গাড়ির বয়স হয়ে গিয়েছে ১৫ বছরের বেশি। তাই এ বারের শীত-মরসুমে মেলাগুলিতে বন্ধ হয়ে গিয়েছে ভ্রাম্যমাণ বিজ্ঞান প্রদর্শনী। একই কারণে স্কুলগুলিতেও হচ্ছে না এই প্রদর্শনী।
‘ভ্রাম্যমাণ বিজ্ঞান প্রদর্শনী’-র আয়োজক কলকাতার বিড়লা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড টেকনোলজিক্যাল মিউজিয়াম (বিআইটিএম)। এই প্রদর্শনী করার জন্য কলকাতায় বিআইটিএম কর্তৃপক্ষের নিজস্ব দু’টি গাড়ি আছে। ওই গাড়ি দু’টি করেই বিজ্ঞানের নানা সরঞ্জাম মেলাপ্রাঙ্গণ ও স্কুলগুলিতে নিয়ে যাওয়া হত।
কিন্তু ওই গাড়ি দু’টির বয়স পেরিয়ে গিয়েছে ১৫ বছর। ফলে, পরিবেশ আইন অনুযায়ী সেগুলিকে আর পথে নামানো যাচ্ছে না। সে কারণেই এ বছর ভ্রাম্যমাণ ওই প্রদর্শনী বন্ধ করে দিতে হয়েছে বলে বিআইটিএম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। মিউজিয়াম সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রদর্শনীর ব্যবস্থা রয়েছে ১৯৬৫ সাল থেকে। গাড়ি দু’টিতে যে শুধু প্রদর্শনীর বিভিন্ন জিনিসপত্রই থাকে তাই নয়, সেগুলি যথাযথভাবে সাজানোও থাকে। মিউজিয়ামে এসে দর্শকেরা যে ভাবে নানা জিনিস দেখেন, সে ভাবেই তাঁরা যাতে গাড়িতেও সেগুলি দেখতে পারেন, সেই মতোই সাজানো হয় গাড়ি দু’টি।
বছরের বেশিরভাগ সময়ে বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষের অনুরোধের ভিত্তিতে বিআইটিএম কর্তৃপক্ষ নিজেদের খরচে গাড়িগুলি পাঠাতেন। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে স্কুলগুলিতে পরীক্ষা চলার কারণে গাড়ি দু’টি পাঠানো হত বিভিন্ন মেলায়। যত দিন মেলা চলত, তত দিন গাড়িগুলি সেখানে রাখা থাকত। বিআইটিএম কর্তৃপক্ষ প্রশিক্ষিত কর্মী পাঠাতেন। তাঁরাই দর্শকদের কাছে প্রদর্শনীতে আনা জিনিসগুলির তাত্পর্য ব্যাখ্যা করতেন। এ ভাবে সাধারণ মানুষের মধ্যেও বিজ্ঞান-সচেতনতা বাড়ত।
হাওড়ার আমতার রসপুরে এমনই একটি মেলার উদ্যোক্তা তপন মণ্ডল বলেন, “প্রতি বছর আমাদের মেলায় এই ভ্রাম্যমাণ বিজ্ঞান প্রদর্শনীর গাড়ি আসে। দর্শকেরা প্রদর্শনীটি উপভোগ করেন। এ বছরও আমরা ভ্রাম্যমাণ প্রদর্শনীর জন্য গাড়ি পাঠানোর অনুরোধ জানিয়ে বিআইটিএম কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিই। কিন্তু কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছেন, গাড়ির অভাবে ভ্রাম্যমাণ প্রদর্শনী করা যাবে না। আমরা হতাশ।”
বিআইটিএম কর্তৃপক্ষ জানান, প্রতি বছরই ভ্রাম্যমাণ প্রদর্শনী পাঠানোর অনুরোধ জানিয়ে তাঁদের কাছে প্রচুর চিঠি আসে। কিন্তু এ বারে তাঁরা নিরুপায়। মিউজিয়ামের অধিকর্তা ইমদাদুল ইসলাম বলেন, “এ বছর এখনও পর্যন্ত ২৫টি চিঠি এসেছে ভ্রাম্যমাণ প্রদর্শনীর অনুরোধ জানিয়ে। কিন্তু যে দু’টি গাড়ি আমাদের রয়েছে, তাদের বয়স ১৫ বছর হয়ে গিয়েছে। পরিবেশ বিধি মেনে আমরা সেগুলিকে রাস্তায় নামাতে পারছি না। অন্য দিকে, বিকল্প গাড়ি করে পাঠানোর মতো আর্থিক সংস্থানও আমাদের নেই।” তবে অধিকর্তা জানিয়েছেন, নতুন গাড়ি কেনার জন্য টাকা চেয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে। |