শিলিগুড়ির হিলকার্ট রোডের উপরে উড়ালপুলের একটা অংশ ভেঙে নতুন করে তৈরি করার চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেল। রবিবার সকালে উড়ালপুলের অংশ ঘুরে দেখলেন ভারতীয় রেলের অন্যতম সহযোগী সংস্থা রাইটস-এর একটি প্রতিনিধিদল। তাঁদের সমস্ত এলাকা ঘুরিয়ে দেখান উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব। উড়ালপুলের যে অংশটি শিলিগুড়ি থানার সামনে থেকে শুরু হয়ে মূল পুলে মিশেছিল, সেটার দৈর্ঘ্য বাড়িয়ে স্টেশন ফিডার রোডে উর্বশী সিনেমা হলের সামনে শেষ হবে বলে মন্ত্রী এ দিন ঘোষণা করেন। নতুন প্রক্রিয়ায় খুশি মহাবীরস্থান, রেলগেট বাজার এলাকার ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা। তাঁরা গোটা বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছেন।
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যে টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু করে দেওয়া হবে বলে মন্ত্রী জানিয়েছেন। মে মাসের মধ্যে কাজও শুরু করে দেওয়া হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। উড়ালপুল প্রসঙ্গে প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যের সমালোচনা করেন গৌতম দেব। অন্যদিকে তাঁদের পরিকল্পনায় ভুল ছিল বলে স্বীকার করে নিয়েছেন অশোকবাবু। |
পরিদর্শন। রবিবারের নিজস্ব চিত্র। |
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “এই উড়ালপুল শহরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলি যুক্ত করেছে। পরিকল্পনা হীন ভাবে তৈরি করায় সুবিধার বদলে অসুবিধা বেশি হচ্ছে। উড়ালপুলের শিলিগুড়ি থানার সামনের অংশ দিয়ে এখন শুধু ওঠা যায়। নতুন পরিকল্পনায় ওঠা, নামা দুইই করা যাবে। প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অপরিকল্পিতভাবে কাজ করায় অযথা যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।” ভুল পরিকল্পনায় যে যানজট হচ্ছে, তা স্বীকার করে নিয়েছেন অশোক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “আগে উর্বশীর সামনে উড়ালপুলের প্রবেশমুখ রাখা উচিত ছিল। তাহলে যানজট হত না। বিশেষজ্ঞ বাস্তুকাররাই মূল পরিকল্পনা নিয়েছে। কোনও দোকান ক্ষতিগ্রস্ত না করার জন্য এইভাবে কাজ করেছিলাম। বর্তমান মন্ত্রী নিজের ইচ্ছামত নতুন করে তৈরি করতেই পারেন।”
অন্যদিকে সমস্ত বিষয়টি এদিন সরেজমিনে খতিয়ে দেখেন রাইটসের প্রতিনিধিদল। সংস্থার জেনারেল ম্যানেজার তরুণ সেনগুপ্ত পুরো বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে আলাদা করে কথা বলেন। তরুণবাবু বলেন, “নতুন অংশটির মোট দৈর্ঘ্য হবে ৭শো মিটার এবং চওড়া সাড়ে ৭ মিটার।” যা আগের চেয়ে প্রায় দেড়শো মিটার বেশি লম্বা। এর ফলে থানা মোড়ের চৌমাথার যানজটও কমবে এবং প্রায় এক কিলোমিটার ঘুরে হিলকার্ট রোড থেকে স্টেশন ফিডার রোডে আসার সময়ও কিছুটা কমবে। মন্ত্রী বলেন, “আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে টেন্ডার হয়ে যাবে। এর আগেই প্রোজেক্ট রিপোর্ট তৈরি করে জমা দিতে বলা হয়েছে রাইটসকে।” নতুন অংশটি তৈরি করার পরে পুরোনোটি ভেঙে দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়। নতুন উদ্যোগে খুশি এলাকার ব্যবসায়ীরা। উড়ালপুলের নিচে মহাবীরস্থানের এক ব্যবসায়ী গণেশ প্রসাদ বলেন, “উড়ালপুলের জন্য আমাদের ব্যবসায় সমস্যা হচ্ছে। এলাকাটা ঘিঞ্জি হয়ে যাওয়ায় তাতে লোকজন দোকানের সামনে ঠিকমতো দাঁড়াতে পারে না। ফলে ব্যবসা মার খাচ্ছে। সামনে থেকে উড়ালপুলের অংশটি সরে গেলে লাভ হবে।” অপর এক ব্যবসায়ী রামপ্রসাদ অগ্রবাল বলেন, “আমাদের বাজারের সামনে উড়ালপুল। এতদিন কোনও লাভই হত না। যাওয়ার সময় সমস্যা না হলেও ফেরার সময় অনেকটা ঘুরে আসতে হত। ফলে সময় ও অর্থ দুইই নষ্ট হত। নতুন যা পরিকল্পনা শুনছি তাতে মনে হয় লাভ হবে মানুষেরই।” |