|
|
|
|
রাজধানীতে শ্লীলতাহানি, অভিযুক্ত টিটিই |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
জরিমানার ভয়ে দেখিয়ে মহিলা যাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে রাজধানী এক্সপ্রেসের এক টিকিট পরীক্ষকের বিরুদ্ধে। ওই মহিলার অভিযোগ, রবিবার বিকেলে গুয়াহাটি থেকে দিল্লিগামী রাজধানী এক্সপ্রেস নিউ বঙ্গাইগাঁও স্টেশন ছাড়ার পরে ওই টিকিট পরীক্ষক তাঁর সঙ্গে আলাপ করতে চান। তাঁকে কুপ্রস্তাবও দেন। তিনি তাতে রাজি না হওয়ায় সেই ব্যক্তি তাঁর শ্লীলতাহানি করে। ঘটনার পরেই তিনি গুয়াহাটিতে তাঁর স্বামীকে ফোনে বিষয়টি জানান। তিনি সঙ্গে সঙ্গে গুয়াহাটি স্টেশনের রেল পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। ওই টিকিট পরীক্ষককে আটক করতে সেখান থেকে এনজেপি-র রেল পুলিশের কাছে বার্তা পাঠানো হয়। কিন্তু এনজেপি স্টেশনে ট্রেনে তল্লাশি চালিয়েও রেল পুলিশ অভিযুক্তকে পায়নি।
ওই মহিলা ছিলেন ট্রেনের বি-১০ কামরায়। সেই মতো রেল পুলিশ ওই টিকিট পরীক্ষকের খোঁজ করছে। শিলিগুড়ির রেল পুলিশ সুপার উজ্জ্বল ভৌমিক জানান, গুয়াহাটি জিআরপি থানায় ওই মহিলার স্বামী শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেছেন এবং মামলার মূল তদন্ত সেখান থেকেই হবে। তিনি বলেন, “তবে ওই টিকিট পরীক্ষককে খুঁজে না পেলেও পরের সব স্টেশনে সতর্কবার্তা পাঠিয়েছি।” উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সুগত লাহিড়ী বলেন, “রাজধানী এক্সপ্রেসে কর্তব্যরত রেলকর্মীরা মূলত উত্তর রেলের কর্মী। তবুও অভিযোগে যে সময়, স্থান বলা হয়েছে, তা ধরে তদন্ত হবে।”
মাস দু’য়েক আগে মালদহে নয়াদিল্লি থেকে ব্রহ্মপুত্রগামী গুয়াহাটি মেলে এক টিকিট পরীক্ষকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠে। সে যাত্রায় ওই টিকিট পরীক্ষককে প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই রেল পুলিশ গ্রেফতার করে। এর পরে ৭ ডিসেম্বর ডাউন আমদাবাদ এক্সপ্রেসে এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলার শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠে একাধিক টিকিট পরীক্ষকের বিরুদ্ধে। ওই অভিযোগে খড়্গপুর শাখার দু’জন টিকিট পরীক্ষক গ্রেফতার হন। এ বার রাজধানী এক্সপ্রেসে অভিযোগ উঠল। খবর পৌঁছেছে রেলমন্ত্রকেও। রেল সূত্রের খবর, কাটিহারের ডিআরএমকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে রেল মন্ত্রক।
রেল পুলিশ সূত্রে খবর, বিবাহিত ওই মহিলার বাড়ি গুয়াহাটিতে। তাঁর এক ছেলে। তাঁর বাবার বাড়ি উত্তরপ্রদেশের কানপুরে। তিনি মাঝে মধ্যেই একা গুয়াহাটি থেকে রাজধানী এক্সপ্রেসে কানপুরে যাতায়াত করেন। এদিন তিনি ট্রেনে একটি ‘সাইড লোয়ার’ আসনে ছিলেন। ট্রেন ছাড়ার পরে বঙ্গাইগাঁও স্টেশনের কিছু পরে ওই টিকিট পরীক্ষক টিকিট দেখতে চান। মহিলার তরফে করা লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, টিকিট পরীক্ষক বসেই প্রথমে পর্দা টেনে দেন। বেশ কয়েকবার তাঁকে ট্রেনে যাতায়াত করতে দেখেছেন, এই দাবি করে প্রেমের প্রস্তাব দেন। তিনি তাঁকে বাধা দেন। তখন ওই টিকিট পরীক্ষক তাঁকে ভয় দেখান, সঙ্গে অতিরিক্ত মালপত্র থাকার জন্য জরিমানা করে ফাঁসিয়ে দেবেন। তাতে ওই মহিলা ঘাবড়ে যান। ওই টিকিট পরীক্ষক এর পরে তাঁর শ্লীলতাহানি করে চলে যান বলে মহিলার দাবি। তিনি এরপরে গোটা বিষয়টি ‘এসএমএস’ করে তাঁর স্বামীকে জানিয়ে দেন।
রাজধানী এক্সপ্রেসের মতো গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনে রেল রক্ষী বাহিনীর কড়া নজরদারি থাকার কথা। সেখানে রেল রক্ষী বাহিনীর কোনও অফিসারের দেখা এনজেপি পর্যন্ত মেলেনি বলে মহিলার দাবি। নিউ জলপাইগুড়ির এরিয়া ম্যানেজার পার্থ শীল বলেন, “ঘটনার কথা জানি না। তবে অতীতে এ ধরনের যে অভিযোগ মিলেছে, তার বেশির ভাগই তদন্তে মিথ্যে বলে প্রমাণিত হয়েছে। এ ক্ষেত্রেও সঠিক কী হয়েছে তা অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে।” |
|
|
|
|
|