রাজ্যের নাগরিকদের স্বাবলম্বী হতে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প গড়তে পরামর্শ দিলেন রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। সেজন্য যা সাহায্য লাগবে, রাজ্য সরকার তা করতে প্রস্তুত বলে মন্তব্য করেন তিনি। শনিবার শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম মেলা মাঠে ১৩ তম রাজ্য হস্তশিল্প মেলার উদ্বোধনে এসেছিলেন মন্ত্রী। মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন ও দার্জিলিঙের জেলাশাসক পুনীত যাদব। মেলা চলবে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। মেলায় প্রবেশের জন্য কোনও প্রবেশ মূল্য রাখা হয়নি। মেলা উদ্বোধনের পর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মন্ত্রী শিলিগুড়ির কাওয়াখালিতে যান প্রস্তাবিত আর্বান হাটের জায়গা দেখতে। এলাকা ঘুরে দেখে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
স্বপনবাবু বলেন, “আগের সরকারের আমলে মূলত দালালরাই লাভ করত। তাই কর্মসংস্থান বাড়াতে ও ক্ষুদ্র শিল্পীদের সরাসরি ও নিয়মিত বিক্রির জন্য একটা জায়গা তৈরি করতে এই হাট তৈরি হচ্ছে। এতে কোনও মধ্যস্বত্বভোগী থাকছে না।” আর্বান হাটে প্রায় ২৫০ টির মত স্টলের জায়গা থাকবে। এখানে শিল্পীদের থাকা ও খাওয়ার বন্দোবস্তও করবে রাজ্য সরকার বলে এদিন জানানো হয়। শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন দফতরের চেয়ারম্যান তথা মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “সাড়ে চার একর জমি দেওয়া হয়েছে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দফতরকে। তাঁরা জমির দখল নিয়ে নিয়েছেন। শীঘ্রই কাজ শুরু হয়ে যাবে।” রাজ্যে শিল্পেদ্যোগের অভাব নেই বলে মনে করছেন স্বপনবাবু। তাই বিপণনে জোর দিতে হবে বলে জানান তিনি। সমস্ত শিল্পীদের পরিচয়পত্র দেওয়া হবে। রাজ্যের সাড়ে ৫ লক্ষ শিল্পী ইতিমধ্যেই পরিচয়পত্র পেয়েছেন। বাকিরাও পাবেন বলে এদিন বলেন তিনি।
বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন এদিন মেলার মঞ্চ থেকেই প্রস্তাব দেন, রাজ্যের সমস্ত বনকেন্দ্রিক পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে একটি করে হস্তশিল্পের বিপণি খুলতে। তাতে পযর্টকেরা বিভিন্ন শিল্পকর্ম কিনে নিতে পারবেন সহজেই। তিনি বলেন, “ভারতের বিভিন্ন জায়গায় পর্যটনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় শিল্পকর্মের সম্ভারের আলাদা বাজার তৈরি হয়েছে। এ রাজ্যেও তা চালু করতে হবে। এজন্য শীঘ্রই স্বপনবাবুর সঙ্গে বৈঠক করব।” এছাড়া চীনা পণ্য ভারতের বিভিন্ন জায়গায় বাজার করে নিচ্ছে। তার জায়গায় স্থানীয় শিল্পকর্মকে ঠিকমত তুলে ধরতে উৎসাহ দিলে এবং বিপণন কৌশল ঠিক থাকলে এগুলিও চীনা পণ্যের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারবে বলে মনে করছেন তিনি। গত কয়েক বছরে এই মেলা ব্যপকভাবে সাফল্য লাভ করেছে বলে দাবি দফতরের। গত কয়েক বছরে মেলায় গড় বিক্রি হয়েছে প্রায় দুকোটি টাকা। গত দু বছরে বিক্রির পরিমাণ তিন কোটি টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে। এ বছরে সমস্ত রেকর্ড ভেঙে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। |