জোনাথন ট্রটের পর এ বার গ্রেম সোয়ান। অ্যাসেজের মাঝখানে রণে ভঙ্গ দিলেন আর এক ইংরেজ। তবে শুধু এই সিরিজ নয়, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকেই চিরবিদায় নিলেন সোয়ান। ৩৪ বছরের অফস্পিনারের আকস্মিক অবসর ঘোষণায় তাঁর দেশের সাধারণ ক্রিকেটপ্রেমীদের ক্ষোভ ঝরে পড়েছে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে। ইংরেজ ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা অবশ্য সোয়ানের সিদ্ধান্ত নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত।
জিওফ বয়কট যেমন বলেছেন, “সাহসী সিদ্ধান্ত। ঠিকই করেছে সোয়ান।” তেমনই মাইকেল আথারটনও বলেন, “সোয়ান নিজে যখন মনে করেছে ওর সময় ফুরিয়ে এসেছে, তখন কারও কিছু বলার নেই।” মাইকেল ভন আবার বলছেন উল্টো কথা। তিনি বলেন, “দলের যা অবস্থা হবে, তাতে মনে হচ্ছে ২০০৬-’০৭-এর হোয়াইটওয়াশও এর চেয়ে ভাল ছিল। এটা ঠিক যে, এই সিরিজে দল হিসেবে ইংল্যান্ড শেষ হয়ে গেল। কিন্তু কোনও ক্রিকেটারের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তকে সম্মান জানানো উচিত।” আর এক প্রাক্তন ক্রিকেটার ডেরেক প্রিঙ্গল তাঁর কলামে লিখেছেন, “২০০৬-’০৭-এ মার্কাস ট্রেসকোথিক মানসিক সমস্যার জন্য প্রথমে দেশে ফিরে যায়। সে বারও তৃতীয় টেস্টের পর অ্যাশলে জাইলস অসুস্থ স্ত্রী-কে দেখতে দেশে ফিরে গিয়েছিল। সেটা অবসর না হলেও পরে আর টেস্টে সে খেলেনি। সেই সিরিজের মতোই না এ বারও হয়।”
যাঁর সম্পর্কে এত কথা, সেই গ্রেম সোয়ান কী বলছেন?
তাঁর বক্তব্য, “ব্যাপারটা সোজা। যখন এখানে এসেছিলাম তখনই মনে হয়েছিল, হয়তো এটাই আমার শেষ বিদেশ সফর। এ বারও অ্যাসেজ জিততে মরিয়া ছিলাম। কিন্তু যখন দেখলাম তা আর সম্ভব নয়, তখন আর স্বার্থপরের মতো আর একটা বক্সিং ডে টেস্টের অভিজ্ঞতা অর্জন করার জন্য খেলার মানেই হয় না। এ বার বরং অন্য কেউ আমার জায়গায় আসুক।” ৬০ টেস্টে ২৫৫ উইকেট পাওয়া সোয়ানের এই ব্যাখ্যা শুনে অস্ট্রেলিয়ার কোচ ডারেন লেম্যান বলেন, “যখন কোনও সিনিয়রের পক্ষে প্রত্যাশা পূরণ করা সম্ভব নয়, তখন তার পক্ষে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া ভাল। তবে সফরের মাঝখানে বেশ কঠিন সিদ্ধান্ত এটা।”
সোয়ানের সতীর্থরা তাঁর সিদ্ধান্তে অবাক। হতাশও। ইয়ান বেল টুইট করেন, “তোমার সঙ্গে খেলে প্রচুর আনন্দ পেয়েছি বন্ধু।” ইংল্যান্ড দলে সবচেয়ে হাসিখুশি ক্রিকেটার ছিলেন সোয়ানই। টিম ব্রেসনান লিখেছেন, “আমার মানসিক সক্ষমতা নিয়ে তোমার ইয়ার্কি-ফাজলামি খুব মিস করব। তবে তোমার এই সিদ্ধান্তে বহু ব্যাটসম্যান হাঁফ ছেড়ে বাঁচবে।” মন্টি পানেসরের মন্তব্য, “আমার স্পিনটুইনকে খুব মিস করব।” |