প্রচুর টাকা পেয়েছেন সুদীপ্তর স্ত্রী: দেবযানী
সারদা গোষ্ঠীর বিপুল অর্থ কোথায় গেল, সেই রহস্য এখনও ভেদ হয়নি। এর মধ্যেই ওই অর্থ লগ্নি সংস্থার আর্থিক কেলেঙ্কারিতে অন্যতম অভিযুক্ত দেবযানী মুখোপাধ্যায় শুক্রবার সারদা কমিশনের জেরায় জানালেন, সারদা গোষ্ঠীর নির্মাণ সংস্থা থেকে অনেক টাকাই সুদীপ্ত সেনের দ্বিতীয় স্ত্রী পিয়ালি সেনকে দেওয়া হয়েছে।
সারদার কর্ণধার সুদীপ্তকে গত ২০ সেপ্টেম্বর জেরা করেছিল কমিশন। তার ঠিক তিন মাস পরে, এ দিন দুপুরে সারদার অন্যতম ডিরেক্টর দেবযানীকে জেরা করেন কমিশনের চেয়ারম্যান শ্যামলকুমার সেন এবং অন্য দুই সদস্য অম্লান বসু ও যোগেশ চট্টোপাধ্যায়। পরে শ্যামলবাবু বলেন, “দেবযানী টানা সওয়া তিন ঘণ্টা ধরে নানা
প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন ইংরেজিতে। আমি তো তাঁকে বলেছি, আপনি ইংরেজি ভাল বলেন। তাঁর বয়ান লিখতে হিমশিম খেয়ে যেতে হয়েছে স্টেনোগ্রাফারদের।”
এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ দেবযানীকে সারদা কমিশনে হাজির করানো হয়। ১২টায় কমিশনের এজলাসে শুরু হয় জেরা পর্ব। ওই মহিলা সারদার ক’টি সংস্থার ডিরেক্টর-পদে ছিলেন, জানতে চায় কমিশন। দেবযানীর জবাব: তিনি জানতেন ১০-১২টি সংস্থার। কিন্তু পরে জানতে পারেন, তাঁকে না-জানিয়েই ৪০-৫০টি সংস্থার ডিরেক্টর করা হয়েছে। কমিশনের প্রশ্নের উত্তরে দেবযানী জানান, ২০১২ সালের এপ্রিলেই তিনি সারদার তিনটি মিডিয়া সংস্থার ডিরেক্টর-পদ ছাড়তে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে তা করতে দেওয়া হয়নি।
সারদার ভরাডুবির জন্য মূলত সংবাদমাধ্যমের ব্যবসাই যে দায়ী, কমিশনের প্রশ্নের জবাবে তা-ও জানান দেবযানী। তিনি জানান, সংস্থা লাটে ওঠার সময়ে এক-একটা সংবাদমাধ্যমের জন্য মাসে ১০-১৫ কোটি টাকা খরচ করা হত। আধুনিক মানের নিউজপ্রিন্ট এবং ছাপার এর জন্য যে-ভাবে টাকা ঢালা হয়েছে, তা ঠিক হয়নি বলেও মন্তব্য করেন তিনি। দেবযানী জানান, কুণাল ঘোষ সারদার সংবাদমাধ্যমের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ওই ব্যবসায় খরচ বেড়ে যায়। ওই ব্যবসায় কুণালবাবুই ছিলেন শেষ কথা। দেবযানীর ধারণা, কুণালবাবুর কথাতেই সংবাদমাধ্যমের ভাইস-প্রেসিডেন্টের পদে সোমনাথ দত্তকে নিয়োগ করা হয়েছিল। সোমনাথবাবু যে একেবারেই ওই পদের যোগ্য ছিলেন না, তা-ও কমিশনের সদস্যদের জানান তিনি।
কমিশন জানতে চায়, দেবযানী সারদা সংস্থায় ঠিক কোন কোন কাজের দায়িত্বে ছিলেন?
দেবযানী জানান, তিনি ব্যাঙ্কের বিষয়টি দেখতেন। কোন খাতে কত টাকা জমা পড়ল, কাকে কত দিতে হবে, সেটা দেখাই ছিল তাঁর কাজ।
আমানতকারীদের কাছ থেকে কত টাকা তুলেছিল সারদা গোষ্ঠী?
দেবযানী ঠিকঠাক জবাব দিতে পারেননি। তবে তিনি কমিশনে জানান, শুধু আমানতকারীদেরই মোটামুটি দেড় হাজার কোটি টাকা ফেরত দিতে হবে। সুদীপ্ত অবশ্য কমিশনে জানিয়েছিলেন, তাঁরা আমানতকারীদের কাছ থেকে ২০৬০ কোটি টাকা তুলেছিলেন।
সারদা সংস্থার বিষয়সম্পত্তি সম্পর্কেও দেবযানীকে প্রশ্ন করে কমিশন। জবাবে দেবযানী জানান, এই অবস্থায় তা বলা সম্ভব নয়। তবে পরে তিনি সম্পত্তির তালিকা কমিশনের কাছে জমা দিতে পারবেন।
কমিশন সূত্রের খবর, এজলাসে ওঠার সময় খোঁড়াচ্ছিলেন দেবযানী। তাঁর বসার জন্য চেয়ারের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু জেরার পুরো সময়টাই তিনি কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। দেবযানী জানান, তিনি আর্থ্রারাইটিসে ভুগছেন। রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন আদালত ও থানায় ঘোরানো হচ্ছে তাঁকে। তাই তিনি চিকিৎসার সুযোগ পাচ্ছেন না।
পরে কমিশনের চেয়ারম্যান শ্যামলবাবু জানান, দেবযানীর কাছ থেকে যে-সব তথ্য পাওয়া গিয়েছে, তা লিপিবদ্ধ করা হচ্ছে। প্রয়োজনে তাঁকে আবার ডেকে পাঠানো হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.