বাস থামিয়ে ছাত্রীকে ‘অপহরণের’ চেষ্টা
লন্ত বাস থামিয়ে এক কলেজ ছাত্রীকে ‘অপহরণের চেষ্টা’র অভিযোগ উঠেছে বালুরঘাটের পতিরামে। শুক্রবার বিকেলের এই ঘটনার পরে সন্দেহভাজন ৪ যুবককে পুলিশ আটক করলেও, পরে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের একাংশ নেতার ‘অনুরোধে’ তাঁদের ছেড়েও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ছাত্রীটির পরিবারের তরফে অবশ্য শনিবার রাত পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ বালুরঘাট পতিরাম কলেজে নবীন বরণ উত্‌সব সেরে বাড়ি ফিরছিলেন দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রী। কুমারগঞ্জের চাঁদগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা ওই ছাত্রী কলেজের সামনে থেকেই বালুরঘাট-কুমারগঞ্জ রুটের একটি বেসরকারি বাসে ওঠেন। প্রায় দু’কিলোমিটার দূরে বরম এলাকায় বাসটি পৌঁছতেই ৪টি মোটরবাইকে সাত জন যুবক বাসের সামনে দাঁড়িয়ে পড়ে। বাসটি থামতে যুবকদের দলটি বাসে ওঠার চেষ্টা করে। যাত্রীদের অভিযোগ, বাসের চালক এবং কর্মীদের তারা বলে ওই ছাত্রীকে নামিয়ে দিতে। যুবকদের বেশিরভাগই নেশাগ্রস্ত ছিল বলেও যাত্রীরা জানিয়েছেন। ওই ছাত্রী ভয়ে কেঁদে ফেললে একাংশ যাত্রী এবং বাসকর্মীরা প্রতিবাদ করেন। এর পরে তারা রাস্তা ছেড়ে দিলেও, মোটরবাইক নিয়ে বাসটির পিছু নেয়। প্রায় ৫০০ মিটার বাসটিকে তাড়া করে ফের বাসটির সামনে বাইক দাঁড় করিয়ে বাস থামিয়ে দেয় দলটি। ততক্ষণে ছাত্রীটি কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতাদের বিষয়টি জানালে তাঁরাও মোটরবাইকে ঘটনাস্থলে চলে আসেন। পতিরাম ব্লক তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি নোটন সাহা বলেন, “কলেজ থেকে খবর পেয়ে আমরা পতিরাম ফাঁড়িতে খবর দিই। আমরা দশ-বারো জন যাই। পুলিশও প্রায় একই সঙ্গে পৌঁছয়।”
যাত্রীরা জানান, ঘটনাস্থল থেকেই চার যুবককে আটক করে পুলিশ। এর পরে নোটনবাবু-সহ বাকি নেতাদের ‘অনুরোধে’ পুলিশ তাদের ছেড়েও দেয় বলে অভিযোগ। পতিরাম ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার পরিমল চক্রবর্তী বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। তিনি বলেন, “যা বলার ওপরমহল থেকে বলা হবে।” দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলা পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এমন ঘটনা ঘটে থাকলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযুক্তদের আটক করেও কেন ছেড়ে দেওয়া হল সে বিষয়ে খোঁজ নেব।”
পুলিশকে ‘অনুরোধের’ কথা অবশ্য স্বীকার করেছেন নোটনবাবু। তবে তাঁর দাবি, অভিযুক্তরা আর কখনও এমন করবে না বলে জানানোয় ওই ‘অনুরোধ’ করা হয়েছে। তিনি বলেন, “গত শুক্রবার ছাত্রীটির পিছু নেয় একদল এসএফআই সমর্থক। ছাত্রীটি আমাদের ফোন করে জানানোয় আমরাই পুলিশে খবর দিই। তবে পরে অভিযুক্তেরা ক্ষমা চাইলে আমরা তাদের ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করি। ওদের মধ্যে এক জন সপ্তাহ দু’য়েক ধরেই ওই ছাত্রীকে বিরক্ত করছিল।” অভিযুক্তদের ছাড়ানো নিয়ে সংগঠনের হস্তক্ষেপের কথা অবশ্য অস্বীকার করেছেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি অতনু রায়। তাঁর দাবি, “ঘটনার সঙ্গে এসএফআই সমর্থিত কিছু বহিরাগত এবং কলেজ ছাত্র জড়িত। তাদের কড়া শাস্তির দাবি করছি।” এসএফআইয়ের ব্লক সহ সভাপতি শুভাশিস সূত্রধর বলেন, “ঘটনার সঙ্গে এসএফআইয়ের কেউ জড়িত নন।” যাত্রিবাহী বাস থামিয়ে অপহরণের চেষ্টার ওই ঘটনায় কলেজের ছাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। ঘটনায় উদ্বেগে কলেজ কর্তৃপক্ষও। পতিরাম যামিনী মজুমদার স্মৃতি কলেজের অধ্যক্ষ নির্মল দাস বলেন, “কলেজ চত্বরের বাইরে হলেও ঘটনাটি যথেষ্ট আতঙ্কজনক। কলেজের তরফেও পুলিশকে জানানো হয়েছে। ওই ছাত্রীর নিরাপত্তা দিতেও পুলিশকে আর্জি জানিয়েছি।” ওই যাত্রীবাহী বাসের চালক নির্মল দত্ত এবং অরুণ ভুঁইমালী জানিয়েছে, “যুবকদের উন্মত্ত আচরণ দেখে ভয়ে ছাত্রীটিকে অন্য মহিলা যাত্রীরা আড়াল করে রেখেছিলেন।” এ দিন সকাল থেকেই অভিযুক্তদের কারও দেখা মেলেনি বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.