দাবিমতো অতিরিক্ত পণ না মেলায় বধূকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার দায়ে তাঁর স্বামী, শাশুড়ি, ভাসুর এবং ননদকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিল আদালত। শনিবার চুঁচুড়া আদালতের তৃতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক শঙ্কর ঘোষ স্থানীয় সুকান্তনগরের বাসিন্দা অনিল সরকার, তার মা সন্ধ্যা সরকার, অনিলের দাদা গোপাল এবং বোন সুলেখাকে ওই সাজা শোনান।
২০০৭ সালের ১৭ জানুয়ারি অনিলের স্ত্রী শর্মিলা সরকার অগ্নিদগ্ধ হন।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হলে দিন সাতেক পরে তিনি মারা যান। বছর দেড়েক আগে অনিলের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। শর্মিলার বাবা আনন্দ সিংহ চুঁচুড়া থানায় মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগে জানান, বিয়ের সময় নগদ টাকা-সহ পাত্রপক্ষের চাহিদা অনুযায়ী সমস্ত যৌতুক দিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই অতিরিক্ত টাকার দাবিতে মেয়ের উপর শারীরিক এবং মানসিক অত্যাচার শুরু করেন শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। সেই কারণেই গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন তাঁর মেয়ে। মৃত্যুকালীন জবানবন্দিতে শর্মিলাও একই কথা জানান বাড়ির লোকজনকে। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে অনিল, সন্ধ্যা, গোপাল এবং সুলেখাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শুক্রবার চার জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন বিচারক। মামলার সরকারি আইনজীবী কালীপ্রসাদ সিংহরায় এবং মৌমিতা ঘোষ জানান, পণের জন্য অত্যাচারে মৃত্যুতে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি বধূ নির্যাতনের দায়ে ওই চার জনকে তিন বছরের জেল ও দু’হাজার টাকা করে জরিমানা করেন বিচারক। অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডেরও আদেশ দেন। দু’টি সাজাই এক সঙ্গে চলবে। এ দিন রায় শোনার পরে আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে মৃতার বাবা আনন্দবাবু এবং মা রীনাদেবী বলেন, “মেয়েকে তো আর ফিরে পাব না। তবে, দোষীদের উপযুক্ত সাজা হল।” |