩ কিলোমিটারের জন্য কোনও বরাদ্দ মেলেনি। কবে তা মিলবে তারও কোন নিশ্চয়তা নেই। |
গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক সংস্কার নিয়ে কেন ৩ বছর ধরে টালবাহানা চলছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বাসিন্দাদের একাংশ। ফের সড়ক সংস্কারের দাবিতে টানা আন্দোলনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, জাতীয় সড়কের দশা চষে ফেলা খেতকেও হার মানাতে পারে। রাস্তা থেকে পিচের চাদর উধাও হয়েছে বছর তিনেক আগেই। রাস্তা জুড়েই রয়েছে অসংখ্য ছোট, বড় গর্ত। বেহাল রাস্তায় দুর্ঘটনা নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। সড়ক সংস্কারের দাহিতে গত বছর একাধিক বার পথ অবরোধ করা হয়েছে। বনধ্ও পালন করা হয়। দ্রুত সড়ক সংস্কারের আশ্বাস দেওয়া হলেও বছর পেরিয়ে গেলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি বলে অভিযোগ। চাঁচল ব্যবসায়ী সমিতি সম্পাদক প্রাণগোপাল পোদ্দার এবং সামসি ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক প্রবীর চৌধুরী দু’জনেই একই সুরে বলেছেন, “এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বেহাল পড়ে থাকবে ভাবাই যায় না। আন্দোলনের কথা ভাবতে হচ্ছে।” |