|
|
|
|
জনমতের চাপে সরকার গড়ার পথে আপ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি
২২ ডিসেম্বর |
বড় কোনও পরিবর্তন না হলে কাল দিল্লিতে সরকার গড়ার কথা সরকারি ভাবে ঘোষণা করতে চলেছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। দিল্লিতে সরকার গড়া উচিত কি না, এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মতামত চেয়েছিলেন আম আদমি পার্টির (আপ) নেতা। এসএমএস ও চিঠি ছাড়াও জনতার রায় জানতে আজ রাত পর্যন্ত দিল্লিতে ২৮০টি জনসভা করেছে আপ। এখনও পর্যন্ত অধিকাংশ মানুষই রায় দিয়েছেন সরকার গড়ার পক্ষে। কেজরিওয়ালও আজ বলেন, “আমাদের কাছে দিল্লিবাসীর অনেক প্রত্যাশা রয়েছে। আমরা সেই প্রত্যাশা পূরণ করব।” কেজরিওয়ালের ওই মন্তব্য দেখে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, এখন সরকার গড়া ছাড়া কেজরিওয়ালের সামনে আর কোনও রাস্তা খোলা নেই।
আজ দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগামিকাল সকাল আটটায় দলের রাজনীতি বিষয়ক কমিটি দিল্লিবাসীর রায় সমীক্ষা করে দেখে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। কেজরিওয়াল বলেছেন, “সেই রায় আগামিকাল বেলা এগারোটা নাগাদ সাংবাদিক সম্মেলন করে জানানো হবে। তার পর তা জানানো হবে দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর নাজিব জংকে।” প্রসঙ্গত, সরকার গড়া নিয়ে মানুষের রায় জানতে নাজিব জংয়ের কাছে দশ দিন সময় চান কেজরিওয়াল। আগামিকাল সেই সময়সীমা শেষ হচ্ছে।
আজ নিজের বিধানসভা কেন্দ্রতে চারটি জনসভা করেন কেজরিওয়াল। নয়াদিল্লি বিধানসভা কেন্দ্র থেকেই তিনি এ বার তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতকে হারিয়েছেন। নিজের কেন্দ্রের গোল মার্কেট, কালীবাড়ি এলাকা এবং দক্ষিণ দিল্লির সরোজিনী নগর ও লোধি রোডে ভোটারদের মন বুঝতে চারটি জনসভা করেন তিনি। |
|
সমর্থকদের মাঝে কেজরিওয়াল। রবিবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই। |
প্রতিটি সভাতেই উপস্থিত অধিকাংশ মানুষ গণভোটে কেজরিওয়ালকে সরকার গড়তে অনুরোধ করেন। জনসভার শেষে সাংবাদিকদের কেজরিওয়াল বলেন, “দিল্লিবাসীর আমাদের কাছে বিপুল প্রত্যাশা। মানুষ চাইছে আমরা সরকার গড়ে ইস্তাহারে যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, তা পালন করি। সরকারে এলে আমরা তা করবও।”
দিল্লিতে সরকার গড়ার খেলায় বিজেপির সরে আসা ও কংগ্রেসের আট বিধায়কের আপ-কে নিঃশর্ত সমর্থনের পরেই সরকার গঠনের প্রশ্নে চাপে পড়ে যান কেজরিওয়াল। জনতাও সরকার গড়ার পক্ষেই রায় দিতে শুরু করে। জনমতের চাপে পড়ে এখন কংগ্রেসের সমর্থন নিয়েই সরকার গড়ার দিকে এগোচ্ছেন কেজরিওয়াল। যা নিয়ে আজ আপ নেতৃত্বকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা অরুণ জেটলি। এই বিজেপি নেতা আজ বলেন, “কংগ্রেসের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব থেকেই আজ কেজরিওয়াল এই জায়গায় পৌঁছেছেন। এখন সেই কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেন তিনি? দেখা যাক এই জোট কত দিন টেঁকে!”জেটলির মন্তব্য থেকে স্পষ্ট, ভবিষ্যতে কেজরিওয়াল সরকার গড়লে বিজেপির চরম বিরোধিতার মুখোমুখি হতে হবে তাদের। লোকসভা নির্বাচনে দিল্লিতে ভাল ফল করার স্বপ্ন দেখা বিজেপি যে কেজরিওয়ালকে অন্তত আগামী ছ’মাস এক ইঞ্চিও জমি ছাড়তে নারাজ, তা এখন থেকেই বুঝিয়ে দিতে শুরু করেছেন জেটলিরা।
বিষয়টি ভাল করেই বুঝতে পারছেন কেজরিওয়াল। মূলত কংগ্রেস ও বিজেপি-এই দুই জাতীয় দলের বিরোধিতা করেই তাঁর উত্থান। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতেও তিনি দাবি করেছিলেন, সরকার গড়লে আগের কংগ্রেস সরকার এবং বিজেপি শাসিত দিল্লি পুরসভার একাধিক দুর্নীতির তদন্ত তিনি করবেন। এখন কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গড়লেও তিনি যে প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসবেন না তা আজ ফের স্পষ্ট করে দিয়েছেন কেজরিওয়াল। বলেছেন, “সরকার গড়লে কংগ্রেস ও বিজেপির বিরুদ্ধে যে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে তার তদন্ত করতে পিছপা হবে না দল।” দলীয় নেতৃত্ব মনে করছেন, এতে এক দিকে দিল্লিবাসীর সামনে প্রতিশ্রুতি পালন করার বার্তা দেওয়া সম্ভব হবে। অন্য দিকে, কংগ্রেসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত শুরু করায় যদি তারা সরকার থেকে সমর্থন তুলে নেয়, তা হলে রাজনৈতিক ভাবে শহিদের মর্যাদা পাবে দল। সে ক্ষেত্রে বিধানসভা ভেঙে দিয়ে নতুন করে নির্বাচনে যেতে পারবেন কেজরিওয়াল।
|
পুরনো খবর: দিল্লিতে প্রায় নিশ্চিত আপ সরকার |
|
|
|
|
|