যাবতীয় বির্তক কাটিয়ে অবশেষে জলপাইগুড়ি আর্ট গ্যালারির বাণিজ্যিক ব্যবহার শুরু হতে চলেছে। ১১ জানুয়ারি নব কলেবরে আর্ট গ্যালারি উদ্বোধন হবে। নাম দেওয়া হয়েছে আর্ট গ্যালারি সিনেপ্লেক্স। আড়াই ঘণ্টার একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উদ্বোধন হবে সিনেপ্লেক্সের। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ধুঁকতে থাকা আর্ট গ্যালারিকে পরিচালনা করার দায়িত্বভার রাজ্য তথা উত্তর-পূর্ব ভারতের একটি প্রতিষ্ঠিত বিনোদন সংস্থার হাতে তুলে দেয় এসজেডিএ কতৃপক্ষ। সেই বিনোদন সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, আর্ট গ্যলারিতে অত্যাধুনিক প্রেক্ষাগৃহ তৈরি করা হয়েছে, তাতে সিনেমা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দুই-ই চলবে। তবে, সিনেপ্লেক্স নাম দেওয়া হলেও, জলপাইগুড়ি সরোজেন্দ্র দেব রায়কত কলাকেন্দ্র নামেই আর্ট গ্যালারির মূল পরিচিতি থাকবে বলেও সংস্থাটি জানিয়েছে। |
জলপাইগুড়ি আর্ট গ্যালারি। এখানেই হবে নতুন সিনেপ্লেক্স। —নিজস্ব চিত্র। |
উদ্বোধনের দিন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব জলপাইগুড়িতে উপস্থিত থাকবেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত বিনোদন সংস্থার কর্মধার অরিজিৎ দত্তও উপস্থিত থাকবেন। তিনি বলেন, “কলকাতা থেকে একঝাঁক শিল্পীদের নিয়ে গিয়ে একটি মনোজ্ঞ অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছে। স্থানীয় শিল্পীরাও থাকবেন। আমরা আশা করছি জলপাইগুড়িবাসীর জন্য রুচিসম্মত বিনোদন উপহার দিতে পারব।”
সংস্থার এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ধুঁকতে থাকা আর্ট গ্যালারির পরিচালনার ভার বেসরকারি হাতে দেওয়ার এসজেডিএ-এর ঘোষণার পর থেকেই জলপাইগুড়ির শিল্পী-বিদ্দজনেদের একাংশ প্রতিবাদ শুরু করেন। জেলা প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার পাশাপাশি স্বাক্ষর সংগ্রহ এবং পথসভাও হয়। একই সঙ্গে জলপাইগুড়িতে অত্যাধুনিক পরিকাঠামোয় ‘ভাল’ সিনেমা দেখতে চেয়ে বেসরকারিকরণকে স্বাগত জানিয়ে পাল্টা আন্দোলনও শুরু হয় জলপাইগুড়িতে। সোশাল নেটওয়ার্কিং সাইট ‘ফেসবুকে’ শুরু হয় পাল্টা প্রচার। শহরের বিশিষ্টজনেদের একাংশও আর্ট গ্যালারির বেসরকারিকরণ করে সুস্থ রুচির হালফিলের সিনেমা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখার পক্ষে সওয়াল করেন।
বির্তক চলার পরে সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব জলপাইগুড়িতে এসে আর্ট গ্যালারির বেসরকারিকরণের পক্ষে এবং বিপক্ষে থাকা দু’পক্ষকে ডেকে সার্কিট হাউসে বৈঠক করেন। সে বৈঠকেই মন্ত্রীর প্রস্তাবে সমাধান সূত্র বের হয়। বেসরকারিকরণ হলেও স্থানীয় শিল্পী এবং সংস্থাগুলিও বছরের নির্দিষ্ট দিন কিুছুটা কম খরচে অনুষ্ঠান করার সুযোগ পাবেন বলে স্থির হয়। তারপরেই আর্ট গ্যালারি নিয়ে ঐক্যমত তৈরি হয়। আর্ট গ্যালারি রক্ষা মঞ্চের আহ্বায়ক গৌতম গুহরায় বলেন, “উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর সদ্দিচ্ছাকে আমরা স্বাগত জানিয়েছি। তবে আমলাতান্ত্রিক জটে অনেক সিদ্ধান্তই আটকে গিয়েছে। যেমন ছবি প্রদর্শনীর বিষয়ে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এসব নিয়ে আমরা আগামী ২৬ ডিসেম্বর ফের বৈঠকে বসব।” শহরের বিশিষ্ট জন রবিন গুণ, মিহির বন্দ্যোপাধ্যায়-রা বলেন, “প্রথম থেকেই ভাল সিনেমা এবং সংস্কৃতির পক্ষে সওয়াল করেছি। শহরের বাসিন্দারাও একই কথা বলেছেন। ভাল সিনেমার জন্য অপেক্ষা করে আছি।” |