জাতীয় সড়কের গর্তে চাকা পড়ে বাইক আরোহী এক মহিলা এবং সাত মাসের শিশুর মৃত্যুর কয়েক ঘন্টার মধ্যেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সড়কের বড় গর্তগুলি ভরাট করার কাজ শুরু হল। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের নির্দেশে শুক্রবার রাত থেকে দ্রুতগতিতে রায়গঞ্জের শিলিগুড়িমোড় থেকে ডালখোলা পর্যন্ত ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের প্রায় ৫০ কিলোমিটার জুড়ে থাকা বড় গর্তগুলি পিচ ও পাথরের মিশ্রণ দিয়ে ভরাট করার কাজ শুরু হয়েছে। |
৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে গর্ত বোজানোর কাজ শুরু হয়েছে রায়গঞ্জে।—নিজস্ব চিত্র। |
শুক্রবার রায়গঞ্জের কুলিক সেতু সংলগ্ন পাওয়ারহাউস এলাকার বেহাল জাতীয় সড়কে মোটরবাইক থেকে ছিটকে পড়ে ট্রেলারের চাকায় পিষ্ট হয়ে করণদিঘি থানার সৈয়দপুর এলাকার বাসিন্দা অধিকা বিশ্বাস(২৫) ও তাঁর সাতমাস বয়সী ছেলে মুন্না বিশ্বাসের মৃত্যু হয়। পেশায় মাছব্যবসায়ী কালুয়া বিশ্বাস ওইদিন স্ত্রী ও পুত্রকে বাইকে চাপিয়ে রায়গঞ্জের শিলিগুড়ি মোড় এলাকায় এক চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছিলেন। ওই ঘটনার পর বাসিন্দারা জাতীয় সড়ক মেরামতির দাবিতে প্রায় দু’ঘন্টা জাতীয় সড়ক অবরোধ করে। ওই দিন বিকেলেই জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের তরফে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এরপরেই জাতীয় সড়কের বড় গর্তগুলি ভরাট করার কাজ শুরু হয় বলে জানা গিয়েছে।
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের মালদহ বিভাগের প্রকল্প অধিকর্তা মহম্মদ সইফুল্লার অবশ্য দাবি, “পরিবহণ মালিক, ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের দাবি মেনে গত একসপ্তাহ ধরে বিক্ষিপ্তভাবে জাতীয় সড়কে গর্ত ভরাট করার কাজ চলছে। আমরা চাইনা জাতীয় সড়ক বেহাল থাকার কারণে দুর্ঘটনা, যানজট ও গাড়ি বিকল হোক। তিনমাসের মধ্যে স্থায়ী মেরামতির কাজ শেষ করা হবে।” গত এপ্রিল মাস থেকে জাতীয় সড়ক বেহাল হয়ে রয়েছে বলে বাসিন্দা এবং পরিবহণ সংগঠনগুলির অভিযোগ। অসংখ্য গর্ত ও খানাখন্দ তৈরি হওয়া ছাড়াও বহু জায়গায় পিচের চাদর উঠে গিয়ে চষা জমির চেহারা নিয়েছে বলে অভিযোগ। গত অক্টোবর মাসে কেন্দ্রীয় সরকার জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে সড়ক মেরামতির জন্য প্রায় ৩৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করে। জেলা বাস ও মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অশোক চন্দ ও পশ্চিম দিনাজপুর চেম্বার অফ কমার্সের সম্পাদক শঙ্কর কুন্ডু বলেন, “জাতীয় সড়কে বড় গর্তগুলি ভরাট করার কাজ শুরু হওয়ায় আমরা খুশি ঠিকই। তবে জাতীয় সড়কের কর্তৃপক্ষের আগে হুঁশ ফিরলে অকালে মা ও ছেলেকে দুর্ঘটনায় মরতে হত না।” |