এসজেডিএ দুর্নীতি নিয়ে মাস ধরে লাগাতার আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করল দার্জিলিং জেলা বামফ্রন্ট। শুক্রবার শিলিগুড়ির বাঘাযতীন পার্কে সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের উপস্থিতিতে এই ঘোষণা করেন জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক অশোক ভট্টাচার্য। গোটা উত্তরবঙ্গ জুড়েই ওই আন্দোলন হবে। ছয় জেলার প্রতিটি গ্রাম ও ব্লক স্তরে গিয়ে প্রচার অভিযান চালানো হবে বলে এ দিন ঘোষণা করা হয়। অশোকবাবু এ দিন জানান, সব জেলা থেকে সই সংগ্রহ করে তা রাজ্যপালের কাছে পাঠানো হবে। এ দিনের সভায় সূর্যকান্ত মিশ্র রাজ্য সরকার বেআইনি কাজ করছে বলে অভিযোগ করেন। তাঁর অভিযোগ, মালদহের জেলাশাসককে গ্রেফতারের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ কমিশনারকে বদলি করে দেওয়া হয়েছে। তাঁর পরামর্শ, “পুলিশকে সতর্ক হয়ে কাজ করতে হবে। লিখিত নির্দেশ ছাড়া কোনও কাজ করবেন না। তা হলে এই কমিশনারের মত অবস্থা হবে।” |
শিলিগুড়িতে সূর্যকান্ত মিশ্র। শুক্রবার। ছবি: সন্দীপ পাল। |
এসজেডিএ মামলায় বিগত বেশ কিছুদিন আগেই আন্দোলনে নামার কথা বলেছিলেন বামফ্রন্টের নেতারা। এ দিন তার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করেন। এই মাসের শেষ থেকেই আন্দোলন শুরু হবে। ২৭ ডিসেম্বর এসজেডিএ ঘেরাও দিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচির শুরু। এরপরে ওই দিনই শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনারের কাছে একটি স্মারকলিপি দেবেন বাম নেতাকর্মীরা। ১ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে গণ স্বাক্ষর সংগ্রহ। এরপর থেকেই পুরোদস্তুর প্রচারে নামবেন তাঁরা। উত্তরবঙ্গ জুড়ে প্রচারাভিযান চলবে। প্রতিটি পঞ্চায়েত, ব্লক ও গ্রামে গিয়ে বাম প্রতিনিধিরা রাজ্য সরকারের দুর্নীতির হিসেব তুলে ধরবেন। ৭ ফেব্রুয়ারি শিলিগুড়ির বাঘাযতীন পার্ক থেকে মিছিল হবে। অশোকবাবু বলেন, “এরপর ৯ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় ব্রিগেড ময়দানে উত্তরবঙ্গ থেকে প্রতিনিধিরা যাবেন এসজেডিএ-সহ সমস্ত দুর্নীতির বিরুদ্ধে জমায়েত করতে।” এছাড়া উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজের অব্যবস্থাকেও তাঁরা তাঁদের প্রচারের হাতিয়ার করতে চাইছেন।
এ দিন বাঘাযতীন পার্কের সভায় উপস্থিত ছিলেন, দার্জিলিং জেলার সিপিএম, আরএসপি, সিপিআই সহ অন্যান্য বাম দলের প্রতিনিধিরা।
বামফ্রন্ট সূত্রের খবর, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের প্রেক্ষিতে, এসজেডিএ দুর্নীতিকে পুরোভাগে রেখে আন্দোলন গড়ে তুলতে চাইছেন তাঁরা। যদিও দার্জিলিং জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে পাল্টা কটাক্ষ করা হয়েছে সূর্যবাবুদের বক্তব্যের। দার্জিলিং জেলা তৃণমূলের মহাসচিব কৃষ্ণ পাল বলেন, “যাঁর উপস্থিতিতে এই ঘোষণা করা হল, তিনি নিজে ওষুধ কেলেঙ্কারিতে জড়িত। সারা ভারতবর্ষে গত ৩৪ বছরে যা কেলেঙ্কারি হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে তার চেয়ে বেশি কেলেঙ্কারি হয়েছে। তাঁদের মুখে এসব মানায় না। পশ্চিমবঙ্গের মানুষ তাঁদের ছুড়ে ফেলে দিয়েছেন।” |