গত কয়েক দিনের থেকে কিছুটা বদল এল রবিবারের সকালে! মেঘ সরিয়ে সূর্য উঁকি দিতেই ছুটির মেজাজে রাস্তায় বেরোলেন লোকজন। ভিড় জমল ভিক্টোরিয়া-চিড়িয়াখানা-ময়দানে। মেঘ সরিয়ে সূর্য বেরোতে আশার আলো দেখতে পেলেন আবহবিদেরাও।
শীত-প্রত্যাশী বাঙালিকে তাঁদের পূর্বাভাস, বড়দিনে কিছুটা হলেও ঠান্ডার আমেজ মিলবে।
গত সপ্তাহে বাংলাদেশে একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছিল। একই সঙ্গে ওড়িশা ও সংলগ্ন এলাকায় তৈরি হয়েছিল উচ্চচাপ বলয়। এর জোড়া ফলাতেই দক্ষিণবঙ্গে থমকে গিয়েছিল উত্তুরে হাওয়া। আবহবিদেরা জানান, উচ্চচাপ ও ঘূর্ণাবর্তের দাপটে বাতাসে জলীয় বাষ্প ঢুকেছিল। তার ফলেই কয়েক দিন মেঘলা আকাশ দেখা গিয়েছিল কলকাতায়। শনিবারই শহরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা উঠে গিয়েছিল স্বাভাবিকের থেকে পাঁচ ডিগ্রি উপরে।
এ দিন অবশ্য তার থেকে কিছুটা নেমেছে তাপমাত্রা। আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, রবিবার কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে ৪ ডিগ্রি বেশি। আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, এ দিন থেকেই ঘূর্ণাবর্তটি দুর্বল হওয়ার ইঙ্গিত মিলেছে। বাধা কাটছে উচ্চচাপেরও। এর ফলেই আগামী বুধবার, বড়দিনে কলকাতায় শীতের আমেজ মিলতে পারে বলেই মনে করছে হাওয়া অফিস। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ বলেন, “বড়দিনে কলকাতার তাপমাত্রা ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসতে পারে। যা এ সময়ের স্বাভাবিক।”
তবে গত কয়েক বছর নিরিখে বিচার করলে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে তেমন শীত বলবেন না অনেকেই। হাওয়া অফিস সূত্রেই বলা হচ্ছে, ২০১১ ও ২০১২ সালে বড়দিনে তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রির আশপাশেই ঘোরাফেরা করেছে। ছিল উত্তুরে হাওয়ার দাপটও। সে দিক থেকে বিচার করলে এটা কিছুটা উষ্ণ-বড়দিনই বলা যেতে পারে।
আম-বাঙালি অবশ্য এটুকু উষ্ণতাকে তেমন আমল দিতে নারাজ। তাই বড়দিনের আগের রবিবার শহরের সব জায়গাতেই হইহই মেজাজ। সকাল থেকেই দলে দলে লোক উপচে এসে পড়েছে শিয়ালদহ বা দমদম স্টেশনে। এ দিন থেকেই রবিবার সকাল থেকে পরিষেবা চালু করেছে মেট্রো। ফলে অনেকেই তাড়াতাড়ি গন্তব্যে পৌঁছতে পেরেছেন। বাড়ি ফেরার পথে উপরি পাওনা ছিল বড়দিনের কেক কিনে ফেরা। বস্তুত এ দিন থেকেই কলকাতার আনাচে-কানাচে কেকের দোকান বসে গিয়েছে। ফলে বাজারগুলিতে তো ভিড় ছিলই, বিকেল গড়াতে ভিড় জমেছে নিউ মার্কেট বা নামী শপিং মলেও।
সন্ধ্যায় নিউ মার্কেট থেকে বাবার সঙ্গে কেক কিনে বেরোচ্ছিল বছর বারোর তৃণা। বলল, “বড়দিনে বাড়িতে আত্মীয়েরা আসবে। তাই আগেই চিড়িয়াখানা ঘুরে গেলাম। বড়দিনের কেকটাও কিনলাম।”
|