রাজ্যে বাছাই আসনে লড়াই, ভাবছে বিজেপি
সন্ন লোকসভা ভোটে রাজ্যের ৪২টি আসনেই লড়ার কথা বলেছিল বিজেপি। কিন্তু এখন অন্য রকম ভাবনা দেখা দিয়েছে দলে। ভোট-পরবর্তী সম্ভাবনার দরজা খুলে রাখতে রাজ্যের ২০টি আসন চিহ্নিত করে লড়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের একাংশ। বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের একটি প্রভাবশালী অংশ চাইছেন না, পশ্চিমবঙ্গে ৪২টি আসনেই লড়াই করুক দল। ওই অংশের যুক্তি, এ রাজ্য থেকে বিজেপি-র লোকসভা আসন বার করা দুষ্কর। বরং নরেন্দ্র মোদী হাওয়ায় বিজেপি বেশ কিছু আসনে ভোট কাটলে চতুর্মুখী লড়াইয়ের ফায়দা নিয়ে শেষ হাসি হাসতে পারে বামেরা। ভোট-পরবর্তী পরিস্থিতিতে যে বামেরা কখনওই বিজেপি-র ডাকে সাড়া দেবে না। তার চেয়ে বিজেপি কিছু কম আসনে লড়লে আখেরে যদি তৃণমূলের লাভ হয়, ভোটের পরে প্রয়োজনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে বার্তা পাঠানোর চেষ্টা করা যাবে। এই যুক্তিতেই ২০টি আসন বেছে নিয়ে তার জন্য খসড়া প্রার্থী তালিকা তৈরি করে দিল্লিতে পাঠাতে বলা হচ্ছে দলের রাজ্য নেতৃত্বকে।
চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত অবশ্য এখনও হয়নি। আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতারা এখনও সব আসনে লড়ার কথাই বলছেন। তবে দলের অন্দরের খবর, রাজ্য বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে বোঝানোর চেষ্টা করছে, কম আসনে প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্তেও বিপদ আছে। কারণ, শেষ পর্যন্ত বিজেপি সর্বত্র প্রার্থী না-দিলে বাম ও কংগ্রেস প্রচার করতে পারে, তলে তলে বিজেপি-তৃণমূল সমঝোতা হয়েছে। এতে সংখ্যালঘু ভোট তৃণমূলের দিক থেকে বেরিয়ে বাম বা কংগ্রেসের বাক্সে চলে যেতে পারে। রাজ্য বিজেপি-র এই যুক্তি শেষ পর্যন্ত দলে গ্রাহ্য হবে কি না, তা অবশ্য সময়ই বলবে।
তার আগে বিজেপি নেতৃত্ব এই পরিবর্তিত ভাবনাচিন্তা সম্পর্কে বিশেষ মুখ খুলতে চাইছেন না। এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের বক্তব্য, “২০টি আসনের গল্প আমার জানা নেই!” বিজেপি-র প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথাগত রায়ও বলেন, “আমার কাছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কারও ওই রকম কোনও বার্তার খবর নেই।” পাশাপাশি, বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতা চন্দন মিত্রের বক্তব্য, প্রত্যেক লোকসভা ভোটের আগেই পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে দলে দু’টি মত থাকে। একটা মত সব আসনে লড়া। অন্যটি কিছু আসন বেছে নিয়ে লড়া। এ বারও দু’রকম মতই আছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কিছু হয়নি। বিজেপি-র একটি সূত্রের ইঙ্গিত, শেষ পর্যন্ত বাছাই-করা কিছু আসনের বাইরে অন্যত্র অপেক্ষাকৃত ‘দুর্বল’ প্রার্থী দিয়ে দুই মতের মধ্যে রফা করা হতে পারে।
ক’ মাস আগেই হাওড়া লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেও পরে লড়াই থেকে সরে দাঁড়িয়েছিল বিজেপি। তখনও সেই সিদ্ধান্তে তৃণমূলের প্রতি ‘বন্ধুত্বে’র বার্তাই দেখেছিল বাম ও কংগ্রেস। রাজ্য বিজেপি-র একাংশের মধ্যেও হাওড়া থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তে ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। সে সময় বিজেপি-র আনুষ্ঠানিক বক্তব্য ছিল, তৃণমূলের প্রতি বার্তা নয়, সাংগঠনিক শক্তির কথা মাথায় রেখেই সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রাজ্য বিজেপি-র মধ্যে ২০টি আসন বাছাই করা নিয়ে ইতিমধ্যেই ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, মালদহ, দক্ষিণ কলকাতা, হাওড়া, দমদম, বারাসত, বসিরহাট, জয়নগর, কৃষ্ণনগর ওই ২০-র তালিকায় রাখা যায় কি না, ভাবা হচ্ছে। দিল্লিতে কাল, মঙ্গলবার রাহুল-সহ রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বৈঠকে আসন নিয়ে কথা হতে পারে। অন্য দিকে, সঙ্ঘ-প্রধান মোহন ভাগবত কলকাতায় এসে কয়েক দিন ধরে সাংগঠনিক প্রস্তুতি খতিয়ে দেখছেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.