উন্নয়নের টক্করে ফার্স্ট নদিয়াই দৃষ্টান্ত মমতার
ক জেলার সঙ্গে অন্য জেলার প্রতিযোগিতা। বিচারকের ভূমিকায় মুখ্যমন্ত্রীর দফতর। আর তাতেই প্রথম হল নদিয়া। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে যথাক্রমে বীরভূম ও উত্তর ২৪ পরগনা।
শুক্রবার টাউন হলে সরকারের দফতরওয়ারি পর্যালোচনা বৈঠকে এই ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। একই সঙ্গে তাঁর নির্দেশ, রাজ্যে তৃণমূলস্তরে উন্নয়নের লক্ষ্যে আগামী দিনে নদিয়া জেলাকেই ‘মডেল’ করে বাকি জেলাগুলোকে এগোতে হবে। কীসের প্রতিযোগিতায় নদিয়ার এই সাফল্য?
নবান্নের এক কর্তা জানান, দেশব্যাপী সামাজিক উন্নয়নের বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর বিশ দফা কর্মসূচি, যাকে মাপকাঠি করে গত ক’বছর যাবৎ বিভিন্ন রাজ্যের ‘র্যাঙ্কিং’ তৈরি করছে কেন্দ্রীয় সরকার। অনেকটা তারই অনুকরণে রাজ্যের জেলাগুলিতে উন্নয়নের এই ‘রিপোর্ট কার্ড’ তৈরি করেছে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর। কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান ও প্রকল্প রূপায়ণ মন্ত্রকের রাজ্যওয়াড়ি তালিকায় অবশ্য তিরিশটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ কখনও প্রথম দশেও আসতে পারেনি। সেখানে প্রথম তিনের লড়াইটা মোটামুটি সীমাবদ্ধ থেকেছে অন্ধ্র, তামিলনাডু, কর্নাটক, গুজরাত, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র কিংবা হিমাচলপ্রদেশের মতো রাজ্যের মধ্যে। গত অর্থবর্ষের কেন্দ্রীয় তালিকা এখনও প্রকাশিত হয়নি।
এবং তারই ধাঁচে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার এ রাজ্যের জেলায় জেলায় উন্নয়নের প্রতিযোগিতা শুরু করার লক্ষ্যে মাপকাঠি হিসেবে চিহ্নিত করেছে পনেরোটি প্রকল্পকে একশো দিনের কাজ, নিজ ভূমি-নিজ গৃহ, কিসান ক্রেডিট কার্ড, তফসিলি শংসাপত্র, সংখ্যালঘু বৃত্তি, সুসংহত শিশু বিকাশ, প্রাথমিক-মাধ্যমিক শিক্ষার প্রসার ইত্যাদি। ওই সব প্রকল্পের কাজে কোন জেলার কেমন সাফল্য বা ব্যর্থতা, তা যাচাই করে এ দিন প্রথম তিনের নাম ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। সাফল্য-তালিকার শীর্ষ স্থানাধিকারী হিসেবে নদিয়ার নাম জানিয়ে মমতা বলেন, “নদিয়াই এখন থেকে মডেল। সবাইকে নদিয়ার সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামতে হবে। পরের বার দেখতে চাই, সব জেলা নদিয়ার মতো সাফল্য দেখিয়েছে।” পাশাপাশি ‘এক নম্বর’ জেলার জেলাশাসক পারভেজ বি সেলিমের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, “আপনাকে কিন্তু প্রথম স্থান ধরে রাখতে হবে।”
উন্নতির দাওয়াই
•জেলার উন্নয়নে মডেল এখন নদিয়া
• প্রতিযোগিতা চলুক জেলায় জেলায়
• ১৫টি প্রকল্পের রিপোর্ট কার্ড প্রস্তুত
• কাজে গতি আনতে যাবেন মন্ত্রীরা
উন্নয়নের হাতিয়ার নিয়ে জেলাগুলোকে নিজেদের মধ্যে ‘লড়িয়ে দেওয়া’র এ হেন কৌশল ইতিমধ্যে রীতিমতো চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে রাজ্যের প্রশাসনিক মহলে। “আসলে উন্নয়নের প্রশ্নে এক জেলার সঙ্গে অন্য জেলার লড়াই বাঁধিয়ে দিতে চান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর উদ্যোগ সফল হলে আখেরে তৃণমূলস্তরের উপভোক্তারাই লাভবান হবেন।” এ দিন মন্তব্য করেন নবান্নের এক শীর্ষ কর্তা।
বস্তুতই রিপোর্ট কার্ড হাতে পেয়ে জেলা-কর্তারা পরের বছরের টক্করের জন্য কোমর বাধঁতে শুরু করেছেন। যেমন একশো দিনের কাজে জোর দিতে আজ, শনিবার থেকেই ঝাঁপিয়ে পড়ার পরিকল্পনা নিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা, যে কিনা এ বার ‘থার্ড’ হয়েছে, এবং পরের বার চাইছে ‘ফার্স্ট’-এর তকমা ছিনিয়ে আনতে। জেলার মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কথায়, “দু’শো পঞ্চায়েতের প্রধানকে নিয়ে শনিবারই বৈঠকে বসছি। আমাদের লক্ষ্য প্রথম হওয়া।”
তবে কাজের নিরিখে অনেকটা পিছিয়ে থাকার সুবাদে এ দিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে মৃদু ধমক খেয়েছেন বাঁকুড়া ও পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক। ওই দুই জেলাকে টেনে তুলতে সরকারের ‘সিনিয়র’ মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে সেখানে সফরে পাঠাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা জানিয়েছেন, সুব্রতবাবুর মতো তাঁর অন্যান্য সিনিয়র মন্ত্রীও এ বার থেকে নিয়মিত জেলা সফরে বেরোবেন। সুব্রতবাবু বলেন, “২৬-২৭ ডিসেম্বর মেদিনীপুরে যাব। একশো দিনের কাজ-সহ অন্যান্য প্রকল্প রূপায়ণে কেন ওই জেলা পিছিয়ে পড়েছে, তা খতিয়ে দেখতে হবে।”
পিছিয়ে পড়া জেলাগুলোকে উন্নয়নের দৌড়ে ফিরিয়ে আনতে হলে আরও বেশি পরিশ্রম করা ছাড়া উপায় নেই বলেও মন্তব্য করেছেন মমতা সরকারের পঞ্চায়েতমন্ত্রী।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.